২৪ রমজানের মধ্যে পোশাক শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধের অনুরোধ চট্টগ্রাম শিল্প পুলিশের

পোশাক শ্রমিক, চট্টগ্রাম, শিল্প পুলিশ, ঈদ, বেতন-বোনাস
চট্টগ্রামের একটি পোশাক কারখানায় কাজ করছেন পোশাক শ্রমিকরা। ছবি: রাজীব রায়হান/স্টার

চট্টগ্রামে ঈদের আগে তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের যেকোনো ধরনের অস্থিরতা ও অসন্তোষ এড়াতে ১৬ এপ্রিল বা ২৪ রমজানের মধ্যে বোনাস ও বেতন পরিশোধ করতে কারখানা মালিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে চট্টগ্রাম শিল্প পুলিশ-৩।

ইতোমধ্যে বেতন ও বকেয়া পরিশোধ করতে বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) ও বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সদস্যদের চিঠি পাঠিয়েছে শিল্প পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য আজ বুধবার চট্টগ্রাম বিজিএমইএ কার্যালয়ে একটি বৈঠকের কথা আছে।

শিল্প পুলিশ, কলকারখানা ও স্থাপনা পরিদর্শন অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রামে আরএমজি (পোশাক), নন-আরএমজিসহ ১ হাজার ৪৮০টি কারখানায় ৪ লাখ ৯৪ হাজার ৫৮১ জন শ্রমিক কাজ করছেন। ১ হাজার ৪৮০টি কারখানার মধ্যে ৭৮০টি পোশাক কারখানা সিইপিজেড, কেইপিজেড, কর্ণফুলী ইপিজেড ও শহরের অন্যান্য অংশে অবস্থিত।

চট্টগ্রামের একটি পোশাক কারখানা। ছবি: রাজীব রায়হান/স্টার

চট্টগ্রাম শিল্প পুলিশ-৩-এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সোলায়মান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা পোশাক কারখানার মালিকদের ১৬ এপ্রিলের মধ্যে বকেয়া, বেতন ও ঈদ বোনাস পরিশোধ করতে চিঠি দিয়েছি। যারা এই তারিখে পারবেন না তাদের অবশ্যই ২০ এপ্রিলের মধ্যে পরিশোধের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।'

তিনি আরও বলেন, 'আমরা প্রায় ৬৭-৭০টি পোশাক কারখানার ওপর নজরদারি করেছি, যেগুলোর অতীতে বেতন ও বোনাস নিয়ে ঈদের আগে শ্রমিক অসন্তোষের রেকর্ড আছে। বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য আমরা সবাই মিলে একটি বৈঠকের ব্যবস্থা করেছি।'

বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ নেতারা বলেছেন, দেশে ডলার সংকট, বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক অস্থিরতা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে দেশের পোশাক কারখানার কার্যাদেশ উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়েছে বায়াররা।

এ অবস্থায় ছোট কারখানাগুলোর পক্ষে ঈদের আগে শ্রমিকদের সব দাবি পূরণ করা সম্ভব নাও হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।

বিজিএমইএ'র প্রথম সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বৈশ্বিক সংকট কিছু প্রতিষ্ঠানকে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ফেলেছে। আমরা পুলিশের সঙ্গে কথা বলব ও তাদের দেওয়া তালিকার মাধ্যমে অনুসন্ধান করব। যেন যেকোনো সমস্যা মোকাবিলায় যৌথভাবে কাজ করতে পারি।'

তিনি আরও বলেন, 'কখনো কখনো তৃতীয় পক্ষ শ্রমিকদের উসকে দিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করে। আমাদের নিজস্ব অনুসন্ধানে ৪-৬টি কারখানার সমস্যা চোখে পড়েছে।'

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিল্প পুলিশ চট্টগ্রামের এক কর্মকর্তা বলেন, 'শ্রমিকরা বেতনের জন্য রাস্তায় নামলে আমরা সময়মতো মালিকদের খুঁজে পাই না। এ বছর আমরা কোনো ঝুঁকি নিতে চাই না। ২০ এপ্রিল হলো শেষ কর্মদিবস,  তাই আমরা মালিকদের বেতনের পাশাপাশি ঈদ বোনাস এই তারিখের মধ্যে দিতে বলেছি। আবার আগে বোনাস দিলে অনেক শ্রমিক ছুটিতে চলে যান কিংবা কাজে আসে না, তাই মালিকরাও আগে বোনাস দিতে আগ্রহী থাকেন না।'

জানতে চাইলে শিল্প পুলিশ-৩-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) নাদিরা নূর বলেন, 'আমাদের পুলিশ কর্মকর্তারা কারখানার মালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে সরাসরি গিয়ে কথা বলছেন। এছাড়া, শ্রমিকদের চাহিদা জেনে তাদেরও কাউন্সিলিং করা হচ্ছে। আশা করি এ বছর ঈদের আগে চট্টগ্রামে পোশাক খাতে কোনো অস্থিরতা থাকবে না।'

Comments

The Daily Star  | English
fire at Secretariat

Secretariat fire sabotage or accident still not known: Fire service DG

Muhammad Jahed Kamal, director general of the Fire Service and Civil Defence, today said the cause of the devastating fire at Building No. 7 of the Bangladesh Secretariat still remains unknown

42m ago