ইসলামী ব্যাংকের ঋণের অর্ধেক নিয়েছে এস আলম: নতুন চেয়ারম্যান

ব্যাংকটির তথ্য অনুযায়ী, জুন শেষে তাদের বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৭৪ হাজার কোটি টাকার বেশি।
সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, এস আলম গ্রুপ, আহসান এইচ মনসুর, আব্দুর রউফ তালুকদার,

ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের নতুন চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বলেছেন, এস আলম গ্রুপ ইসলামী ব্যাংকের বিতরণ করা মোট ঋণের অর্ধেকের বেশি নিয়ে গেছে।

আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। সভায় ব্যাংকের অন্যান্য পর্ষদ সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।

ব্যাংকটির তথ্য অনুযায়ী, জুন শেষে তাদের বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৭৪ হাজার কোটি টাকার বেশি।

তিনি বলেন, 'মোট ‍ঋণের অর্ধেকের বেশি ঋণ নিয়েছে এস আলম গ্রুপ। তবে সঠিক তথ্য পেতে আরও এক সপ্তাহ সময় লাগবে। ব্যবসায়ী গ্রুপটি তাদের অতিমূল্যায়িত সম্পদ দেখিয়ে ঋণ নিয়েছে। তাই তাদের সম্পদের পুনর্মূল্যায়ন করা হচ্ছে।'

'ঋণের বিপরীতে এস আলম গ্রুপ যে জামানত দিয়েছে তা দিয়ে তাদের ঋণ সমন্বয় হবে না। তাই জামানতের বাইরে থাকা সম্পদ খুঁজে বের করতে আইন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে,' বলেন তিনি।

এর আগে, গত ২২ আগস্ট রূপালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদকে চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দিয়ে পরিচালনা পর্ষদ গঠন করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংকিং নিয়ন্ত্রক সংস্থা পর্ষদে চারজন স্বতন্ত্র পরিচালকও নিয়োগ দিয়েছে।

ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বলেন, নতুন পর্ষদ যখন দায়িত্ব নেয় তখন ব্যাংকটির মূলধন ঘাটতি ছিল ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা।

তার ভাষ্য, 'তবে প্রতিদিনই ঘাটতি কমছে এবং আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তা কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার কোটি টাকায়। আশা করছি, এ বছরের মধ্যেই এটি ইতিবাচক ধারায় ফিরে আসবে।'

তিনি আরও বলেন, আগামীকাল থেকে গ্রাহকদের টাকা উত্তোলনের সমস্যায় পড়তে হবে না। কারণ গত সপ্তাহে যে টাকা জমা পড়েছে তা উত্তোলনের চেয়ে কম। নেট ব্যালান্স আছে।

এস আলম গ্রুপের মালিক মোহাম্মদ সাইফুল আলমকে সহযোগিতা করা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমরা এখনই কর্মকর্তাদের সরাতে চাই না। কারণ আপনি যদি এখন নিচের দিকে আঘাত করেন তাহলে সবকিছু ভেঙে পড়বে। ওপরের কিছু কর্মকর্তাকে ইতোমধ্যে অপসারণ করা হচ্ছে। আস্তে আস্তে সব ঠিক করা হবে। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ যেতে পারবে না। আবার কাউকে ভুল প্রক্রিয়ায় কাউকে সরানো হবে না।'

তিনি বলেন, 'ব্যাংকের সংকট কাটিয়ে উঠতে তারা একটি রোডম্যাপ তৈরি করেছেন এবং এটি তিনটি পর্যায়ে করা হবে।'

'প্রথম ধাপে নতুন বোর্ডের যাত্রার তারিখ থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত হবে 'বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ'।

২০২৬ থেকে ২০২৭ সালের মধ্যে দ্বিতীয় পর্যায় হবে 'ঘুরে দাঁড়ানোর' বছর এবং তৃতীয় পর্যায় হবে ২০২৭ থেকে ২০২৯ সাল পর্যন্ত 'এগিয়ে যাওয়ার' বছর।

Comments