বেশিরভাগ এটিএম বন্ধ, নগদ টাকা সংকটে গ্রাহক

এটিএম বুথ, ব্যাংক, নগদ টাকা, ব্যাংক,
বুথে টাকা ফুরিয়ে যাওয়ায় দুটি এটিএমের শাটার অর্ধেক নামিয়ে রাখা হয়েছে। ছবিটি গতকাল রাজধানীর রমনা এলাকা থেকে তোলা। আলোকচিত্রী: পলাশ খান

বাংলাদেশে প্রায় এক সপ্তাহ আগে থেকে অধিকাংশ এটিএম বুথে টাকা সরবরাহ কমতে থাকে। ফলে নগদ টাকার সংকটে বেশিরভাগ বুথ বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে।

জানা গেছে, এটিএম বুথে নতুন করে টাকা পাঠাতে না পারায় গতকাল পর্যন্ত অধিকাংশ বুথ হয় বন্ধ ছিল অথবা টাকা ছিল না। কারণ পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অনুপস্থিতিতে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা বেড়েছে। অবশ্য দেশের বিভিন্ন এলাকায় কিছু সেনা সদস্য টহল দিচ্ছিলেন।

এদিকে গতকাল টাকা তুলতে বুথগুলোর সামনে লম্বা লাইন দেখা গেছে।

এই প্রতিবেদক ধানমন্ডি, ফার্মগেট ও কারওয়ান বাজারের ১৫টি বুথের মধ্যে মাত্র দুটিতে নগদ টাকা পেয়েছেন। এর মধ্যে সাতটি পুরোপুরি বন্ধ ছিল এবং পাঁচটির অর্ধেক শাটার নামানো ছিল। কারণ এগুলোর নগদ টাকা ফুরিয়ে গেছে।

রাজধানীর তেজগাঁও এলাকার বাসিন্দা আনিসুর রহমান বলেন, পরিবারের জন্য তাকে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে হবে, তাই জরুরি ভিত্তিতে নগদ টাকা দরকার। কিন্তু টাকা তুলতে তাকে অন্তত দশটি এটিএম ঘুরতে হয়েছে।

আনিসুর রহমানের মতো বিভিন্ন ব্যাংকের গ্রাহকরা বুথ থেকে টাকা তুলতে পারেননি বলে জানিয়েছেন। কারণ বুথে টাকা শেষ হয়ে গেছে।

গত ৫ আগস্ট দেশব্যাপী বিক্ষোভের মুখে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর বিভিন্ন সরকারি কার্যালয় ও অফিস-কারখানায় হামলার ঘটনা ঘটে।

ওই ঘটনার পরের দিন দেশব্যাপী নিরাপত্তা উদ্বেগ আরও তীব্র হয়। পুলিশ কর্মকর্তারা নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে কর্মবিরতিতে যান গলে এই উদ্বেগ দেখা দেয়।

ব্যাংকাররা বলছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে কিছু ব্যাংক এটিএমে টাকা পাঠানোর ঝুঁকি নিচ্ছে না, এতে গ্রাহকদের মধ্যে নগদ অর্থ সংকট দেখা দিয়েছে।

একই সঙ্গে নগদ টাকা বহনকারী নিরাপত্তা সংস্থাগুলো বর্তমান পরিস্থিতিতে সেবা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

চলমান পরিস্থিতির মধ্যে গত ৭ আগস্ট এক লাখ টাকার বেশি নগদ উত্তোলনের অনুমতি না দিতে ব্যাংকগুলোকে চিঠি দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এছাড়া রাস্তায় পুলিশ না থাকায় সম্ভব হলে ব্যাংকের শাখায় টাকা সরবরাহ বন্ধ রাখতে বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

একটি বেসরকারি ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, ব্যাংকিং খাতে নগদ অর্থের সংকট না থাকলেও অর্থ পরিবহনকারী নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানগুলো সেবা বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে শাখা, বিশেষ করে দূরবর্তী শাখাগুলোতে টাকা ফুরিয়ে আসছে।

অন্যান্য ব্যাংকাররাও ইঙ্গিত দিয়েছেন, নগদ অর্থের ঘাটতির চেয়ে নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণে এটিএম সেবা কমেছে।

পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় ব্যাংকগুলোর সশস্ত্র গার্ডরা যে নিরাপত্তা দিতে পারে তা পর্যাপ্ত নয়। ফলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়ছে।

সেনাবাহিনী, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বা র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) পক্ষ থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা গেলে নগদ টাকা সরবরাহ অব্যাহত রাখা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

What's causing the unrest among factory workers?

Kalpona Akter, labour rights activist and president of Bangladesh Garment and Industrial Workers Federation, talks to Monorom Polok of The Daily Star about the recent ready-made garments (RMG) workers’ unrest.

8h ago