ইসলামী ব্যাংকের কোনো শাখা ঋণ অনুমোদন দিতে পারবে না

 সৌদি আরব, আরবসাস ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিস্ট এজেন্সি, ইসলামী ব্যাংক, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ, ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ,

এখন থেকে ইসলামী ব্যাংকের জোন প্রধান, বিভাগীয় প্রধান কিংবা শাখা ব্যবস্থাপক ঋণ প্রস্তাবের অনুমোদন দিতে পারবেন না। এখন ব্যাংকটির সব ঋণ দেওয়া হবে প্রধান কার্যালয়ের অনুমোদনে। তবে, কৃষি ঋণ এই নিয়মের বাইরে থাকবে।

গত ১৯ জুন অনুষ্ঠিত ইসলামী ব্যাংকের ৩২৪তম বোর্ড সভায় ঋণ অনুমোদন ও লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) খোলা নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত হয়। ওই সভায় ঋণ অনুমোদন ও এলসি খোলার ক্ষেত্রে কর্মকর্তাদের ক্ষমতা কমানো হয়।

গত ২০ জুলাই সব জোনের প্রধান, প্রিন্সিপাল, উইং, বিভাগ, প্রধান কার্যালয় বিভাগ ও শাখা ব্যবস্থাপক, উপশাখার ইনচার্জদের কাছে এ সংক্রান্ত একটি অভ্যন্তরীণ প্রজ্ঞাপন পাঠানো হয়।

ইসলামী ব্যাংকের এমডি মোহাম্মদ মুনিরুল মওলা ও মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান মোস্তাফিজুর রহমান সিদ্দিকী স্বাক্ষরিত ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত নতুন ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করতে পারবেন। ৫০ লাখ টাকার বেশি ঋণ প্রস্তাবের বিষয়ে নির্বাহী কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে।

এর আগে, এমডি ৫ কোটি টাকা বা তার বেশি ঋণ প্রস্তাবের অনুমোদন দিতে পারতেন।

এছাড়া, ব্যাক-টু-ব্যাক এলসি, শিল্প কাঁচামালের এলসি এবং সরকারি অগ্রাধিকার খাতের অধীনের এলসি ব্যতীত ব্যাংকের স্বার্থ রক্ষায় বৈদেশিক মুদ্রার হারের ওঠানামার কভারেজসহ কমপক্ষে ১০০ শতাংশ মার্জিনে এলসি খুলতে হবে।

নির্ধারিত সীমার মধ্যে থাকা সব এলসি অবশ্যই প্রধান কার্যালয় থেকে কেস-টু-কেস অনুমতি নিয়ে খুলতে হবে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দেওয়া সময়সীমা অনুযায়ী সেপ্টেম্বরের মধ্যে আর্থিক স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে ঋণ কার্যক্রম কঠোর করেছে ইসলামী ব্যাংক। তাই এই উদ্যোগের ফলে শরিয়াহ ভিত্তিক ব্যাংকটির নগদ মজুত ও তারল্য বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।

ব্যাংকটির ঋণ অনিয়মের বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশের পর চাপের মুখে পড়েছিল। গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, শুধু কাগজে-কলমে থাকা ৯টি প্রতিষ্ঠানকে ৭ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা ঋণ অনুমোদন দিয়েছে ব্যাংকটি।

এসব অনিয়মের খবর ইসলামী ব্যাংক থেকে আমানতকারীদের আমানত প্রত্যাহারে প্ররোচিত করেছিল। অথচ, এক সময় ব্যাংকটি সাধারণ মানুষের বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠান ছিল।

সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, মার্চ শেষে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ১০১ কোটি টাকা, যা আগের বছর ছিল ৪ হাজার ৭৭২ কোটি টাকা। ৩০ জুন পর্যন্ত আমানত প্রবৃদ্ধি ছিল ১ দশমিক ০৯ শতাংশ এবং ঋণ প্রবৃদ্ধি ছিল ৯ দশমিক ৬৮ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, চলতি বছরের প্রথমার্ধে নগদ ও তারল্যের ন্যূনতম সীমা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে ইসলামী ব্যাংক।

নগদ ও তারল্যের ন্যূনতম সীমা ধরে রাখতে ব্যর্থ হলে যে ঘাটতি থাকে তার ওপরে ৯ শতাংশ ও ৮ দশমিক ৫ শতাংশ জরিমানা করা হয়।

চট্টগ্রামভিত্তিক এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন ইসলামী ব্যাংককে জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ১৬২ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

এর আগে, জুনে বছরের দ্বিতীয়ার্ধের মুদ্রানীতি ঘোষণার সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার ইসলামী ব্যাংকসহ শরিয়াহভিত্তিক ৫টি ব্যাংকের নাম উল্লেখ করে বলেছিল, সেপ্টেম্বরের মধ্যে ব্যাংকগুলোকে তাদের আর্থিক অবস্থার উন্নতি করতে হবে।

এ বিষয়ে ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মুনিরুল মওলার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসলামী ব্যাংকের একজন শীর্ষ নির্বাহী বলেন, 'আমরা ইতিমধ্যে আমাদের এসএলআর ঘাটতি পূরণ করেছি- তবে সিআরআর ঘাটতির মুখে পড়েছি, এটিও শিগগির দূর হবে।'

আমানত প্রবাহ 'এখন ভালো' অবস্থানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দেওয়া সময়সীমার মধ্যে বর্তমান তারল্য সংকটের অবসান হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ব্যাংকের রেমিট্যান্স প্রবাহও বেড়েছে।'

 

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

18h ago