চাষির বেটি সেলিনা
সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার অলঙ্কারী ইউনিয়নের লালটেক গ্রামের বাসিন্দা সেলিনা বেগমের বাপ-দাদাদের সবাই ছিলেন কৃষক। সেই সূত্রে কৃষির খুঁটিনাটি বিষয়গুলোর প্রায় সবই তার জানা।
সেলিনার বিয়েও হয়েছে একটি কৃষক পরিবারে। তাই ঘরের কাজের পাশাপাশি তিনি নিজের অর্জিত জ্ঞান দিয়ে কৃষক স্বামীকেও কৃষিকাজে সাহায্য করেন।
এ বছর লালটেক গ্রামে প্রায় ১ বিঘা জমিতে মরিচের চারা তৈরি করেছেন সেলিনা। প্রতি আটি চারা ২০ টাকা করে গ্রামের বাজারে বিক্রি করছেন তিনি।
এলাকার স্থানীয় কৃষকরা বলছেন, মরিচের পাশাপাশি এই অঞ্চলে প্রায় সব ধরনের সবজি আবাদ হয়। এখান থেকে প্রতি মৌসুমে অন্তত ৩ কোটি টাকার সবজির জোগান দেন স্থানীয় চাষিরা। এই কাজে নারীরাও প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তাদের সহযোগী হন।
এই উপমহাদেশে কৃষিতে নারীর অংশগ্রহণের বিষয়টি অনেক পুরোনো। এ কারণেই হয়তো এখানকার ফসলী জমিকে প্রসবসক্ষম নারীর সঙ্গে তুলনা করা হয়। নারী হয়ে ওঠে শস্যক্ষেত্রের রূপক।
সরকারি পরিসংখ্যানের তথ্যও বলছে, বাংলাদেশের বৃহত্তর কৃষি অর্থনীতিতে নারীদের অংশগ্রহণ ক্রমেই বাড়ছে। গত ৪৭ বছরে কৃষিতে নারীর সংখ্যা শতকের ঘর থেকে কোটিতে পৌঁছে গেছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ১৯৬১, ১৯৭৪ ও ১৯৮১ সালের জাতীয় জনসংখ্যা জরিপ এবং ১৯৮৩ সালের পর থেকে শ্রমশক্তি জরিপ পর্যালোচনা করে দেখে গেছে, বৃহত্তর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড হিসেবে কৃষিতে পুরুষের সংখ্যা তুলনামূলক কমছে, আর নারীর সংখ্যা বাড়ছে উল্লেখযোগ্য হারে।
সম্প্রতি লালটেক গ্রাম থেকে সেলিনা বেগমের ছবিগুলো তুলেছেন দ্য ডেইলি স্টারের আলোকচিত্রী শেখ নাসির।
Comments