ডলারের মূল্যবৃদ্ধির অজুহাতে মসলার দাম বাড়িয়েছে ‘সিন্ডিকেট’

'তাদের কথা না শোনার উপায় নেই আমাদের'
কারওয়ান বাজারের মসলার পাইকারি দোকান থেকে তোলা। ছবি: প্রবীর দাশ/স্টার

ডলারের দাম ৭ টাকা বেড়ে যাওয়ার পরপরই রাজধানীর বেশিরভাগ বাজারে আমদানিকৃত মসলার পাইকারি দাম প্রায় ২০ শতাংশ বেড়ে গেছে।

রাজধানীর কারওয়ান বাজার, কচুক্ষেত ও পুরান ঢাকার মৌলভীবাজারের পাইকারি বাজারে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, আমদানি করা বেশিরভাগ মসলার দাম হঠাৎ বেড়ে গেছে।

আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীদের দাবি, হঠাৎ ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় বাজারে তার প্রভাব পড়ছে।

গত ৮ মে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের বিনিময় হার ১১০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১১৭ টাকা করে।

এরপর প্রতি কেজি জিরার দাম ৫৭০ টাকা থেকে বেড়ে ৬৮০ টাকা, এলাচের সর্বনিম্ন দাম ২৮০০ টাকা থেকে বেড়ে ৩২০০ টাকা হয়েছে।আরেক ধরনের এলাচের দাম আগে ৩২০০ টাকা ছিল, এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৩৫০০ টাকায়।

এ ছাড়া, গোল মরিচের (সাদা) দাম ১০০০ টাকা থেকে বেড়ে ১২০০ টাকা হয়েছে। কাজুবাদাম ১২০০ টাকা থেকে বেড়ে ১৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, ছোলা ১০২ টাকা থেকে বেড়ে ১০৮ টাকা কেজি হয়েছে।

কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী নুর ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী রিয়াজ হোসেন পুরান ঢাকার মৌলভীবাজার পাইকারি বাজার থেকে সপ্তাহে দুবার মসলা কেনেন। 

সম্প্রতি দাম বেড়ে যাওয়ার হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, 'এক সপ্তাহ আগে প্রতি কেজি জিরা ৫৭০-৫৮০ টাকায় কিনতাম। কিন্তু এখন ৭০০ টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে। অথচ ডলারের দাম বাড়ার আগেই এই মসলা আমদানি করা হয়েছে। এটা সিন্ডিকেটের কাজ।'

আরেক দোকানের কর্মচারী জানান, ছয় মাস আগে এলাচের দাম ছিল ১৭০০-১৮০০ টাকা কেজি। কিন্তু এখন বিক্রি হচ্ছে ৩২০০-৩৩০০ টাকায়। 

'একটি সিন্ডিকেট মসলার ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছে', বলেন তিনি।

মৌলভীবাজার পাইকারি বাজারের মসলার এক পাইকারি বিক্রেতা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এসব মসলার কেনা দাম একই হলেও কিছু আমদানিকারক ডলারের বাড়তি দামের সঙ্গে সামঞ্জস্য করে দাম বাড়াতে বলেছেন।'

'তাদের কথা না শোনার উপায় নেই আমাদের', বলেন তিনি।

কারওয়ান বাজারের কুমিল্লা জেনারেল স্টোরের স্বত্বাধিকারী মো. গোফরান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব বর্তমানে পাইকারি বাজারে সীমাবদ্ধ। তবে খুব শিগগির এর প্রভাব খুচরা বাজারেও পড়বে। বিশেষ করে ঈদুল আজহার আগে দাম বেড়ে যাবে।'

যোগাযোগ করা হলে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সহসভাপতি এস এম নাজের হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ডলারের দাম বাড়ায় ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়েছে। কিন্তু ডলারের দাম কমলে তারা কি দাম কমায়?'

এ বিষয়ে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, 'ডলারের দাম বাড়ায় জিনিসপত্রের দাম বাড়বে এটাই স্বাভাবিক। তবে আমি ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, তারা যেন দাম বেশি না বাড়ায়।'

Comments