চলতি বছরের প্রথম ৩ মাসে

বেসরকারি খাতে বিদেশি ঋণ কমেছে ২ বিলিয়ন ডলার

বেসরকারি খাতে বিদেশি ঋণ

চলতি বছরের প্রথম ৩ মাসে বেসরকারি খাতের বিদেশি ঋণ প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার কমেছে। অনুকূল নয় এমনসব শর্তের কারণে এই খাতে বিদেশি ঋণ কমেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, গত মার্চে বেসরকারি খাতের বিদেশি ঋণের পরিমাণ ছিল ২২ দশমিক ১৮ বিলিয়ন ডলার। ৩ মাস আগে এটি ছিল ২৪ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলার।

পশ্চিমের দেশগুলোয় কম সুদের হারের কারণে বেসরকারি খাত বিদেশ থেকে আরও বেশি ঋণ নেওয়ার কথা ভাবছিল। ২০২১ সালে তাদের বৈদেশিক ঋণ বাড়তে শুরু করে। তখন বিশ্বব্যাপী কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো মহামারির কারণে সৃষ্ট মন্দা থেকে অর্থনীতি পুনরুজ্জীবিত করতে সুদের হার কমিয়ে দেয়।

২০২০ সালের শেষে বেসরকারি খাতের বিদেশি ঋণের পরিমাণ ছিল ১৪ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন ডলার। পরের দেড় বছরে এটি ২৫ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছে।

২০২২ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে বিদেশি ঋণ কমতে শুরু করে। কারণ, বিশ্বব্যাপী কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সুদের হার বাড়াতে থাকে।

কিন্তু বাংলাদেশে বেসরকারি খাত আরেকটি সমস্যায় পড়ে। ডলারের মজুদ ধরে রাখতে সরকার দেশের বাইরে ডলারে পাঠানো কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করায় অনেক এলসি বন্ধ রাখতে হয়েছিল।

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক শীর্ষ অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এর ফলে বিদেশে আমাদের সুনাম মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।'

গত বছরের ডিসেম্বরে বৈশ্বিক রেটিং এজেন্সি মুডিজ বাংলাদেশের আর্থিক খাতের রেটিং কমিয়ে দেয়।

তিনি আরও বলেন, 'এর ফলে বেসরকারি খাতের জন্য অর্থায়নের সুযোগ খুবই সীমিত হয়ে পড়েছে।'

এরই মধ্যে বিদেশে সুদের হার অনেক বেড়েছে। মুডিজের ডাউনগ্রেড ও দেশের সুনামহানির কারণে বাংলাদেশি ঋণগ্রহীতাদের জন্য সুদের হার আরও বেশি হয়েছে।

টাকার ক্রমাগত অবমূল্যায়নের পাশাপাশি বিদেশি ঋণ দেশের বেসরকারি খাতের জন্য খুব বেশি সুবিধাজনক নাও হতে পারে।

জাহিদ হোসেনের মতে, বাংলাদেশ ব্যাংক বেসরকারি খাতের বিদেশি বাণিজ্যিক ঋণের জন্য সুদের হারের সীমা নির্ধারণ করেছে। এটি আন্তর্জাতিক বাজারে চলমান হারের চেয়ে কম।

গত মার্চের শেষে বেসরকারি খাতের স্বল্পমেয়াদি বিদেশি ঋণ ছিল ১৪ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে এটি ছিল ১৬ দশমিক ৪২ বিলিয়ন ডলার।

তবে, ২০২৩ সালের প্রথম প্রান্তিকে দীর্ঘমেয়াদী ঋণ ২০৪ দশমিক ৯৭ মিলিয়ন ডলার বেড়ে দাঁড়ায় ৮ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার।

কিন্তু বেসরকারি খাতের বিদেশি ঋণ কমে যাওয়ার অর্থ এই নয় যে, রিজার্ভ ও টাকার বিনিময় হারের ওপর চাপ কমবে।

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক অর্থনীতিবিদ জাহিদ মনে করেন, 'ব্যালেন্স অব পেমেন্টের আর্থিক ও চলতি অ্যাকাউন্টে ঘাটতি আছে। যদি চলতি অ্যাকাউন্টে ঘাটতি থাকে, তবে তা আর্থিক অ্যাকাউন্টের উদ্বৃত্ত দিয়ে অর্থায়ন করা যেতে পারে। ফলে রিজার্ভ বা বৈদেশিক মুদ্রার ওপর কোনো চাপ থাকবে না।'

'যখনই আর্থিক ও চলতি অ্যাকাউন্টে ঘাটতি থাকবে, তখন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহ করতে হবে এবং বাংলাদেশ ব্যাংককে তার রিজার্ভ ব্যবহার করতে হবে,' যোগ করেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

IMF sets new loan conditions

The International Monetary Fund has set new performance criteria tied to Bangladesh’s $5.5 billion loan programme, requiring the country to significantly reduce both domestic and external arrears in the power and fertiliser sectors before the next tranche can be released.

7h ago