দুর্গাপূজায় ভারতে ইলিশ রপ্তানির আবেদন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে

ইলিশ
চট্টগ্রাম ফিশারিঘাট। ছবি: রাজীব রায়হান/স্টার

দুর্গাপূজা উপলক্ষে বাংলাদেশ থেকে ভারতে ইলিশ রপ্তানি হয়েছে গত ৩ বছর। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দেয়। এবারও দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে ইলিশ রপ্তানির জন্য ব্যবসায়ীরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করছেন।

ইতোমধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ২৫টি আবেদন জমা পড়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

ইলিশ
ছবি: রাজীব রায়হান/স্টার

সাগরে মাছ ধরার ওপর ৬৫ দিনের সরকারি নিষেধাজ্ঞা শেষে গত ২৩ জুলাই মধ্যরাত থেকে জেলেরা আবারো ট্রলার নিয়ে সাগরে যাওয়া শুরু করেন। এ বছর প্রচুর ইলিশ পাওয়ায় দেশের উপকূলীয় জেলাগুলোর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে ইলিশের বেচাকেনা বেড়েছে কয়েকগুণ।

রপ্তানিকারকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এবারো ভারতে ইলিশ রপ্তানির সম্ভাবনা আছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

২০২১ সালে দুর্গাপূজায় ভারতে ৪ হাজার ৬০০ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির জন্য ১১৫ প্রতিষ্ঠানকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। আবেদন করেছিলেন প্রায় ২ শতাধিক ব্যবসায়ী।

ইলিশ
ছবি: রাজীব রায়হান/স্টার

২০২০ সালে রপ্তানি হয়েছিল ১ হাজার ৪৫০ মেট্রিক টন ইলিশ। ১৮ প্রতিষ্ঠানকে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

২০১৯ সালে বাংলাদেশ থেকে ইলিশ রপ্তানি হয়েছিল ৫০০ মেট্রিক টন। একজন ব্যবসায়ী ইলিশ রপ্তানির অনুমতি পেয়েছিলেন।

একাধিক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ২-৩ বছরে ভারতে ইলিশ রপ্তানির জন্য যারা অনুমোদন পেয়েছেন, তারা প্রকৃত রপ্তানিকারক নন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেলেও তারা যথাসময়ে ইলিশ রপ্তানি করতে পারেননি।

ইলিশ
ছবি: রাজীব রায়হান/স্টার

বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট আমিন উল্লাহ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইলিশ রপ্তানির জন্য সময় দেয় অল্প। কম সময়ে অধিক সংখ্যক রপ্তানিকারক ভারতে ইলিশ নিয়ে গেলে সেখানকার ক্রেতারাও দাম কমিয়ে দেন। তখন রপ্তানিকারকরা ক্ষতির মুখে পড়েন।'

তিনি আরও বলেন, 'সরকারের উচিত প্রকৃত রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানকে ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দেওয়া এবং রপ্তানির সময়সীমা অন্তত একমাস স্থায়ী করা। তা না হলে লক্ষ্যপূরণ কোনোভাবেই সম্ভব নয়। উল্টো ইলিশ রপ্তানি নিয়ে ২ দেশের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক নষ্ট হয়।'

ইলিশ
ছবি: রাজীব রায়হান/স্টার

একাধিক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের মালিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডেইলি স্টারকে বলেন, ২০২১ সালে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দিতে দেরি করায় রপ্তানিকারকরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রপ্তানি করতে পারেননি।

তারা আরও বলেন, যখন অনুমোদন দেওয়া হয় তখন ভারতের বাজারে ইলিশের দাম বাংলাদেশের চেয়ে কম ছিল। তাই রপ্তানিকারকরা ভারতে ইলিশ রপ্তানিতে সুবিধা করতে পারেননি।

ব্যবসায়ীদের মতে, ভারতে ইলিশ রপ্তানি শুধু বাণিজ্য নয়, এটি ২ দেশের সম্প্রীতিরও বিষয়।

বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার (নন প্যাকার) অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট বাবুল আকতার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ইলিশ রপ্তানির বিষয়টি দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে শেষ করতে হয়। দুর্গাপূজার আগ মুহূর্তে তাড়াহুড়া না করে আগে থেকেই সিদ্ধান্ত নিলে পরিকল্পিতভাবে ইলিশ রপ্তানি করা যায়। তা না হলে রপ্তানিকারকদের ক্ষতি ও সরকার লক্ষ্যপূরণে ব্যর্থ হবে।'

 

Comments

The Daily Star  | English
Major Sinha

Maj Sinha murder: HC upholds death sentence for OC Pradeep, SI Liaqat

Court also upheld the life imprisonment of six others

7m ago