অস্ট্রেলিয়ায় পারিবারিক সহিংসতায় সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে অভিবাসী নারীরা
২০২৪ সালের শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে অস্ট্রেলিয়ার মানবাধিকার সংস্থাগুলো দেশটিতে সহিংসতায় নারীর মৃত্যু নিয়ে পরিসংখ্যান শুরু করেছে। এখন পর্যন্ত তাদের প্রকাশিত তথ্যানুযায়ী, গত ৫ বছরের তুলনায় চলতি বছর পারিবারিক সহিংসতায় নারীর মৃত্যু রেকর্ড পরিমাণ।
তারা বলছে, গোটা দেশে নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে সমাবেশ-বিক্ষোভ, পদক্ষেপের আহ্বান, জাতীয় স্বার্থ বৃদ্ধি এবং নতুন সরকারি অর্থায়ন ও কর্মসূচি সত্ত্বেও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতায় নারী নিহতের সংখ্যা বেড়েছে।
মানবাধিকার সংস্থা ইনটাচের সিইও রাশা আব্বাস বলেন, 'পারিবারিক সহিংসতায় সব থেকে বেশি নির্যাতিত হন অভিবাসী নারীরা।'
তিনি বলেন, 'পারিবারিক সহিংসতা সব সংস্কৃতি, সম্প্রদায় এবং আর্থ-সামাজিক স্তরে ঘটে, তবে অভিবাসী নারীরা বিশেষভাবে দুর্বল বলে তারা সব থেকে বেশি সহিংসতার শিকার হন।'
ইনটাচের পরিসংখ্যান বলছে, অভিবাসী নারীরা প্রায়শই একটি অস্থায়ী ভিসায় থাকেন, তাদের ভাষার বাধা রয়েছে, সাংস্কৃতিক বাধা রয়েছে, সামাজিক বিচ্ছিন্নতা আছে, কোনো আর্থিক সুস্থতা নেই, তারা গৃহহীনতার সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছেন। এই বিষয়গুলো তাদের আরও দুর্বল করে তুলে।
মানবাধিকার সংস্থাগুলোর তথ্যমতে, অভিবাসী নারীরা প্রায়শই জানেন না যে পারিবারিক সহিংসতা কী এবং এটি আইনের বিরুদ্ধে। এমনকি অনেক নারী তাদের জন্য সহায়তা পরিষেবাগুলো কী সেটাও জানেন না। অনেকেই পুলিশের কাছে যেতে বা আইনি ব্যবস্থা নিতে ভয় পান। বিশেষ করে ভাষার বাধার কারণে।
জনপ্রিয় সাংবাদিক শেরেল মুডি দ্বারা পরিচালিত 'অস্ট্রেলিয়ান ফেমিসাইড ওয়াচ' জানিয়েছে, তাদের পরিসংখ্যান অনুসারে এ বছর ১০১ জন অস্ট্রেলিয়ান নারীকে হত্যা করা হয়েছে, ২০২৩ সালে ছিল ৭৪ জন।
তাদের দেওয়া তথ্যানুসারে, সারা বছর ধরে সহিংসতা দেশের বিভিন্ন অংশে বিভিন্ন বয়স এবং বিভিন্ন পটভূমির নারীদের প্রভাবিত করেছে। কোনো কোনো ঘটনা জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক শিরোনাম হয়েছে। আবার কোনো ঘটনা রয়ে গেছে শিরোনামের বাইরে। এগুলো জাতীয় সংকটেরই অংশ।
অ্যাডভোকেসি গ্রুপ ডেস্ট্রয় দ্য জয়েন্টের প্রকল্প 'কাউন্টিং ডেড উইমেন' অনুসারে, সহিংসতায় এ বছর অস্ট্রেলিয়ায় ৭৮ জন নারী নিহত হয়েছেন। ২০২৩ সালে এই সংখ্যা ছিল ৬৪ জন। ২০২২ সালে সংস্থাটি ৫৬ জনের মৃত্যুর তথ্য দিয়েছিল। ২০২১ সালে ছিল ৪৪ এবং ২০২০ সালে ছিল ৬২ জন।
আকিদুল ইসলাম: অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী লেখক, সাংবাদিক
Comments