‘চোকার্স’ অপবাদ ঘুচিয়ে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা দক্ষিণ আফ্রিকার

ছবি: এএফপি

অফ স্টাম্পের বাইরে ফুল লেংথ ডেলিভারি করলেন মিচেল স্টার্ক। কাইল ভেরেইন পয়েন্ট দিয়ে বল ঠেলে সিঙ্গেল নিতেই উল্লাসে মেতে উঠল দক্ষিণ আফ্রিকা। দীর্ঘ অপেক্ষা আর আক্ষেপের পালা সাঙ্গ হলো দলটির। 'চোকার্স' অপবাদ ঘুচিয়ে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতল তারা।

শনিবার লর্ডসে প্রতিযোগিতার ২০২৩-২৫ চক্রের ফাইনালের চতুর্থ দিনের প্রথম সেশনেই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছেছে প্রোটিয়ারা। অস্ট্রেলিয়াকে ৫ উইকেটে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে তারা। এতে আইসিসি আয়োজিত টুর্নামেন্টে তাদের ২৭ বছরের লম্বা ট্রফিখরা কেটেছে।

স্মরণীয় জয়ের জন্য এদিন হাতে ৮ উইকেট নিয়ে ৬৯ রানের চাহিদা ছিল টেম্বা বাভুমার নেতৃত্বাধীন দলের। ৩ উইকেট খুইয়ে ২৭.৪ ওভার ব্যাট করে তা মিলিয়ে ফেলে তারা।

এর আগে ১৯৯৮ সালে আইসিসি নকআউট বিশ্বকাপে (এখনকার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি) চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। তারপর বহুবার 'ফেভারিট' তকমা গায়ে থাকলেও তারা ব্যর্থ হয়েছে সাফল্য পেতে। সেসব এখন অতীত। আবারও একটি বৈশ্বিক শিরোপার স্বাদ পেয়েছে দলটি।

দক্ষিণ আফ্রিকা প্রায় তিন দশক ধরে 'চোকার্স' (চাপের মুখে ভেঙে পড়া দল) হিসেবে পরিচিত। আইসিসি ইভেন্টগুলোতে তাদের সেমিফাইনাল বা ফাইনালের দ্বারপ্রান্ত থেকে ফিরে আসার ঘটনা এতটাই নিয়মিত যে, এটি তাদের ক্রিকেট ইতিহাসের অংশ হয়ে গেছে। তাদের একেকটি ট্র্যাজেডির গল্প নাড়া দিয়েছে নিরপেক্ষ ক্রিকেপ্রেমীরদেরও। সেই বেদনা ছাপিয়ে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে দলটি।

টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে দক্ষিণ আফ্রিকার রাজত্ব প্রতিষ্ঠার গল্পের মূল নায়ক ওপেনার এইডেন মার্করাম। অধিনায়ক বাভুমা ছিলেন তার সহযোগীর ভূমিকায়।

মার্করাম প্রথম ইনিংসে শূন্য রানে আউট হলেও দ্বিতীয় ইনিংসে খেলেন অসাধারণ একটি ইনিংস। ২০৭ বল মোকাবিলা করে ১৪ চারে ১৩৬ রান করে দলকে জয়ের কাছাকাছি নিয়ে যান। হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট নিয়েই দুর্দান্ত মানসিক দৃঢ়তায় ১৩৪ বলে ৫ চারে ৬৬ রানের ইনিংস উপহার দেন দলকে। মার্করাম ও বাভুমা গড়েন ২৫০ বলে ১৪৭ রানের জুটি, যা ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়।

আগের দিনেই দক্ষিণ আফ্রিকা জয়ের বেশ কাছাকাছি পৌঁছে যায়। শেষদিনের শুরুটা যদিও ছিল কিছুটা দুশ্চিন্তার। আগের দিনের সঙ্গে স্রেফ ১ রান যোগ করে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন বাভুমা।

একপ্রান্ত আগলে অপরাজিত ১০২ রান নিয়ে দিন শুরু করা মার্করাম চালিয়ে যান লড়াই। প্রথমে ট্রিস্টান স্টাবস ও পরে ডেভিড বেডিংহ্যামকে সঙ্গে নিয়ে দলকে এগিয়ে নেন। ৪৩ বলে ৯ রান করে স্টাবস স্টার্কের বলে বোল্ড হলেও দক্ষিণ আফ্রিকার আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরেনি। মার্করাম আউট হন জয় থেকে ৬ রান দূরে থাকতে। তিনি ক্যাচ দেন জশ হ্যাজেলউডের বলে।

জয়সূচক রান আসে ভেরেইনের ব্যাট থেকে। ১৩ বলে ৪ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। বেডিংহ্যাম ৪৯ বলে ২১ রানে ছিলেন অপরাজিত।

প্রথম দুইদিনে যেখানে ১৪টি করে উইকেট পড়েছিল, সেখানে চতুর্থ ইনিংসে পিচ ব্যাটিং সহায়ক ছিল। তবু চাপের ম্যাচে-ফাইনালের মঞ্চে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২৮২ রান তাড়া করে জেতা সহজ ছিল না। কিন্তু সেই কঠিন কাজটিই বাস্তবায়ন করে দেখান মার্করাম-বাভুমারা।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh bank reform plan 2025

Inside the 3-year plan to fix banks

Bangladesh has committed to a sweeping overhaul of its troubled financial sector, outlining a detailed three-year roadmap as part of its latest agreement with the International Monetary Fund.

10h ago