মিশরে ঈদুল ফিতর উদযাপন
দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর মুসলিম বিশ্বে আনন্দের বার্তা নিয়ে হাজির হয়েছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। মধ্যপ্রাচ্য ও আরব আফ্রিকার অন্যান্য দেশের মতো পিরামিড আর নীল নদের দেশ মিশরে উদযাপিত হয়েছে মুসলমানদের বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর।
মিশরে শুক্রবার ফজরের নামাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন মসজিদ থেকে ধ্বনি আসতে থাকে 'আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়া লিল্লাহিল হামদ'।
ভোরের আলো ফোটার আগেই দেখা যায় নারী, পুরুষ ও শিশুরা হাতে জায়নামাজ নিয়ে ছুটে চলেছেন মসজিদের দিকে।
সূর্য ওঠার ২০ মিনিট পরেই ভোর পৌনে ৬টায় রাজধানী কায়রোর সব মসজিদ ও খোলা ময়দানে একযোগে একই সময়ে অনুষ্ঠিত হয় ঈদের জামাত।
মিশরে আমাদের দেশের মতো ঈদের নামাজের জন্য আলাদা কোনো ঈদগাহ নেই। ছোট-বড় সব মসজিদের ভেতর, স্কুল, বিভিন্ন ক্লাব সংলগ্ন মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
কায়রোতে অবস্থিত অমর ইবনুল আস, ইমাম শাফী (রা.), আল-আজহার, সাঈয়েদিনা হুসাইন (রা.), সাঈদা জয়নব (রা.) মসজিদসহ বেশ কয়েকটি বড় বড় মসজিদে দেশের দূরদূরান্ত থেকে মুসল্লিরা এসে যোগ দেন ঈদের জামাতে।
করোনা মহামারির কারণে গত ৩ বছর ঈদের বিভিন্ন মাঠে ঈদের জামাত পড়া বন্ধ থাকলেও, এবার সব কয়টি মাঠ নামাজ আদায়ের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে মিশর সরকার।
পিরামিডের দেশটিতে এবার ঈদে ৪ দিনের ছুটির সঙ্গে যোগ হয়েছে সা'মে-নাসিম, সরকারের নির্বাহী আদেশ, সিনাই দিবস ও সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে ১০ দিনের ছুটি।
এবারও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে অনেক বন্দিকে ক্ষমা করে দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি।
নীল নদের দেশ মিশরে ঈদুল ফিতরের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী খাবার হলো কুকিজ জাতীয় কা'হক নামক জনপ্রিয় একটি মিষ্টি। ভেতরে খেজুর, ওয়ালনাটসহ বিভিন্ন বাদাম ভরে মাখন ও ময়দার সংমিশ্রণে তৈরি কা'হক ছাড়া মিশরীয়দের ঘরে ঈদ উদযাপন চিন্তাই করা যায় না।
দেশটিতে ঈদুল ফিতরের প্রধান খাবার ফাসিখ (লবণাক্ত শুটকি মাছ), বাছাল আখদার (পেঁয়াজ পাতা) ও এইস বেলাদি (স্থানীয় রুটি)।
মিশরে বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসীরা নিজ নিজ এলাকায় মসজিদ ও মাঠে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঈদের নামাজ আদায় করেন।
ঈদুল ফিতর উপলক্ষে প্রবাসী বাংলাদেশি ও মিশরীয় নাগরিকসহ সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন দেশটিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. মনিরুল ইসলাম।
Comments