অস্ট্রেলিয়ায় স্ত্রীকে হত্যার দায়ে বাংলাদেশি যুবকের ২৭ বছরের সাজা

শাহাব আহমেদ ও তার স্ত্রী খোন্দকার ফারিহা এলাহি। ছবি: সংগৃহীত

স্ত্রীকে হত্যার দায়ে শাহাব আহমেদ নামে একজন বাংলাদেশি যুবককে ২৭ বছরের সাজার রায় দিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের সুপ্রিমকোর্ট আজ বৃহস্পতিবার এই রায় ঘোষণা করা হয়। 

৩৮ বছর বয়সী শাহাব তার ২৯ বছর বয়সী স্ত্রী খোন্দকার ফারিহা এলাহিকে ২০১৭ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি তাদের প্যারামাট্টা ইউনিটে হত্যা করেন।

২০১৯ সালে একক বিচারকের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের পর শাহাব পুনরায় বিচারের মুখোমুখি হন।

তিনি আদালতে নিজেকে হতাশাগ্রস্ত মানসিক রোগী হিসেবে দাবি করেছিলেন। তবে সুপ্রিম কোর্টের জুরি বোর্ড আজ আগের রায় বহাল রেখেছেন। 

হত্যার পর শাহাব আহমেদ ট্রিপল জিরোতে কল করে যা বলেছিলেন তা  জুরিদের শোনানো হয়। তিনি কল করে বলেছিলেন, 'আমি আমার স্ত্রীকে হত্যা করেছি।' তার আগে তিনি তার ঠিকানা, নাম এবং জন্ম তারিখ বলেন।

শাহাব বলেছিলেন যে তিনি হত্যায় একটি ছুরি ব্যবহার করেছিলেন এবং তার মৃত স্ত্রী বিছানায় রয়েছেন। 

'এটা কতদিন আগে হয়েছিল?' অপারেটর জিজ্ঞেস করেছিলেন। 

'মাত্র কয়েক মিনিট আগে'। তিনি উত্তর দিয়েছিলেন।

শাহাব বলেছিলেন, তার স্ত্রী শ্বাস নিচ্ছেন না তাই অ্যাম্বুলেন্সের প্রয়োজন নেই।

শাহাব বলেন, 'তার স্ত্রীর কয়েক বছর আগে তার এক বন্ধুর সঙ্গে সম্পর্ক ছিল এবং তাকে বলেছিল যে এটি শেষ হয়ে গেছে। 'কিন্তু আমি আজ তার ফোন চেক করেছি। তাদের সম্পর্ক আছে।' 

সুপ্রিম কোর্টে সাক্ষী হিসেবে ভারপ্রাপ্ত সার্জেন্ট মাইকেল আউটজেন জুরিকে বলেন, তিনি দৌড়ে ফ্ল্যাটে উঠেছিলেন এবং আহমেদকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, হ্যাঁ, আমি আমার স্ত্রীকে হত্যা করেছি।

আদালতে শাহাব আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

'তিনি আশ্চর্যজনকভাবে শান্ত ছিলেন।  তিনি খুব ধীর এবং স্থির ছিলেন।' আউটজেন জুরিকে বলেন।

তিনি আহমেদের প্যান্টে রক্ত ​​দেখতে পান এবং যখন তিনি বেডরুমে যান, এক নারীকে রক্তে ঢাকা গদিতে পড়ে থাকতে দেখেন।মেঝেতে একটি ছুরির পাশাপাশি একটি বাটিতে সিগারেটের বাট ছিল।

একজন গোয়েন্দা ঘটনাস্থলে শাহাব আহমেদকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তখন তিনি বলেছিলেন যে তার এবং তার স্ত্রীর মধ্যে তর্ক হয়েছে। প্রায় ২ বছর আগে তার বন্ধু ওমর খানের সঙ্গে স্ত্রীর সম্পর্ক ছিল কিন্তু তাকে বলেছিল যে এটি শেষ হয়ে গেছে।

জিজ্ঞাসাবাদে তখন তিনি বলেছিলেন, আমরা কয়েক মাস আলাদা ছিলাম এবং আমি আমার দেশে চলে যান।

আহমেদ বলেন, 'আমি তার ফোন চেক করেছি এবং এখনো তার সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে। আমি তাকে হত্যা করেছি।'

বিচারপতি মানিকা স্মিথ বলেছেন, তিনি স্ত্রীর মুখে ছুরিকাঘাত করার সময় তার দাঁতের মধ্যে সেই বড় ছুরির ডগা ভেঙে ফেলেছিলেন। এ বিষয়টি উপেক্ষা করা যাবে না।'

রায় দেওয়ার সময় বিচারক বলেছেন, অন্যদের অবশ্যই ঈর্ষা বা অবিশ্বাসের অনুভূতিতে রান্নাঘরের ছুরির মতো ধারালো অস্ত্র ব্যবহারে বিরত থাকতে হবে। আমরা যতই রেগে যায় বা হিংস্রতাবোধ করি না কেন।'

 

আকিদুল ইসলাম: অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী লেখক, সাংবাদিক

 

Comments

The Daily Star  | English

Dhaka airport receives 2nd bomb threat

Operations at HSIA continue amid heightened security

51m ago