যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী পদে প্রার্থিতার ঘোষণা দিলেন ঋষি সুনক

ঋষি সুনক হতে পারেন যুক্তরাজ্যের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী। ফাইল ছবি: রয়টার্স
ঋষি সুনক হতে পারেন যুক্তরাজ্যের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী। ফাইল ছবি: রয়টার্স

বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের পদত্যাগের পর কনজারভেটিভ (রক্ষণশীল) টোরি দলের পরবর্তী নেতা ও দেশের নেতৃত্বের দৌড়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শামিল হলেন সাবেক কাউন্সিলর ঋষি সুনক।

যুক্তরাজ্যের সংবাদসংস্থা বিবিসির এক প্রতিবেদন মতে, আজ শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি এ পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতার কথা জানিয়েছেন।

এ পর্যন্ত যে কজন প্রার্থীর কথা শোনা গেছে, তাদের মধ্যে ভারতীয় বংশোদ্ভূত সাবেক অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনককেই সবচেয়ে 'হাই প্রোফাইল' বলে অভিহিত করেছেন বিশ্লেষকরা।

গত মঙ্গলবার বরিস জনসনের ক্যাবিনেট থেকে পদত্যাগ করেন ঋষি। বস্তুত, তার পদত্যাগের পরেই একে একে খালি হতে শুরু করে মন্ত্রীসভা এবং এক পর্যায়ে টোরি দলের নেতা ও প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হন বরিস।

টোরি দলে তার উত্তরসূরি নির্বাচনের আগে পর্যন্ত বরিস জনসন অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাজ চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন।

এছাড়াও জ্যেষ্ঠ আইনপ্রণেতা টম টাগেনহাট, অ্যাটর্নি জেনারেল সুয়েল্লা ব্রেভারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী কেমি ব্যাডেনডক তাদের প্রার্থিতার কথা জানিয়েছেন।

আরও জানা গেছে, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্ট, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বেন ওয়ালেস ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাজিদ জাভিদও নেতৃত্বের দৌড়ে অংশ নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করছেন।

আগামী সপ্তাহ নাগাদ এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে। আশা করা যাচ্ছে, আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে নতুন প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব নেবেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক টুইটার ভিডিওর মাধ্যমে ঋষি সুনক তার প্রার্থিতার ঘোষণা দেন।

ইতোমধ্যে ঋষি সুনকের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ জনপ্রিয়তা রয়েছে। করোনাভাইরাস মহামারির সময় বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে অর্থনীতির পরিচালনার জন্য তিনি বিশেষ সুনাম অর্জন করেন।

ভিডিওতে তিনি অভিবাসী জীবনের বর্ণনা দেন। তিনি জানান, তার নানী উন্নত জীবনের প্রত্যাশায় ভারত থেকে যুক্তরাজ্যে অভিবাসন করেন এবং তার মা একজন ফার্মাসিস্ট হওয়ার জন্য কীভাবে কঠোর পরিশ্রম করেন। পরবর্তীতে তার চিকিৎসক বাবা ও মা উভয়ই তাদের সন্তানদের জন্য বিভিন্ন নতুন সুযোগ উন্মোচনের চেষ্টা চালান।

এছাড়াও তিনি দেশের অর্থনীতির দায়িত্বে থাকার বিষয়টিরও উল্লেখ করেন। নতুন সুযোগের সৃষ্টি ও অর্থনীতি পরিচালনা করার অভিজ্ঞতা—এ দুটিই হতে যাচ্ছে ঋষি সুনকের প্রচারণার মূল অংশ।

তিনি ভিডিওতে আরও জানান, আমি 'ভরসা ফিরিয়ে আনতে, অর্থনীতির পুনর্গঠন করতে এবং দেশকে একাত্ম' করতে চাই।

'কাউকে সবকিছুর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সঠিক সিদ্ধান্তগুলো নিতে হবে', যোগ করেন তিনি।

নেতা হিসেবে নিজের যোগ্যতার বর্ণনা দিতে যেয়ে ঋষি সুনক বলেন, তিনি সবচেয়ে কঠিন সময়ে, যখন মানুষ করোনাভাইরাসের দুঃস্বপ্নের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল, তখন সরকারের সবচেয়ে কঠিন দায়িত্বটি পালন করেছেন।

টোরি দলের বেশ কয়েকজন সংসদসদস্য ঋষি সুনকের প্রার্থিতার প্রতি সমর্থন জানিয়ে টুইটার বার্তা দেন। তারা সবাই তাদের বার্তায় ঋষি সুনকের নির্বাচনী শ্লোগান 'রেডি ফর ঋষি' (ঋষির জন্য প্রস্তুত হও) ব্যবহার করেন।

৪২ বছর বয়সী ঋষি গোল্ডম্যান স্যাকস ব্যাংকে একজন বিশ্লেষক হিসেবে কাজ করেছেন। এরপর আরও ২টি হেজ ফান্ডে পার্টনার হিসেবে কাজ করার পর রিচমন্ডের নির্বাচনী এলাকা নর্থ ইয়র্কশায়ার থেকে ২০১৫ সালে সংসদসদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন।

২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে চ্যান্সেলর (অর্থমন্ত্রীর সমতুল্য পদ) হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর সুনককে করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট মন্দা পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়। কোনোমতে অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে সরকারি তহবিল থেকে বড় আকারের অর্থ ব্যয় করার সিদ্ধান্ত নিতে হয় তাকে।

তবে তার স্ত্রীর ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ এবং মহামারির সময় লকডাউন আইন অমান্যের কারণে জরিমানা দেওয়ার বিতর্কিত ঘটনাগুলো তার সুনাম কিছুটা ক্ষুণ্ণ করে।

ঋষি সুনক ও তার স্ত্রী আকশাথা মূর্তি। ছবি: রয়টার্স
ঋষি সুনক ও তার স্ত্রী আকশাথা মূর্তি। ছবি: রয়টার্স

২০২০ সালের জুনে লকডাউন আইন অমান্য করার জন্য বরিস জনসন ও তার স্ত্রী ক্যারির পাশাপাশি ঋষিকেও জরিমানা করে লন্ডনের পুলিশ।

 

Comments

The Daily Star  | English

Inside the 3-year plan to fix banks

Bangladesh has committed to a sweeping overhaul of its troubled financial sector, outlining a detailed three-year roadmap as part of its latest agreement with the International Monetary Fund.

9h ago