কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্বের লড়াই: সুনক-বরিস বৈঠক

সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস  জনসন ও সাবেক অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক। ফাইল ছবি: রয়টার্স (২০২০)
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও সাবেক অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনক। ফাইল ছবি: রয়টার্স (২০২০)

যুক্তরাজ্যের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে মূল ২ প্রতিদ্বন্দ্বী বরিস জনসন ও ঋষি সুনক মুখোমুখি বৈঠক করেছেন।

আজ রোববার কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

গতকাল শনিবার দিনের শেষভাগে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় বলে জানিয়েছে বিবিসি। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে ছুটি কাটিয়ে লন্ডনে ফিরে বৈঠকে যোগ দেন।

গত বৃহস্পতিবার লিজ ট্রাস মাত্র ৪৪ দিন ক্ষমতায় থাকার পর প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন। তার পরিবর্তে নতুন করে প্রধানমন্ত্রীর পদের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় আগামীকাল সোমবার।

কনজারভেটিভ পার্টির অন্তত ১০০ আইনপ্রণেতার সমর্থন না পেলে কেউ মনোনয়ন পাবেন না।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম 'দ্য সান' বৈঠককে 'গোপন সম্মেলন' বলে আখ্যায়িত করেছে। 'সানডে টাইমস' জানিয়েছে, স্থানীয় সময় রাত ১০টার সময়ও বৈঠক চলছিল।

সানডে টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, কনজারভেটিভ পার্টির 'গৃহযুদ্ধ' এড়াতে ২ নেতা 'একই টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার' বিষয়ে আলোচনা করেছেন।

ধারণা করা হচ্ছে, গত কয়েক মাসের মধ্যে এবারই এই ২ নেতা প্রথম মুখোমুখি আলাপ করলেন।

ডমিনিকান রিপাবলিক থেকে ছুটি কাটিয়ে লন্ডনে ফেরার পর বিমানবন্দরে ছবির জন্য পোজ দিচ্ছেন বরিস জনসন। ছবি: রয়টার্স
ডমিনিকান রিপাবলিক থেকে ছুটি কাটিয়ে লন্ডনে ফেরার পর বিমানবন্দরে ছবির জন্য পোজ দিচ্ছেন বরিস জনসন। ছবি: রয়টার্স

গত জুলাইয়ে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনকের পদত্যাগের পর বরিস জনসনের মন্ত্রিসভার বেশ কয়েকজন সদস্য পদত্যাগ করেন। এর পরিণতিতে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনও পদত্যাগে বাধ্য হন।

এ মুহূর্তে সুনকের পক্ষে ১২৮ আইনপ্রণেতা সমর্থন জানিয়েছেন। সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী পেনি মরডান্ট ও বরিস জনসনের পক্ষে আছেন যথাক্রমে ২৩ ও ৫৩ আইনপ্রণেতা।

এ পর্যন্ত শুধু মরডান্ট প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য প্রার্থিতার কথা আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছেন।

এবার আর গতবারের মতো দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় না গিয়ে দ্রুত নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করতে যাচ্ছে কনজারভেটিভ পার্টি।

আগামীকাল বিকেলে ৩ প্রার্থী আইনপ্রণেতাদের প্রথম ব্যালটের সম্মুখীন হবেন। সেখান থেকে ২ চূড়ান্ত প্রার্থীর মধ্যে একজনকে আগামী ২৮ অক্টোবর ভোটের মাধ্যমে নির্বাচন করবেন কনজারভেটিভ পার্টির নিবন্ধিত ১ লাখ ৭০ হাজার সদস্য।

৫৮ বছর বয়সী বরিস জনসনের মিত্রদের দাবি, তিনি 'এই দায়িত্বের জন্য প্রস্তুত' আছেন।

তবে কনজারভেটিভ পার্টির অনেকেই মনে করেন না ক্ষমতা ছেড়ে দিতে বাধ্য হওয়ার এত অল্প সময়ের মধ্যে আবার প্রধানমন্ত্রী হতে বরিস প্রস্তুত।

ঋষি সুনক ও বরিস জনসনের পক্ষ নিয়ে কনজারভেটিভ পার্টির অনেক আইনপ্রণেতা বক্তব্য দিয়েছেন। তাদের বক্তব্যে দলে বিভাজন সুস্পষ্ট হয়েছে। এর সুযোগ নিতে পারে প্রতিপক্ষ লেবার পার্টি।

গত ৬ বছরে কনজারভেটিভ পার্টির ৪ সদস্য প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছেন।

বরিস জনসন দলের সাধারণ সদস্যদের মধ্যে এখনো বেশ জনপ্রিয়। জনমত বা দলের শীর্ষ নেতৃত্বের ভোটে নয়, সাধারণ সদস্যরাই নির্ধারণ করবেন দলটির পরবর্তী নেতা কে হবেন।

জরিপ সংস্থা ইউগভের সমীক্ষায় জানা গেছে, ৫২ শতাংশ মানুষ চান না বরিস প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ফিরে আসুক।

অপর এক সমীক্ষায় দেখা গেছে ৬০ শতাংশ ভোটার আগাম সাধারণ নির্বাচন চাইছেন। বিরোধীদলগুলোও একই দাবি জানিয়ে আসছে।

বিশ্লেষকদের মত, দৈনন্দিন জীবনযাত্রার খরচ বেড়ে যাওয়ায় যুক্তরাজ্যের বাসিন্দারা দুর্দশায় আছেন। তারা পরিবর্তন চাচ্ছেন।

ডেইলি মিররের কলাম লেখক সুজি বনিফেসের মত—সুনক ও জনসনের একত্রে নেতৃত্বের দৌড়ে শামিল হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।

'আমাদের মনে রাখতে হবে, এই ২ ব্যক্তি একে অপরকে ঘৃণা করেন। তারা একসঙ্গে কাজ করতে সক্ষম নন। তারা একজন আরেকজনকে দেখতেই পারেন না,' যোগ করেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Can't afford another lost decade for education

Whenever the issue of education surfaces in Bangladesh, policymakers across the political spectrum tend to strike a familiar chord. "Education is our top priority," they harp

2h ago