ওডেসায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ১০ জন নিহতের দাবি
কৌশলগত দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ দ্বীপ 'স্নেক আইল্যান্ড' থেকে সরে যাওয়ার করার ১ দিন পর ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলের বন্দর নগরী ওডেসায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদন মতে, আজ শুক্রবার সকালের এ হামলায় অন্তত ১০ ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।
আগের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, একটি আবাসিক ভবনে গভীর রাতের হামলায় ৩ শিশু সহ ৬ জন নিহত হন।
ওডেসার আঞ্চলিক প্রশাসনের মুখপাত্র সের্হেই ব্রাতচুক বলেন, 'বহুতল অ্যাপার্টমেন্ট দালানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১০ হয়েছে।'
রয়টার্স তাৎক্ষনিকভাবে এ ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে পারেনি।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাশিয়া দাবি করে, তারা স্নেক আইল্যান্ড থেকে 'স্বদিচ্ছার নিদর্শন'' হিসেবে সেনা প্রত্যাহার করে নিয়েছে এবং এতে প্রমাণ হয়, ইউক্রেন থেকে শস্য রপ্তানি করার জন্য জাতিসংঘ যে মানবতার করিডোর তৈরির চেষ্টা করছে, তাতে রাশিয়া কোনোরকম বাঁধা দিচ্ছে না।
তবে ইউক্রেনের দাবি, তারা কামান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মাধ্যমে সেখান থেকে রুশ বাহিনীকে সরে যেতে বাধ্য করেছে । দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি একে 'কৌশলগত বিজয়' হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
জেলেনস্কি তার নিয়মিত ভিডিও বার্তায় বলেন, 'এতে আপনার নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়নি। এটাও নিশ্চিত হয়নি যে শত্রু আবারও ফিরে আসবে না। তবে এতে দখলকারীদের কার্যক্রম উল্লেখযোগ্য পরিমাণে সীমিত হবে। ধাপে ধাপে আমরা তাদেরকে আমাদের সমুদ্র, ভূমি আর আকাশ থেকে বিদায় করবো।'
লিসিচানস্কের পরিস্থিতি
অপরদিকে, লিসিচানস্ক শহরে ইউক্রেনীয় বাহিনী এখনো রুশ বাহিনীর তুলনামূলকভাবে উন্নত সামরিক শক্তির সঙ্গে কোনোমতে প্রতিরোধ করে তোলার চেষ্টা করছে।
রুশ কামানবহর বিভিন্ন দিক থেকে শহরটিতে ক্রমাগত বোমাবর্ষণ চালিয়ে যাচ্ছে। প্রাদেশিক গভর্নর সের্হেই গাইদাই ইউক্রেনের টিভি চ্যানেলকে জানান, রুশ পদাতিক বাহিনীও বিভিন্ন দিক দিয়ে আক্রমণ চালাচ্ছে।
জেলেন্সকি বলেন, 'দখলকারীদের অপেক্ষাকৃত উন্নত সামরিক সক্ষমতা এখনও পরিষ্কারভাবে বোঝা যাচ্ছে। তারা আমাদেরকে আক্রমণ করার জন্য নিয়মিত বাহিনীর পাশাপাশি রিজার্ভ বাহিনীও নিয়ে এসেছে।'
সেভেরোদনেৎস্ক দখলের পর থেকেই রুশ বাহিনী লিসিচানস্ককে চারপাশ দিয়ে ঘিরে ধরার চেষ্টা চালাচ্ছে।
ইউক্রেনের জন্য আরও সহায়তা
দনবাস অঞ্চলে বড় আকারের ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি হলেও ইউক্রেনীয় বাহিনী এখনও আশাবাদী, তারা রুশ বাহিনীর সে পরিমাণ ক্ষতি করতে পারবে, যাতে তারা নিরুৎসাহিত হয়ে দেশে ফিরে যেতে পারবে।
ইউক্রেনের পশ্চিমা মিত্ররা আরও অস্ত্র সহায়তা পাঠানোর অঙ্গীকার করেছে। যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি জানিয়েছে, তারা অস্ত্র ও সামরিক সহায়তা বাবদ আরও ৮০ কোটি ডলার দেবে।
ন্যাটো সম্মেলন শেষে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, 'আমি জানি না এটা (যুদ্ধ) কীভাবে শেষ হবে, তবে রাশিয়া, ইউক্রেনকে পরাজিত করার মাধ্যমে এর শেষ হবে না।'
'যত দিন প্রয়োজন, আমরা ইউক্রেনকে সহায়তা করা অব্যাহত রাখবো', যোগ করেন তিনি।
ইউক্রেন যুদ্ধের প্রথম দিনেই রাশিয়া স্নেক আইল্যান্ডের দখল নিয়েছিল। এই গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলের দখল হাতছাড়া হওয়া ইউক্রেনের জন্য সমুদ্রপথে শস্য রপ্তানি অসম্ভব হয়ে পড়ে।
তবে মস্কো বন্দর বন্ধ করে রাখার অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং বৈশ্বিক খাদ্য সঙ্কটের জন্য পশ্চিমের আরোপিত বিধিনিষেধকে দায়ী করে, যার কারণে রাশিয়া থেকে রপ্তানি করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।
Comments