৩০ কিলোমিটার ছাড়িয়েছে বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্বপ্রান্তে যানজট
টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে যানজট পরিস্থিতির তেমন কোনো উন্নতি হয়নি। বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্বপ্রান্ত থেকে করোটিয়া পর্যন্ত প্রায় ৩০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজট দেখা দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুরু হওয়া তীব্র যানজট শুক্রবার রাত ৮টা পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে। চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন ঈদ উপলক্ষে ঘরে ফেরা মানুষ।
শুক্রবার রাত ৮টায় সেতুর পূর্ব প্রান্ত থেকে করটিয়া পর্যন্ত উত্তরমুখী লেনে প্রায় ৩০ কিলোমিটার এলাকায় শত শত যানবাহনের দীর্ঘ সারি দেখা যায়। মাঝে মাঝে শ্লথ গতিতে এগুলেও কয়েক গজ গিয়ে আবার থেমে যাচ্ছে যানবাহনের সারি।
প্রয়োজনীয় পরিবহন না পাওয়ায় যে যেভাবে পারছেন রওনা হয়েছেন। কেউ বাসে, কেউ খোলা ট্রাকে, কভার্ড ভ্যানে অথবা মোটর সাইকেলে করে বাড়িতে ফিরছেন।
এদিকে প্রচণ্ড গরমে খাবার ও পানির অভাবে মারাত্মক দুভোর্গের শিকার হচ্ছে মানুষ। বিশেষ করে নারী ও শিশুদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। ৩০ কিলোমিটার যানজট এলাকায় নেই পাবলিক টয়লেটের ব্যবস্থা। অনেকে গাড়িতেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
মহাসড়কে দায়িত্বপালনকারী আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা জানিয়েছেন, মহাসড়কে ধারণ ক্ষমতার কয়েকগুন বেশি গাড়ি চলাচল করছে। পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু সেতুতে দুর্ঘটনার কারণে টোল আদায় বেশ কিছু সময় বন্ধ থাকা এবং বিভিন্ন স্থানে গাড়ি বিকল হয়ে এই ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে, যা এখনো অব্যাহত রয়েছে।
এ ছাড়া গার্মেস্টস ফ্যাক্টরিগুলোতে ঈদের ছুটি শুরু হওয়ায় পোশাক কারখানার বহু শ্রমিক একইসঙ্গে যাত্রা করায় এবং বেপড়োয়া গাড়ি চালাচলের কারণে মহাসড়কে ট্রাফিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।
টাঙ্গাইলের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (প্রশাসন) দেলোয়ার হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঢাকা থেকে যে পরিমাণ গাড়ি আসছে, সেতু পার হয়ে পশ্চিমপাশে সিরাজগঞ্জের দিকে সেই পরিমাণ গাড়ি যেতে পারছে না। এর ফলে যানজট কমছে না।'
মহাসড়কের এলেঙ্গায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেছেন, 'মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় ৭ শতাধিক সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। সব মানুষ ঘরে না ফেরা পর্যন্ত তারা রাস্তায় থাকবেন।'
তীব্র যানজটে সীমাহীন ভোগান্তির শিকার মানুষ, আশ্বাস দিয়েও রাস্তার পরিস্থিতি ঠিক না রাখতে পারার জন্য কতৃপক্ষের তীব্র সমালোচনা করে দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন তারা।
রাস্তা যানজটমুক্ত রাখতে সঠিক পরিকল্পনা এবং যথাযথ দায়িত্ব পালনে আন্তরিকতার অভাব রয়েছে উল্লেখ করে তারা বলেন, 'যানজটের জন্য যে অজুহাতই দেখানো হোক না কেন, দায়িত্বশীলদের অবশ্যই ব্যর্থতা রয়েছে। জনগণের ভোগান্তির জন্য শাস্তি প্রদানের সাংস্কৃতি চালু করা না হলে এ ধরনের জনভোগান্তি চলতেই থাকবে এবং এর দায় সরকারকেই বহন করতে হবে।'
Comments