ভোলায় নিহতের শরীরে-মুখে শটগানের গুলি, মাথায় আঘাত: চিকিৎসক

ভোলা
বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে ৩৪ জনকে ভোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

ভোলায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষে নিহত আবদুর রহিমের মুখমণ্ডলে ও শরীরের কয়েক জায়গায় শটগানের গুলি লেগেছিল বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। তার মাথাতেও ভারি বস্তুর আঘাতের চিহ্ন ছিল।

লোডশেডিং বন্ধের দাবিতে ভোলায় আজ বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ ছিল। সেখানে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে আবদুর রহিম নামে একজন নিহত হন। পুলিশসহ আহত হন আরও অর্ধশতাধিক।

বিএনপি বলছে, নিহত আবদুর রহিম দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব ছিলেন। পুলিশের গুলিতেই তিনি মারা যান। এই ঘটনার প্রতিবাদে দলটি দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।

সংঘর্ষের পর আহতদের সঙ্গে আবদুর রহিমকে ভোলা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। হাসপাতালটির আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. নিরুপম সরকার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, আমাদের কাছে আনার আগেই তিনি মারা গিয়েছিলেন।

তিনি বলেন, 'তার মাথায়, কানে ইনজুরি ছিল। ভারি বস্তুর আঘাতে অনেকটা থেঁতলে গেছিল। সেটা ইটপাটকেলের কারণে হতে পারে। চোখের নিচে এবং শরীরের কয়েক জায়গায় শট গানের গুলি ছিল। প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে তিনি মাথায় ইটপাটকেলের আঘাতে মারা গেছেন। ময়না তদন্তে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।'

তিনি আরও বলেন, 'পুলিশের ৯ সদস্যসহ মোট ৩৪ জন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। গুরুতর আহত ২ জনকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অনেকে না জানিয়ে হাসপাতাল থেকে চলে গেছেন।'

'এখানে যারা ভর্তি আছে তাদের অনেকেই ছররা গুলিতে আহত হয়েছেন। আবার অনেকেই ইটপাটকেলের আঘাতেও আহত হয়েছেন।'

শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, এখানে আহত ১৯ জন ভর্তি হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে পাঁচ জন উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় গেছেন।

এদিকে ভোলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. সাইফুল ইসলাম প্রেস ব্রিফিং করে বলেছেন, বিএনপির নেতা-কর্মীদের মিছিলের অনুমতি ছিল না। বাধা দেওয়া হলে পুলিশকে লক্ষ্য করে তারা ইটপাটকেল ও কাচের বোতল ছুড়েন। কিছুটা দূরে আমাদের বিশেষ গোয়েন্দা শাখার সদস্যদের লক্ষ্য করে বিক্ষোভকারীদের মধ্য থেকে শটগানের গুলি ছোড়া হয়। পুলিশ তাদেরকে প্রতিহত করতে শটগানের গুলি ছোড়ে। যিনি মারা গেছেন তিনি কীভাবে মারা গেছেন আমি জানি না। তবে ডাক্তাররা বলেছেন তিনি মাথায় আঘাতে মারা গেছেন। হয়তো ইটপাটকেলের আঘাতে মারা গেছেন। বিক্ষোভকারীদের ছোড়া গুলিতে আমাদের একজন আহত হয়েছেন। সব মিলিয়ে আমাদের ১০ জন আহত হয়েছেন।'

ভোলা জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম নবী আলমগির বলেন, শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে পুলিশ লাঠিচার্জ ও গুলি করেছে।

পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমাদের মধ্যে কেউ শটগানের গুলি ছুড়তে যাবে কেন? আমরা কি যুদ্ধ করতে গেছি? আমাদের বক্তব্য দিয়ে মিছিল করে চলে যাওয়ার কথা ছিল।'

Comments

The Daily Star  | English

Enforced disappearances: Eight secret detention centres discovered

The commission raised concerns about "attempts to destroy evidence" linked to these secret cells

4h ago