ফেসবুক থেকে: ‘ই-গেট, যে লাউ সেই কদু’
'যেই লাউ সেই কদুই যদি হয়, তাহলে এতো টাকা দিয়ে ই-গেট করে লাভ কী হইলো।'
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ই-গেট নিয়ে দ্য ডেইলি স্টারের বাংলা অনলাইনে প্রকাশিত প্রতিবেদনের নিচে শেখ মোশারফ হোসেন মফিজুর নামের একজন পাঠকের মন্তব্য এটি।
গতকাল বৃহস্পতিবার দ্য ডেইলি স্টারে 'সময় কমবে না, আরও ১৮ সেকেন্ড বেশি লাগবে ই-গেট ইমিগ্রেশনে' শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। দ্য ডেইলি স্টারের ভেরিফায়েড ফেসবুকে পেজে প্রতিবেদনটি শেয়ারের পর এক হাজারের বেশি পাঠক মন্তব্য লিখেছেন। পাঠকের সেসব মন্তব্য থেকে কয়েকটি এখানে তুলে ধরা হলো:
মোহাম্মদ আব্দুল হাই স্বপনের মন্তব্য, 'বাস্তবে ই-গেট শুধু স্বয়ংক্রিয়ভাবে পাসপোর্ট ও যাত্রীকে শনাক্ত করতে পারছে। তারপর আগের মতোই ইমিগ্রেশন ডেস্কে যাত্রীর ভিসা ও অন্যান্য তথ্য যাচাই করা হচ্ছে। অর্থাৎ আগে ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়ায় যে সময় লাগত, এখন তার চেয়ে ১৮ সেকেন্ড বেশি লাগবে। যে লাউ সেই কদু, ম্যানুয়ালি যদি ইমিগ্রেশন করতে হয় তাহলে ই- গেটের দরকার কী।'
আব্দুল মালেক বাপ্পী লিখেছেন, 'তারপরেও আমরা গর্বিত। কারণ আমরা দেশকে অন্তত সিংগাপুর বানানোর চেষ্টা হলেও করেছি।'
মাকসুমুল হাকিম মাসুদ লিখেছেন, 'এটা অনেকটা রাস্তার ট্রাফিক লাইটের মতো। অটো সিগন্যাল আছে, তারপরেও ট্রাফিকের হাতের ইশারায় চলে।'
আবির চৌধুরীর মন্তব্য, 'ই-গেইট বানানোর সম্পূর্ণ লাভ বা আয় যাদের পকেটে গেছে খতিয়ে দেখলে দেখা যাবে তারা তাদেরই কারো আত্মীয়, বন্ধু, পরিবারের সদস্য যারা এই ই-গেইট বানানোর প্রস্তাব দিয়েছেন ও তদবির করেছেন। সারাদেশে এরকম অগণিত জিনিস বা স্থাপনা পাওয়া যাবে; যেগুলো কোনো কাজের কাজ করে না, কিন্তু ঠিকই এগুলোর বানানোর টাকা খেয়ে অনেকেই আঙুল ফুলে কলাগাছ।'
ফয়সাল চৌধুরীর মতে, 'নতুন প্রকল্প মানুষের কোনো কাজে লাগবে কি লাগবে না বা ঝামেলা আরও বাড়বে কিনা সেটা কোনো ইস্যু না। এভাবেই উন্নয়নের জাহাজ উড়ছে।'
মাহবুবুল আলমের মন্তব্য, 'আমি এটার বাস্তব প্রমাণ। আমার সঙ্গের এমআরপি পাসপোর্ট যাদের তারা আমার আগে চলে গেছিল। আমার ই-পাসপোর্ট ছিল।'
মাসুদ আহমেদের মন্তব্য, 'ই-গেট ম্যানুয়াল গেট ভাই ভাই।'
মোহাম্মদ মমিন মিয়ার ভাষ্য, 'সব যদি আগের মতোই ম্যানুয়ালি করাই হয় তাহলে ই-গেটের দরকার কী।'
কিয়াসা মং লিখেছেন, 'যাহা লাউ, তাহাই কদু মাঝখানে টাকা উশুল কর্মকর্তাদের পকেটে।'
তারিকুল ইসলাম লিখেছেন, 'যেসব দেশের এয়ারপোর্টে ই-গেট চালু আছে, সেখানে সেদেশের নাগরিকের ইমিগ্রেশন খুব সহজ। পাসপোর্ট স্ক্যানারে ধরবেন, গেট খুলে যাবে। মেশিন রেকর্ড নিবে যে আপনি দেশে ঢুকে পড়েছেন। আপনি গটগট করে বেরিয়ে যাবেন। বড়জোর ১৫ সেকেন্ড সময় লাগে পুরো প্রক্রিয়ায়। আমাদের দেশে নাকি আজিব কারবার! এখানে ই-গেটে পাসপোর্ট দিয়ে গেট খুলবেন। তারপর আপনাকে নাকি গিয়ে দাঁড়াতে হবে আবার ইমিগ্রেশন অফিসারের সামনে। সেই অফিসার ধীরে সুস্থে আপনার পাসপোর্টে সিল মেরে দেবেন, তারপর আপনার মুক্তি! আমার ধারণা বিদেশিরা আমাদের এয়ারপোর্টের এই তুঘলকি কাণ্ড দেখলে হেসে লুটোপুটি হয়ে এমন গড়াগড়ি দিবে যে, ইমিগ্রেশন করার কথাই ভুলে যাবে! দেশে প্রবেশের সময় বাংলাদেশি পাসপোর্টের জন্য ই-গেটই তো যথেষ্ট হওয়ার কথা! এই বেসিক জিনিসটা না বুঝার কী আছে!'
নাইমুল ইসলাম তুষারের মন্তব্য, 'ফাও জিনিস, আবার ঠিকই ইমিগ্রেশন অফিসারের কাছেই যেতে হবে। তাহলে এই গেটের কী দরকার।'
কিরণ মো. আব্দুল মুনেম লিখেছেন, 'ইমিগ্রেশনের কাজ আরও সহজতর করতে হবে এবং সময় কমাতে হবে তবেই কাঙ্ক্ষিত সাফল্য আমরা পাবো। কারণ ই-গেট ব্যবহার করে আমরা যতটুক সময় সেভ করবো তার চেয়ে বেশি সময় নষ্ট হয় ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করতে। ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করার সময় কমাতে হবে অথবা বিষয়টাকে আরও সহজতর করতে হবে।'
ইয়াসির আরাফাতের মন্তব্য, 'ডিজিটাল সেবার নামে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি দিন দিন বেড়েই চলেছে। জন্মনিবন্ধন সনদ থেকে শুরু করে পাসপোর্ট, লাইসেন্স সব জায়গায় ভোগান্তি আর ভোগান্তি।'
সাইফুল ইসলামের ভাষ্য, 'ই-গেট পার হয়ে ইমিগ্রেশন ডেস্কে গিয়ে পূর্বের ন্যায় ইমিগ্রেশন পুলিশের মুখোমুখি হতে হলে, ই-গেটের আর প্রয়োজন কী?'
শিকদার সায়েদ লিখেছেন, 'বাইরের দেশে এই সিস্টেম অনেক পুরনো হয়ে গেছে। এটা ইমিগ্রেশন চেক আগের একটি প্রবেশ পথ পার হওয়ার সিস্টেম। যা বোর্ডিং পাস পেপার উক্ত মেশিনে শো করলে গ্রিন বাতি জ্বলে এবং গেট খুলে যায়। এর জন্য কিছু সেকেন্ড সময় অপচয় হয়। আরও বেশি সময় নষ্ট হয় যদি কেউ যথাযথভাবে কার্ডটি মেশিনে শো করতে না জানে। সুতরাং এটা নিয়ে এতো আহামরি হবার কিছুই নেই। এর দ্বারা যাত্রীদের অন্য কোনো উপযোগ নেই।'
Comments