মাওয়া থেকে ফেরি পার হলো শতাধিক মোটরসাইকেল
খোলার প্রথম দিনে শত শত মোটরসাইকেলের ভিড়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কায় পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ করা হলেও আজ সোমবার সকাল থেকেই সেতুর ২ প্রান্তের টোলপ্লাজায় এই দ্বিচক্রযান নিয়ে হাজির হন শত শত আরোহী।
এ সময় ২ প্রান্তেই ট্রাফিক পুলিশ ও টোল প্লাজা কর্তৃপক্ষ তাদের আটকে দেয়। পরে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাট থেকে একটি ফেরিতে করে শতাধিক মোটরসাইকেল পার হতে পারলেও দুপুর ১২টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত জাজিরার মঙ্গলমাঝির ঘাট এলাকায় আরও শতাধিক মোটরসাইকেল আটকে আছে।
মাওয়া প্রান্তের পুলিশ ও টোল প্লাজা কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, আজ ভোর ৬টা থেকেই মোটরসাইকেল আরোহীরা এই প্রান্তের টোল প্লাজার আসতে শুরু করেন। জোর করে সেতুতে ওঠার চেষ্টা করেন তারা। বাধা পেয়ে সকাল ৯টার দিকে বাইকাররা টোল প্লাজার সামনে অন্যান্য যানবাহন চলাচল আটকে দেন। এ সময় প্রায় আধঘণ্টার জন্য টোল প্লাজার ৪টি লেন দিয়ে অন্য কোনো যান পার হতে পারেনি। এক পর্যায়ে ফেরি চালু হওয়ার খবর পেয়ে মোটরসাইকেল চালকরা শিমুলিয়া ঘাটের দিকে চলে যান।
মাওয়া ট্রাফিক পুলিশ ফাঁড়ির সার্জেন্ট সোহেল হাসান বলেন, 'সরকারি সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে মোটরসাইকেল চালকদের অনুরোধ করার পর অনেকে চলে যান। আবার কেউ কেউ বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করেন। তখন তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়।
মোটরসাইকেল চালকরা যাতে সেতুতে না ওঠেন, তার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে জানিয়ে সোহেল আরও বলেন, 'ভোর ৬টা থেকে সকাল সাড়ে ১১ টা পর্যন্ত ৫ শতাধিক মোটরসাইকেল ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।' এ ছাড়া সকাল ১০টা থেকে টোল প্লাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে বলেও জানান তিনি।
বিআইডব্লিউটিসির শিমুলিয়াঘাটের ব্যবস্থাপক(বাণিজ্য) ফয়সাল আহমেদ জানান, সকাল সোয়া ১০ টার দিকে কুঞ্জলতা ফেরি ১১৯ টি মোটরসাইকেল নিয়ে শিমুলিয়া ঘাট থেকে শরিয়তপুরের মাঝিকান্দি ঘাটের উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
তিনি বলেন, 'একসঙ্গে দেড় শ-দুই শ মোটরসাইকেল ঘাটে জমা না হলে পরবর্তী ফেরি চলবে না।'
এদিকে প্রায় একই রকম চিত্র দেখা গেছে পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তের মঙ্গল মাঝি ঘাট এলাকায়। দুপুর ১২টায় সেখানে ফেরিতে করে পারের অপেক্ষায় ছিল শতাধিক মোটরসাইকেল।
এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিসির বাংলাবাজার ও মঙ্গল মাঝি ঘাটের সহকারী ব্যবস্থাপক জামিল আহমেদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পদ্মা সেতু চালু হওয়ার কারণে স্বাভাবিকভাবেই যাত্রী না থাকায় বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ ফেরি চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ থাকায় মঙ্গল মাঝি ঘাটে বেশ কিছু মোটরসাইকেল জমা হয়েছে। অন্তত ১০০টি মোটরসাইকেল আসলে আমরা এখান থেকে সাময়িক সময়ের জন্য ফেরি ছাড়তে পারি।'
এদিকে মোটরসাইকের চালকদের ভাষ্য, পদ্মা সেতুতে যে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ করা হয়েছে, সেটা তারা অনেকেই জানতেন না। এ অবস্থায় ঘাটে এসে বিপাকে পড়েছেন তারা।
মঙ্গলমাঝির ঘাটে ফেরি পার হওয়ার জন্য অপেক্ষারত সুমন মুন্সি নামের এমন এক বাইকার বলেন, 'সকাল ৭টায় সেতুতে গিয়ে জানতে পারি মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ। পরে ঘাটে এসে দেখি ফেরি চলাচলও বন্ধ। অথচ মেয়েকে টিকা দেওয়ার জন্য দুপুর ২টার মধ্যে আমার ঢাকায় পৌঁছানোর কথা।'
Comments