সংরক্ষিত নারী আসন বিলুপ্ত চায় খেলাফত আন্দোলন

khelafat_24jul22.jpg
ছবি: সংগৃহীত

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংরক্ষিত নারী আসন বিলুপ্ত করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন। আজ রোববার দুপুরে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সম্মেলন কক্ষে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের সংলাপে খেলাফত আন্দোলন এ দাবি জানায়।

অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে ধর্মভিত্তিক এই রাজনৈতিক দল নির্বাচন কমিশনে মোট ৪০ দফা দাবি জানায়।

দলের আমিরে শরিয়ত (চেয়ারম্যান) আতাউল্লাহ হাফেজ্জী স্বাক্ষরিত দাবিতে বলা হয়, যেহেতু নারীদের সরাসরি সব আসনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সুযোগ আছে, অতএব সিলেকশনের মাধ্যমে নারীদের জন্য সংসদে পৃথক আসন সংরক্ষণ করার যৌক্তিকতা নেই। আসন সংরক্ষণের এই ব্যবস্থাটি বৈষম্যমূলক, বিধায় তা বিলুপ্ত করা হোক।

নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করার দাবি জানায় খেলাফত আন্দোলন। তাদের দাবি, ইভিএমের ব্যাপারে জনগণের স্বচ্ছ ধারণা নেই। ইতোমধ্যে দেশ-বিদেশে এটি নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। আর ইভিএম সম্বন্ধে আমাদের দেশের মানুষ বিশেষত: গ্রাম-বাংলার মানুষ অজ্ঞ। তাই এটি ব্যবহার করা হলে অনেকের বোট দেওয়াও অসম্ভব হয়ে পড়বে এবং নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে। অতএব জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করবেন না।

মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার বিধান সহজ করার দাবি জানিয়েছে দলটি। তারা বলে, নির্বিঘ্নে ও সহজে যাতে প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দিতে পারেন তা নিশ্চিত করতে হবে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অনলাইনেও মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার বিধান ও ব্যবস্থা রাখতে হবে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীর জামানত ১০ হাজার টাকার মধ্যে রাখতে হবে এবং ভোটার তালিকা সম্বলিত সিডি প্রার্থীকে বিনা মূল্যে সরবরাহ করতে হবে।

খেলাফত আন্দোলন বলে, সংসদ সদস্য থাকা অবস্থায় কেউ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে তা প্রভাবমুক্ত হবে না। সে নির্বাচন দেশে-বিদেশে গ্রহণযোগ্যতাও পাবে না। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত প্রার্থীর গেজেট প্রকাশ না করে ফের নির্বাচনের বিধান করতে হবে। তখন জীবননাশের হুমকি দিয়ে প্রার্থীতা প্রত্যাহারে বাধ্য করার প্রবণতা বন্ধ হবে। ৩০০ আসনের মধ্যে ১৫৩ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার পথও বন্ধ হবে।

ঋণ খেলাপিদের মতো ইসলাম বিদ্বেষী, ধর্মদ্রোহী নাস্তিক, চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ, খুনী, সন্ত্রাসী, কালো টাকার মালিক, অবৈধ সম্পদকে বৈধকারী ও ঋণখেলাপিদের সঙ্গে জড়িতদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করতে হবে। দল থেকে বহিষ্কৃত হলে যেমন সংসদীয় পদ বাতিল হয়ে যায়, তেমন নির্বাচিত সদস্যরা নির্বাচনী অঙ্গীকার ভঙ্গ, দলীয় মেনিফেস্টোর লঙ্ঘন, স্বৈরাচারনীতি, খুনী-সন্ত্রাসী ও ধর্মবিদ্বেষী নাস্তিক্যবাদী কর্মকাণ্ড প্রকাশ পেলে কমিশন তার সদস্য পদ বাতিল করার বিধান করতে হবে—দাবি জানায় খেলাফত আন্দোলন।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি জানিয়ে দলের পক্ষ থেকে বলা হয়, অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে এটা প্রতীয়মান হয় যে, দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয় না। নির্বাচনের সময় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মতো একটি নিরপেক্ষ সরকার গঠন অপরিহার্য। এ উদ্দেশ্যেই বৃহৎ দুটি দলসহ প্রায় সব রাজনৈতিক দল অনেক আন্দোলন সংগ্রাম করেছে, দেশের মানুষ ৯৬ দিনের হরতাল ও অসহযোগ আন্দোলন সহ্য করেছে। মানুষের জান-মালের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতির মাধ্যমে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তিত হয়েছিল। ফলে জাতির মধ্যে প্রফুল্লতা এসেছিল। ভোটাররা আগ্রহের সঙ্গে ভোট দিয়েছিলেন। এ পদ্ধতি বাতিল হওয়ায় দেশে রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে। অস্থিরতা ও অবিশ্বাস বেড়েছে।

দেশের জনগণের দীর্ঘ দিনের প্রত্যাশা পূরণে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার গঠন করে জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে, বলে খেলাফত আন্দোলন।

Comments

The Daily Star  | English

Eid meat: Stories of sacrifice, sharing and struggle

While the well-off fulfilled their religious duty by sacrificing cows and goats, crowds of people -- less fortunate and often overlooked -- stood patiently outside gates, waiting for a small share of meat they could take home to their families

8h ago