ফিটনেস-রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই ৫ বছর ধরে চলছিল বিআরটিসি বাসটি
বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলায় অটোরিকশাকে চাপা দেওয়া বিআরটিসি বাসটির ৭ বছর ধরে ফিটনেস সার্টিফিকেট ছিল না। এমনকি ৫ বছর ধরে বাসটির রেজিস্ট্রেশনও নবায়ন করা হয়নি।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় বিআরটিএ সূত্র দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সামনের অংশ ভাঙা থাকা বিআরটিসি বাসটি দীর্ঘমেয়াদি লিজ নিয়ে চলছিল বলে বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
বাসের চালকের সম্পর্কে এখন পর্যন্ত কোনো তথ্য দিতে পারেনি বিআরটিএ ও বিআরটিসি।
এদিকে পুলিশ জানায়, বাসটির চালককে খোঁজা হচ্ছে।
বিআরটিএর সহকারী পরিচালক মো. শাহ আলম ডেইলি স্টারকে জানান, ২০১৫ সালের ২৮ মের পর থেকে বাসটির ফিটনেস ছিল না। এছাড়া ২০১৯ সালের ১৫ ডিসেম্বরের পর বাসটির রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, 'সাধারণত বিআরটিসি গাড়িগুলো আমরা কঠোরভাবে নজরদারি করি না। এই গাড়িগুলোর কাগজপত্র নেই এরকম পাওয়া যায় না।'
'আমি নিজে দেখেছি গাড়ির অবস্থা ভালো নেই, এমনকি গাড়ির রঙ উঠে গেছে, ভাঙাচোরা। আমরা চালকের কোনো পরিচয় ও কাগজপত্র না পাওয়ায় তার বিষয়ে কিছু বলতে পারছি না,' বলেন তিনি।
বিআরটিএর এই কর্মকর্তা আরও জানান, এটি মনিটরিং করার দায়িত্ব তাদের হলেও, বিআরটিসি বাসগুলোর বিষয়ে তারা তেমন কঠোরতা দেখাননি।
এদিকে বাকেরগঞ্জ উপজেলার ফায়ার সার্ভিসের সামনে সংঘটিত এই দুর্ঘটনায় অটোরিকশার চালকসহ ৫ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ২ জন নারী ও ৩ জন পুরুষ।
এ দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত ২ জনকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীর বরাতে বাকেরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সজল চন্দ্র শীল জানান, দুপুরে কুয়াকাটা থেকে বিআরটিসির একটি বাস বরিশালে যাওয়ার পথে বাকেরগঞ্জ উপজেলার ফায়ার সার্ভিসের সামনে একটি অটোরিকশাকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলে ৪ জন মারা যান।
গুরুতর আহত ১ নারীকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।
নিহতরা হলেন-সোহাগ শিকদার, হাসিব, আমির চৌধুরী, তানজিলা ও অজ্ঞাত পরিচয় এক নারী। নিহত অটোরিকশা চালক হাসিবসহ সবাই বাকেরগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা।
ইউএনও বলেন, 'বাসটি রং সাইড দিয়ে চলছিল। দুর্ঘটনার পর বাসটি আটক হলেও এর চালক পালিয়ে গিয়েছে।'
বাকেরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলাউদ্দিন মিলন ডেইলি স্টারকে জানান, বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারানোয় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
বিআরটিসি বরিশাল ডিপো ম্যানেজার জাহাঙ্গীর আলম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বাসটির দীর্ঘমেয়াদী লিজ নেওয়া ছিল। এর চালকের লাইসেন্স আছে কি না, সে বিষয়ে আমার জানা নেই।'
বাসটি বিআরটিসি সদর দপ্তর থেকে লিজ দেওয়া হয়েছিল বলে জানান তিনি।
যিনি লিজ নিয়েছেন তার নাম ও মোবাইল নম্বর চাইলে তিনি বলেন, 'এ বিষয়ে হেড অফিসের অনুমতি লাগবে।'
সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত হেড অফিসের অনুমতি না পাওয়ায় লিজ গ্রহীতার মোবাইল নম্বর পাওয়া যায় নি।
Comments