চাকরির দাবিতে অনশনে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ঢাবি শিক্ষার্থী শাহীন

রোববার সকালে অনশনে বসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী শাহীন আলম। ছবি: সংগৃহীত

সরকারি চাকরির দাবিতে আমরণ অনশনে বসা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী শাহীন আলম অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

গতকাল রোববার দুপুরে অনশনরত অবস্থায় অচেতন হয়ে পড়েন তিনি।

পরে স্থানীয়রা তাকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শাহীন আলম আজ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গতকাল রাতে আমার বাড়িতে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। পুলিশ আমার বাবা-মাকে বলেছেন- যেন তারা বুঝিয়ে আমার অনশন ভাঙান।'

তিনি আরও বলেন, 'আজ সকালে সদর থানার ওসি আমার বাবা-মাকে ডেকে ঝিনাইদহ শহরে আনেন। বাবা-মা এসে আমাকে বুঝিয়ে হাসপাতাল থেকেই বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। কিন্তু, আমি যাব না। চাকরির আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাব।'

জানা যায়, শাহীন আলমরা ২ ভাই। অপর ভাই সাইদুর রহমান ঢাকায় একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন।

শাহীন বলেন, 'ভাই মা-বাবাকে দেখাশোনা করে। আমার খরচ আমাকে বহন করতে হয়। আমাদের কোনো কৃষিজমি নেই। মাত্র ৮ শতক জমির ওপর আমাদের বাড়ি। একমাত্র ভাইয়ের সামান্য বেতনে কোনো রকম খেয়ে না খেয়ে দিন চলে। অনেক কষ্ট করে এ পর্যন্ত লেখাপড়া করছি। চাকরি না হলে আমাকে অমানবিক জীবনযাপন করতে হবে।'

বাবা মো. আব্দুল কাদের ও মা মোছা. মিনারা বেগমও ছেলের অসুস্থতায় ভেঙে পড়েছেন। 'আমার দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ছেলের কী হবে? ওর একটি চাকরি খুব দরকার।'

রোববার সকালে ঝিনাইদহ শহরের প্রেরণা একাত্তর এলাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে অনশনে বসেন ঢাবির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী শাহীন আলম।

তিনি জানান, ২০১৫-২০১৬ সেশনে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স শেষ করেছেন। দেশে-বিদেশে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের বিনামূল্যে অনলাইনে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছেন। তার মোট শিক্ষার্থী এখন ২৩৯ জন। তিনি তার যোগ্যতা অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর কাছে ইনফরমেশন অফিসার, কমিউনিকেশন, টিচার ও ট্রেইনারের সরকারি চাকরির দাবি জানান।

শাহীন আলম জানান, গত ৯ মে ঝিনাইদহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে চাকরির দাবিতে আমরণ অনশন বসেন। এ খবর শুনে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক মনিরা বেগম ২ কর্মকর্তাকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে চাকরির আশ্বাস দেন। পরে, শাহীনকে ২ দিন ঝিনাইদহ সার্কিট হাউসে রেখে ২৫ টাকা হারে ডাটা এন্ট্রি অপারেটর ও ৫ হাজার টাকার চুক্তিতে শিক্ষকতার চাকরির প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু, সেই প্রস্তাব তিনি প্রত্যাখ্যান করে বাড়ি ফিরে যান। তখন তিনি সাংবাদিকদের জানান, তিনি আবারও আমরণ অনশনে বসবেন। তার ঠিক ৬৬ দিন পর গতকাল তিনি আবারও একই দাবিতে অনশনে বসেন।

Comments

The Daily Star  | English

S Alam threatens int'l legal action against govt over asset freezing: FT

Alam says his family's bank accounts were frozen, they were subjected to travel bans, and they lost control of their companies, all while facing investigations for alleged money laundering without formal notification.

1h ago