এমপিকে এলাকা ছাড়তে বলা মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ: তথ্যমন্ত্রী

রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘বিশ্ব রক্তদাতা দিবস’ উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। ছবি: পিআইডি

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, কোনো সংসদ সদস্যকে তার নিজ নির্বাচনী এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বলা তার মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপের সামিল।

তিনি আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন আয়োজিত 'বিশ্ব রক্তদাতা দিবস' উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, 'প্রথমত আমার প্রশ্ন হচ্ছে যিনি ওই এলাকার সংসদ সদস্য, ওই এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা যিনি ওই সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে ভোটার, তাকে নির্বাচন কমিশন এলাকা ছাড়ার কথা বলতে পারে কি না। এটি কি তার মৌলিক অধিকারের ওপর হস্তক্ষেপ নয় ? তাহলে তো ঢাকা শহরে যখন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন হবে, তখন ঢাকা থেকে নির্বাচিত সব সংসদ সদস্য, মন্ত্রীদেরকেও ঢাকা ছেড়ে চলে যেতে হবে।'

তিনি বলেন, 'এভাবে তাকে এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দিয়ে তার মৌলিক অধিকারের ওপর হস্তক্ষেপ করা হয়েছে বলে আমি মনে করি' উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, 'তিনি যাতে কোনো নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণা বা নির্বাচনী কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ না করেন, সেটির নির্দেশনা অবশ্যই থাকবে, থাকা বাঞ্ছনীয় এবং সেটি করলে, অন্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হতে পারে, কিন্তু যিনি ওখানে ভোটার ওই এলাকার সংসদ সদস্য, তাকে নিজের ভিটে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বলা কি সমীচীন হয়েছে, সেটিই হচ্ছে প্রশ্ন ?'

হাছান মাহমুদ বলেন, 'এলাকা ছেড়ে যেতে হবে, এটি দুনিয়ার কোথাও নাই। সংসদ সদস্যরা নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না- এটি ভারতে নাই, পাকিস্তানে নাই, ইংল্যান্ডে নাই, কন্টিনেন্টাল ইউরোপে নাই, অস্ট্রেলিয়া, জাপানে নাই, কোথাও নাই। সেই আইনটাও কিন্তু বৈষম্যমূলক।'

হাছান মাহমুদ বলেন, 'আজকে অনেক কাগজে দেখলাম এটি নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়েছে। এখানে নির্বাচন কমিশন কি ভুল করেছে, আগে সেটি আলোচনা হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। এলাকা ছাড়ার নির্দেশনা কখনো কোথাও দেয়া হয়নি। আমার বাড়ি চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের সময় আমি মন্ত্রী এবং আমি চট্টগ্রাম শহরে ছিলাম, কোনো নির্বাচনী প্রচারণায় আমি অংশগ্রহণ করিনি, বাড়ি থেকে দু' একবার বের হয়েছি প্রটোকল ছাড়া।'

এর আগে বিশ্ব রক্তদাতা দিবস উপলক্ষে বক্তৃতায় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী রক্তদান ও জনহিতকর কর্মসূচির জন্য কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনকে অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, দেশ স্বাধীনের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পৃষ্ঠপোষকতায় ১৯৭২ সালের ১০ জুন দেশে প্রথম স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি শুরু হয়। বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিগত চিকিৎসক পরে জাতীয় অধ্যাপক প্রয়াত অধ্যাপক ডা. নূরুল ইসলাম নিজে রক্ত দিয়ে কর্মসূচি শুরু করেন। 'আমরা শুধুমাত্র অবকাঠামোগত দিক দিয়ে বা বস্তুগত উন্নয়নের মাধ্যমেই উন্নত রাষ্ট্র নই, বাংলাদেশকে আমরা একটি মানবিক রাষ্ট্রে রূপান্তর করতে চাই' উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার লক্ষ্য হচ্ছে- একটি উন্নত রাষ্ট্র গঠনের পাশাপাশি একটি সামাজিক কল্যাণ রাষ্ট্র, একটি মানবিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। আর মানবিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে, মানবিকতার বিকাশ প্রয়োজন। যারা মানবিকতা প্রদর্শন করে, মানবিক কাজ করে তাদের প্রশংসা করা উচিত।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা ডা. নিজামউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের প্রধান সমন্বয়ক ডা. সামন্তলাল সেন বিশেষ অতিথি হিসেবে এবং কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের পরিচালক মোটিভেশন এম. রেজাউল হাসান অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। রক্তদানে বিশেষ অবদানের জন্য সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম দিলালকে প্লাটিনাম পদকসহ রক্তদাতাদের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন তথ্যমন্ত্রী।

Comments

The Daily Star  | English

Palak admits shutting down internet deliberately on Hasina's order

His testimony was recorded by the International Crime Tribunal's investigation agency following a questioning session held yesterday

1h ago