দিল্লি আমাদের কাছে, বেইজিং একটু দূরে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

দিল্লি আমাদের কাছে, বেইজিং একটু দূরে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি নাকি বেইজিং সফর আগে হবে এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, 'দেখুন, দিল্লি আমাদের কাছে, বেইজিং একটু দূরে।'

তিনি আরও বলেন, 'প্রধানমন্ত্রীর অনেক আগে থেকেই ভারত সফরের কথা রয়েছে কিন্তু সেখানে যেহেতু ইলেকশন, সেই ইলেকশন শেষ না হওয়া পর্যন্ত কখন সফর হবে সেটি নির্ধারণ করা যাচ্ছে না।'

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার সঙ্গে বৈঠক শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

বৈঠকে আলোচনার বিষয় প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'সহজে যাতে মানুষ ভিসা পায় এবং দেশে-দেশে যোগাযোগ যেন আরও বাড়ে এবং আমরা যোগাযোগ ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করেছি। সেটা অনেক দূর এগিয়েছে, বিশেষ করে নেপাল ও ভুটানকে ট্রানজিট দেওয়া এবং নেপাল ও ভুটান থেকে জল বিদ্যুৎ আমদানি করার ক্ষেত্রে সহায়তা করা।'

তিনি বলেন, 'ইতোমধ্যে নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানি করার ক্ষেত্রে সব কিছু চূড়ান্ত হয়েছে, ট্যারিফও অনেকটা চূড়ান্ত হয়েছে। সেটি আমাদের ক্রয় কমিটিতে (ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি) যাবে। সেটি হলে আমরা নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করতে পারব ভারতের ওপর দিয়ে। এটি চূড়ান্ত প্রায়, শুধু ট্যারিফ চূড়ান্ত হয়নি। অর্থাৎ চূড়ান্ত অনুমোদন হয়নি কিন্তু নেগোসিয়েশন হয়ে গেছে।'

অন অ্যারাইভাল ভিসা কোনো আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'আমরা ভিসানীতি সহজ করা নিয়ে আলোচনা করেছি। আরেকটি বিষয় হচ্ছে সীমান্তে যে মাঝে মাঝে সীমান্ত হত্যা হয়, সেটি নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। প্রাণঘাতি নয় এমন ব্যবহার করার ওপর আমরা গুরুত্ব আরোপ করেছি এবং তিনি (বিনয় মোহন কোয়াত্রা) জানিয়েছেন, তাদের বর্ডার সিকিউরিটি গার্ডকে নির্দেশনা দিয়েছেন এবং তারা সেটি অনুসরণও করেন। অনেক কাছ থেকে যখন অপ্রাণঘাতি অস্ত্র ব্যবহার করা হয়, সেটি তখন প্রাণঘাতি হয়ে যায়। সে ক্ষেত্রে অনেক সময় হতাহতের ঘটনা ঘটে। তাদের আন্তরিকতার কোনো অভাব নেই। এটি নিয়ে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী, সরকারি ও রাজনৈতিক পর্যায়ে এ বিষয়ে আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি নেই—যাতে এখানে জিরো ক্যাজুয়ালিটি হয়। মাঠ পর্যায়ে সীমান্ত রক্ষীদেরও সেই মেসেজ দেওয়া হয়েছে।'

তিস্তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, 'তিস্তা নিয়ে আমরা একটি বৃহৎ প্রকল্প নিয়েছি। ভারত সেখানে অর্থায়ন করতে চায়। আমি বলেছি, তিস্তা যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে সেটি আমাদের প্রয়োজন অনুযায়ী হতে হবে। আমাদের নিড যাতে ফুলফিল হয়।'

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'ভারতে এখন নির্বাচন চলছে। নির্বাচনের পর সরকার গঠন হবে। তারপর প্রধানমন্ত্রীর সফর কবে সেটি ঠিক হবে।'

প্রধানমন্ত্রীর বেইজিং যাওয়ার কথা হচ্ছে, কোনটি আগে হতে পারে—গণমাধ্যমকর্মীদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'দেখুন, দিল্লি আমাদের কাছে, বেইজিং একটু দূরে। প্রধানমন্ত্রীর অনেক আগে থেকেই ভারত সফরের কথা রয়েছে কিন্তু সেখানে যেহেতু ইলেকশন, সেই ইলেকশন শেষ না হওয়া পর্যন্ত কখন সফর হবে সেটি নির্ধারণ করা যাচ্ছে না।'

বিএনপির নির্বাচন বর্জনের আহ্বানের মধ্যে মানুষ উপজেলা নির্বাচনে ভোট দিয়েছে। এ বিষয়টি আপনি কীভাবে দেখছেন—জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'আমাদের এই অঞ্চলে ভারতে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হয়, নেপালে হয়, পাকিস্তানেও হয়। সে হিসেবে আমাদের নির্বাচনে সহিংসতা অনেক কম। টুকটাক যে হয়নি সেটি নয়, কিছু কিছু ঘটনা ঘটেছে। অন্যান্য নির্বাচনের তুলনায়, এই অঞ্চলের অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের এখানে সহিংসতা অনেক কম হয়েছে। শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন হয়েছে।'

Comments

The Daily Star  | English

What are we building after dismantling the AL regime?

Democracy does not seem to be our focus today. Because if it were, then shouldn’t we have been talking about elections more?

8h ago