‘আমার বাবারে ওরা মাইরা ফেলছে’

শিহাব হত্যার বিচার দাবিতে বিক্ষোভে উত্তাল টাঙ্গাইল
সন্তানের মৃত্যুর ঘটনায় বিচার দাবিতে শিহাবের বাবা-মায়ের আহাজারি। ছবি: মির্জা শাকিল/ স্টার

'ভালো পড়াশোনার জন্য দিছিলাম ওইখানে, কিন্তু আমার বাবারে ওরা মাইরা ফেলছে,' কথাগুলো বলে চিৎকার করে কাঁদছিলেন সন্তানহারা এক মা।

গত সোমবার হাসপাতালের মর্গে পেয়েছেন ১২ বছরের সন্তান শিহাবের লাশ। মরদেহের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ণ। জানান, স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, ছাত্রাবাসে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে পঞ্চম শ্রেণির শিহাব।

'এটা কিছুতেই আত্মহত্যা হইতে পারে না, আমি আমার সন্তান হত্যার বিচার চাই, বলছিলেন শিহাবের মা আসমা আক্তার।

সৃষ্টি স্কুলের ছাত্রাবাসে শিহাবের মৃত্যুর ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে টাঙ্গাইল শহর।

সকাল থেকে শিহাবের সহপাঠীসহ সৃষ্টি স্কুলের শিক্ষার্থী এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রী এবং অভিভাবকরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক পরিদর্শন করে প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেন।

এসময় সন্তান হারানোর শোকে শিহাবের বাবা-মার আহাজারিতে হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।

শিহাবের মৃত্যুর ঘটনায় বিচার দাবিতে মানববন্ধন। ছবি: মির্জা শাকিল/ স্টার

মানববন্ধনে সৃষ্টি স্কুলের ছাত্রাবাসে শিশু শিক্ষার্থী শিহাবের মৃত্যুকে হত্যাকাণ্ড দাবি করে অবিলম্বে দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানায় শিক্ষার্থীরা। তারা অভিযোগ করে, আত্মহত্যার নাটক সাজিয়ে ঘটনাটিকে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। 

শিহাবের পরিবার জানায়, গত ২০ জুন সখীপুর উপজেলার বেরবাড়ি গ্রামের প্রবাসী ইলিয়াস হোসেনের ছেলে শিহাবের অসুস্থতার কথা জানিয়ে, পরিবারের সদস্যদের ফোন করে ছাত্রাবাসে যেতে বলেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। পরে তাদের হাসপাতালে যেতে বলা হয়। হাসপাতালের মর্গে শিহাবের মরদেহের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখেন তারা। তবে স্কুল কর্তৃপক্ষ বলছে ছাত্রাবাসের সাত তলায় বাথরুমে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছে শিহাব।  

টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মীর মোশারফ হোসেন জানান, শিহাবের মৃত্যুর ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

যোগাযোগ করা হলে, টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. খন্দকার সাদিকুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জেলার বাইরে থাকায় এবং ভিসেরা রিপোর্ট না পাওয়ায় এখনও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দেয়া যায়নি।

'বিষয়টি যেহেতু অত্যন্ত স্পর্শকাতর, আমরা সর্তকতার সঙ্গে কাজ করার চেষ্টা করছি,' তিনি যোগ করেন।

ঘটনার পর থেকে মালিক পক্ষসহ সৃষ্টি স্কুলের কাউকে এ বিষয়ে কথা বলার জন্য পাওয়া যায়নি।

Comments

The Daily Star  | English

Abdul Hamid returns home after treatment in Thailand

Two police officials were withdrawn and two others suspended for negligence in duty regarding the former president's departure from the country

7h ago