কক্সবাজারে শিশু আলো হত্যা মামলায় ৬ আসামির মৃত্যুদণ্ড

কক্সবাজার জেলার টেকনাফে শিশু মো. আলী উল্লাহ আলো (৭) হত্যা মামলায় ৬ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
কক্সবাজারে শিশু আলো হত্যা মামলায় ৬ আসামির মৃত্যুদণ্ড

কক্সবাজার জেলার টেকনাফে শিশু মো. আলী উল্লাহ আলো (৭) হত্যা মামলায় ৬ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

আজ বুধবার সন্ধ্যা পৌনে ছয়টায় কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল এ রায় দেন।

কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ও মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি দ্য ডেইলি স্টারকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, প্রায় ১ ঘণ্টা রায় পড়ে শোনানোর পর ৬ আসামির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের প্রত্যেককে মৃত্যুদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।

মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামিরা হলেন- মো. সুমন মিয়া, ইয়াছিন প্রকাশ রায়হান, মো. ইয়াকুব, মো. ইছহাক প্রকাশ কালু, নজরুল ইসলাম ও সৈয়দুল আমিন। এর মধ্যে সুমন মিয়া, নজরুল ইসলাম ও সৈয়দুল আমিন পলাতক আছেন।

অপর দুই আসামি মহিব উল্লাহ ও দিদার মিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।

মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, ২০১১ সালের ৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬টার দিকে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের গোদারবিল এলাকার বাসিন্দা রাজনীতিবিদ ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আবদুল্লাহ ও ফারজানা পারভীন সুইটির ৭ বছরের শিশু পুত্র মো. আলী উল্লাহ আলোকে মোহাম্মদ আবদুল্লাহর কর্মচারী মো. সুমন আলী বাড়ির সামনের কাচারি ঘরে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করার উদ্দেশ্যে ডেকে নিয়ে যায়। পরে পাখির বাসা দেখানোর কথা বলে মো. আলী উল্লাহ আলোকে কাচারি ঘরের ছাউনির ওপরে উঠিয়ে তার হাত-পা বেঁধে মুখে টেপ লাগানোর চেষ্টা করে। এ সময় মো. আলী উল্লাহ আলোর চিৎকার করে। তখন মো. সুমন আলী ও অন্যান্য আসামিরা আলোকে ছাউনির সিলিংয়ের উপর গলা কেটে হত্যা করে।

এ ঘটনার পর আলোর বাবা মোহাম্মদ আবদুল্লাহ বাদী হয়ে ৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও ৪-৫ জনকে অজ্ঞাতকে আসামি করে টেকনাফ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলার আসামী মো. ইয়াকুব, ইয়াসিন ও ও সুমন মিয়া পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারের পর আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পুলিশ তদন্ত শেষে ২০১২ সালের ৩০ জুন আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। বাদী অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজির আবেদন করলে আদালত তা গ্রহণ করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) পুনরায় তদন্তভার দেন। পরে সিআইডি তদন্ত করে এজাহারভুক্ত ৫ জনসহ মোট ৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করে।

সম্পূরক চার্জশিটে এজাহারভুক্ত ৫ আসামি হলেন- মো. সুমন আলী (২৬), ইয়াছিন প্রকাশ রায়হান (২৯), মো. ইয়াকুব (৩৪), মো. ইসহাক প্রকাশ কালু (৩১), নজরুল ইসলাম (২৮)। এজাহার বহির্ভূত ৩ আসামী হলেন- ছৈয়দুল আমিন (৪৭), মহিবুল্লাহ (৪৫) ও মো. দিদার মিয়া (৩৫)।

কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালত ২০২০ সালের ২৪ জুলাই আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করেন। বিচারিক আদালত ২৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা করা হয়।

আদালতের সন্তুষ্টি প্রকাশ করে আলোর বাবা মোহাম্মদ আবদুল্লাহ বলেন, 'আমি চাই দ্রুত রায় কার্যকর হোক।'

Comments

The Daily Star  | English

Saber Hossain Chowdhury arrested

The Detective Branch of police today arrested Saber Hossain Chowdhury, former environment forest and climate change minister and Dhaka-9 lawmaker, at the capital’s Gulshan

2h ago