৬ দিনেও যেখানে খাদ্য সহায়তা পৌঁছায়নি

৬ দিন পার ছাতকের উত্তর খুরমা এলাকার একলিমনগর গ্রামে যাচ্ছে খাদ্য সহায়তা। ছবি: শেখ নাসির/স্টার

বন্যা শুরুর পর থেকেই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন সিলেটের ছাতকের উত্তর খুরমা এলাকার একলিমনগর গ্রাম। ৬ দিন পেরিয়ে গেলেও সেখানে কোনো সহায়তা পৌঁছেনি।

গতকাল সোমবার রাতে পানি পেরিয়ে কিছু দূরে মোবাইলে চার্জ দিতে গিয়ে ওই গ্রামের এক বাসিন্দা স্রোতে ভেসে গেছেন বলে জানালেন গ্রামের আরেক বাসিন্দা শামীম আহম্মেদ।

শামীম বন্যার শুরুতেই আশ্রয় নিয়েছিলেন গোবিন্দগঞ্জের শহীদপুর এলাকায় আত্মীয়র বাসায়।

নিজ গ্রাম আলমনগরে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের দেওয়া খাবার নিয়ে যেতে সেনাবাহিনীর স্পিডবোটের সহায়তা নেওয়ার অপেক্ষায় সাহাব উদ্দিন। ছবি: শেখ নাসির/স্টার

আজ দুপুর আড়াইটার দিকে শহীদপুরে স্থাপিত সেনাবাহিনীর সমন্বয় কেন্দ্রে রিপোর্ট করেন তিনি। এরপর সেনাবাহিনীর একটি দল তাকে নিয়ে স্পিডবোটে কিছু ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে রওনা দেয় ওই গ্রামের দিকে।

শামীম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'একলিমনগর গ্রামসহ আশেপাশের উত্তর খুরমা ও শৌলা এলাকাও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।'

সেনা সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে তাদের ত্রাণ কার্যক্রমের জন্য হটলাইন নম্বরের কথা জানা যায়। তবে, নেটওয়ার্ক ও বিদ্যুৎ না থাকায় দূরের পানিবন্দি মানুষ তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না।

এক সেনা সদস্য বলেন, 'আমাদের টিম স্পিডবোটে যতটুকু ত্রাণ নিতে পারছে সেটাও দূরবর্তী এলাকায় পৌঁছানোর আগেই শেষ হয়ে যাচ্ছে।'

আলাপের এক পর্যায়ে সাহাব উদ্দিন নামে এক যুবক ১০০ প্যাকেট রান্না করা বিরানি ও পানির বোতল নিয়ে সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়কের পাশে রাখা স্পিডবোটের কাছে আসেন। তার উদ্দেশ্য, একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের দেওয়া এই খাবার সেনাবাহিনীর সহায়তায় তার নিজ গ্রাম আলমনগরে পৌঁছানো।

সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়কে গবাদি পশুসহ আশ্রয় নিয়েছে অনেক পরিবার। ছবি: মওদুদ আহম্মেদ সুজন/স্টার

সাহাব উদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাদের গ্রামের প্রায় ৫০০ পরিবারের মধ্যে আমরা ২০ পরিবার স্থানীয় এতিমখানার ২ তলায় আশ্রয় নিয়েছি। আমরা যতটুকু চাল-খাবার নিতে পেরেছিলাম তা দিয়েই এই কয়েকদিন চলেছে। এখন আমাদের আর কোনো খাবার নেই আমাদের কাছে।'

ওই এতিমখানায় এই ১০০ প্যাকেট খাবার ছাড়া অন্য কোনো সহায়তা পৌঁছেনি বলেও তিনি জানান।

তিনি জানান, ওই গ্রামের অনেকেই স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। তবে সেখানকার পরিস্থিতি তার জানা নেই।

সাহাব উদ্দিনের সঙ্গে কথা বলতে বলতে এক বৃদ্ধসহ ৫-৬ জন মানুষ রাস্তার পাশে রাখা সেই খাবারের পাশে ভিড় জমাতে থাকেন। পরে সেই বৃদ্ধকে এক প্যাকেট খাবার দিয়ে বাকিটুকু সেনাবাহিনীর ভ্যানে তুলে অপেক্ষা করতে থাকেন স্পিডবোটের জন্য।

সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়কের ২ পাশে এখনও কানায় কানায় পানি। সবার বাড়িঘর এখনও পানির নিচে। সড়কের ধারে গবাদি পশুসহ আশ্রয় নিয়েছেন অনেকেই।

Comments

The Daily Star  | English
The Indian media and Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

5h ago