সুনামগঞ্জে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে উত্তেজনার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে
ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলায় বেশ কয়েকটি বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত এক যুবককে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। পরে সেনাসদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
দোয়ারাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, 'স্থানীয় রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নেতাদের সহযোগিতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা গেছে। সংঘাত এড়িয়ে অভিযুক্ত যুবককে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।'
ওই যুবকের নাম আকাশ দাস। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আকাশ দাস ফেসবুকের একটি পোস্টের কমেন্টে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছেন এমন কথা ফেসবুকে প্রচার করেন স্থানীয় এক মুসলিম যুবক। এর পরই লোকজন উপজেলা স্কুল মাঠে জড়ো হন। খবর পেয়ে পুলিশ আকাশ দাসকে হেফাজতে নিয়ে আসে।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহিদুল হক বলেন, 'আকাশ দাসকে ছিনিয়ে নিতে পুলিশের ওপর চড়াও হন তৌহিদী জনতা। তবুও আমরা তাকে নিরাপদে থানায় নিয়ে আসি। এ সময় বেশ কিছু উত্তেজিত মানুষ মংলাগাঁওয়ে আকাশ দাসেরসহ কিছু বাড়িঘরে এবং স্থানীয় বাজারে হিন্দুদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর চালান।'
তিনি বলেন, 'এর মধ্যে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। স্থানীয় রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নেতৃবৃন্দও পরিস্থিতি শান্ত রাখতে এগিয়ে এলে মধ্যরাতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এখন আলোচনার মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।'
এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে রাতে দোয়ারাবাজারে যান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিলেট ও সুনামগঞ্জের সমন্বয়ক এবং নেতাকর্মীরা। পরে সমন্বয়ক আবুল সালেহ মোহাম্মদ নাসিম তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে একটি বিবৃতি দেন।
তিনি বলেন, 'দোয়ারাবাজারে হিন্দু-মুসলিম সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এই পুরো ঘটনাটি ছিল পরিকল্পিত। একটি বিশেষ গ্রুপের সদস্য, নিষিদ্ধ সংগঠনের সদস্য পরিকল্পিতভাবে ঘটনাটি ঘটিয়েছে।'
সঠিক তদন্তের দাবি জানিয়ে আবু সালেহ আরও বলেন, 'আমাদের দেশ একটি গভীর ষড়যন্ত্রের শিকার। এর বহিঃপ্রকাশ আজকের এই ঘটনা।'
Comments