লালমনিরহাটে ধরলার পানি বিপৎসীমার ১২ সেমি উপরে
উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে গত ২৪ ঘণ্টায় ধরলা নদীর পানি ৭০ সেন্টিমিটার বেড়েছে।
আজ বুধবার সকাল ৬টা থেকে লালমনিরহাটের শিমুলবাড়ী পয়েন্টে ধরলার পানি বিপৎসীমার ১২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিস্তা নদীর পানিও বেড়েছে ৬৫ সেন্টিমিটার। তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার নিচে রয়েছে।
এই দুই নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
ধরলার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট, কুলাঘাট ও বড়বাড়ী ইউনিয়নে ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। নদী তীরবর্তী গ্রামগুলোয় বন্যার পানি ঢুকছে।
প্রথম দফার বন্যার ধকল কাটিয়ে ওঠার আগেই বানভাসিদের দ্বিতীয় দফায় বন্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের চর ফলিমারী গ্রামের বানভাসি সখিনা বেওয়া (৬০) আজ সকালে ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে আবার ধরলার পানি বাড়ছে। বিকেলে বাড়ি-ঘরে পানি ঢুকতে শুরু করে। আজ সকালে বাড়ির ভেতর ২-৩ ফুট বন্যার পানি।'
তিনি আরও বলেন, 'প্রথম দফার বন্যায় ঘর ছেড়ে স্কুলমাঠে আশ্রয় নিয়েছিলাম। ১০ দিন থাকার পর গত শনিবার বাড়িতে যাই। ক্ষতিগ্রস্ত ঘরগুলো এখনো মেরামতও করা হয়নি। এরইমধ্যে দ্বিতীয় দফা বন্যা। পানি আরেকটু বাড়লে আবারো নিরাপদস্থানে আশ্রয় নিতে হবে।'
কুলাঘাট ইউনিয়নের চর শিবেরকুটি গ্রামের বানভাসি কৃষক নজরুল ইসলাম (৬৫) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এখনো প্রথম দফা বন্যার ধকল কাটিয়ে ওঠতে পারিনি। দ্বিতীয় দফা বন্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। এভাবে দফায় দফায় বন্যা হলে বাঁচবো কীভাবে।'
মোগলহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ধরলায় পানি বেড়ে যাওয়ায় কয়েকটি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের কিছু অংশ ধসে যাওয়ার ঝুঁকিতে আছে। আশঙ্কা করছি, যেভাবে নদীর পানি বাড়ছে তাতে এই ইউনিয়নে কয়েক হাজার মানুষ একদিনেই পানিবন্দি হয়ে পড়বেন।'
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'উজান থেকে পাহাড়ি ঢল আসা অব্যাহত আছে। সেই সঙ্গে বৃষ্টিও হচ্ছে। এসব কারণে নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের দিকে নজর আছে। ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি দেখা দিলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
Comments