প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ, ৩ দিন ধরে স্কুলে যাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা

শনিবার থেকে মিলনবাজার গ্রামের পশ্চিম সারডুবি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে যাচ্ছে না। ছবি: স্টার

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়ম-স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে তার অপসারণের দাবিতে সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাচ্ছেন না অভিভাবকরা।

গত শনিবার থেকে মিলনবাজার গ্রামের পশ্চিম সারডুবি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে যাচ্ছে না।

বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১২০ জন এবং প্রধান শিক্ষক শামসুন্নাহার বেগমসহ শিক্ষকের সংখ্যা ৭ জন।

এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক সাহেদুল ইসলাম (৪০) সোমবার বিকেলে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, '১৯৭০ সালে প্রতিষ্ঠিত প্রাথমিক বিদ্যালয়টি এলাকার ঐতিহ্যবাহী একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কিন্তু প্রধান শিক্ষক শামসুন্নাহার বেগম সময়মতো বিদ্যালয়ে যান না। তিনি বিদ্যালয়ের উন্নয়নে বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাৎ করে আসছেন।'

'আমরা অভিভাবকরা প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে তিনি আমাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। আমাদের সন্তানদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। তাই গত শনিবার থেকে আমরা সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাচ্ছি না,' তিনি বলেন।

ছবি: স্টার

আরেক অভিভাবক মমিনুর রহমান (৪৪) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রধান শিক্ষক শামসুন্নাহারের বিরুদ্ধে তদন্ত ও তাকে এই বিদ্যালয় থেকে অপসারণ করা না হলে আমরা সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাব না।'

তিনি বলেন, 'প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয় পরিচালনার কোনো নিয়মকে তোয়াক্কা করেন না।'

আরেক শিক্ষার্থীর অভিভাবক নুর ইসলাম (৫০) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রধান শিক্ষক ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিদ্যালয় মাঠের ৫টি বড় গাছ বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করেছেন। শিক্ষার্থীদের জন্য পুষ্টি বিস্কুটও আত্মসাৎ করেছেন। স্থানীয়রা তাকে পুষ্টির বিস্কুটের কার্টুনসহ ২ বার আটক করেছিল।'

বিদ্যালয়ের শিক্ষক আনোয়ারা খাতুন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত শনিবার থেকে বিদ্যালয়ে কোনো শিক্ষার্থী না আসায়, পাঠদান হয়নি। আমরা বিদ্যালয়ে এসে অলস সময় কাটাচ্ছি। বিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনা জরুরি।'

যোগাযোগ করা হলে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক শামসুন্নাহার বেগম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমার বিরুদ্ধে অভিভাবকদের আনীত অভিযোগ সঠিক নয়। আমি সময়মতো এবং নিয়মিত বিদ্যালয়ে যাই। কোনো অভিভাবক ও শিক্ষার্থীর সঙ্গে আমি খারাপ আচরণ করিনি।'

তিনি বলেন, 'বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটি না থাকায় আমি নিজেই উন্নয়নমুলক কাজ করেছি। আমি কোনো অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতা করিনি।'

জানতে চাইলে হাতীবান্ধা উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার বেলাল হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সোমবার দুপুরে প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে প্রধান শিক্ষককে অপসারণ করা হতে পারে।'

আজ মঙ্গলবার অভিভাবকদের সঙ্গে মতবিনিময় করা হবে বলে জানান তিনি।

Comments

The Daily Star  | English
US attack on Iran nuclear sites

Iran denounces US attack as ‘outrageous’

Iran says 'no signs of contamination' after US attacks on key nuclear sites

8h ago