পাশাপাশি অবস্থানে থেকে ঢাবিতে ভর্তিচ্ছুদের শুভেচ্ছা জানাল ছাত্রলীগ-ছাত্রদল
পাশাপাশি অবস্থান নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছে ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এমন দৃশ্য দেখে খুশি ক্যাম্পাসের অনেকে।
আজ শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের অধীনে 'খ' ইউনিটের ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
গত কয়েক দিন ধরে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে না দেওয়ার অভিযোগ ছিল। ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে গিয়ে কয়েক দফা হামলারও শিকার হয় ছাত্রদল।
আজ দুপুর সাড়ে ১২টায় যখন ভর্তি পরীক্ষা শেষ হয়, তখন ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা কার্জন হলের গেটে গিয়ে পরীক্ষার হল থেকে বের হয়ে আসা শিক্ষার্থীদের ফুল এবং কলম দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। প্রায় আধা ঘণ্টার মতো তারা সেখানে ছিলেন।
ওই সময় তাদের কাছাকাছি কার্জন হলের ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সামনে দাঁড়িয়ে শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাতে দেখা যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের।
ডাকসু নির্বাচনের আগে থেকে ছাত্রদল ক্যাম্পাসে আসা শুরু করে। তবে গত ২৪ মে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি পালন করতে ক্যাম্পাসে গেলে তাদের ওপর হামলা করে ছাত্রলীগ। এরপর থেকে ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী সাদ উদ্দিন খন্দকার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দুটি সংগঠনের মধ্যে এমন শান্তিপূর্ণ অবস্থান সব সময় প্রত্যাশিত। ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা আসে পড়াশোনা করতে। সংঘর্ষ বা মারামারি হলে তাদের মধ্যে আতঙ্ক কাজ করে। সব সংগঠন ক্যাম্পাসে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করলে, ক্যাম্পাস স্থিতিশীল থাকবে, পড়াশোনার ক্ষতি হবে না।'
গত শুক্রবার ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ভর্তি পরীক্ষা ছিল। ওই দিনও ছাত্রদল ক্যাম্পাসে গিয়ে শিক্ষার্থীদের ফুল আর কলম দিয়ে শুভেচ্ছা জানায়।
শুক্রবার ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হলেও আজ সেটির প্রয়োজন হয়নি এবং ছাত্রলীগও তাদের কোনো বাধা দেয়নি।
এ বিষয়ে ঢাবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক আকতার হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা দ্বিতীয় দিনের মতো ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের ফুল এবং কলম দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছি। ক্যাম্পাসে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করতে চাই। গতকালও পালন করেছি আজও শেষ করলাম। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল শান্তিতে বিশ্বাস করে। আমরা পরবর্তী পরীক্ষার দিনগুলোতেও শিক্ষার্থীদের বরণ করে নিতে ক্যাম্পাসে আসব।'
তিনি জানান, ভর্তি পরীক্ষা শুরু হওয়া কিছুক্ষণ আগে তারা কার্জন হলের গেটের সামনে দাঁড়ান। প্রায় আধাঘণ্টার মতো সেখানে ছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা যেন নির্বিঘ্নে পরীক্ষা দিতে পারে ছাত্রলীগ সে বিষয়টি নিশ্চিতের চেষ্টা করে। ছাত্রদল ছাত্র রাজনীতির লেবাস ধরে ক্যাম্পাসে এসে যা-ই করুক না কেন, তাদের উদ্দেশ্য আসলে সেটি নয়। ছাত্রদল ক্যাম্পাসে আসে একটা ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরির জন্য, ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করা যায় কি না সেজন্য। তবে এ ব্যাপারে ছাত্রলীগ সবসময় সজাগ আছে।'
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও সব সংগঠনের কাছ থেকে এমন সহযোগিতা প্রত্যাশা করে বলে জানান প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী।
তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা সব সময় ছাত্র সংগঠনের সহযোগিতা প্রত্যাশা করি। সবার সহযোগিতায় ভর্তি পরীক্ষা মতো বড় একটি কর্মযজ্ঞ সুষ্ঠুভাবে শেষ করতে চাই।'
Comments