জাবি: সাংবাদিকের ফোন তল্লাশি, ছাত্রদল কর্মীকে মারধরের অভিযোগ ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: সংগৃহীত

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত এক সাংবাদিকের মোবাইল ফোন তল্লাশি এবং ছাত্রদলের একজন কর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে।

গত সোমবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুরাদ চত্ত্বরে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল ও সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমানের উপস্থিতিতে এসব ঘটনা ঘটে বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।

ওই সাংবাদিকের নাম ফরিদুর রেজা খান নাফিজ। তিনি একটি অনলাইন পোর্টালের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি। ফরিদুর রেজা বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। অন্যদিকে মারধরের শিকার ছাত্রদল কর্মী হামিদুল্লাহ সালমান বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের আবাসিক ছাত্র।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুরাদ চত্ত্বরে বসে কথা বলছিলেন হামিদুল্লাহ সালমান ও ফরিদুর রেজা। এ সময় ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা সেখানে গিয়ে হামিদুল্লাহকে নতুন প্রশাসনিক ভবনের পাশের যাত্রী ছাউনির পেছনে নিয়ে যান। তারা সেখানে হামিদুল্লাহকে বেধড়ক মারধর করেন। একপর্যায়ে সেখান থেকে হামিদুল্লাহকে বের করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন ফরিদুর রেজা। পরে তাদের দুজনের মোবাইল ফোন তল্লাশি করা শুরু করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা হামিদুল্লাহকে উদ্ধার করে।

হামিদুল্লাহ সালমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি ছাত্রদল করি বলে ছাত্রলীগের

নেতারা আমাকে মারধর করেছে। তারা জোর-জবরদস্তি করে আমার জবানবন্দিমূলক একটি ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে। আমি তাদের মধ্যে কম্পিউটার প্রকৌশল বিভাগের রাফি চৌধুরীকে চিনতে পেরেছি। '

অন্যদিকে ফরিদুর রেজা বলেন, 'হামিদুল্লাহ আর আমি আড্ডা দিচ্ছিলাম। ছাত্রলীগের নেতারা হামিদুল্লাহকে মারধর করা শুরু করলে আমি তাকে বের করার চেষ্টা করি। এতে ছাত্রলীগের নেতারা আমার ওপরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। পরে বিশেষ একটি ছাত্রসংগঠনকে আমি তথ্য দিয়ে সহায়তা করছি- এমন অভিযোগ তুলে তারা আমার মোবাইলের ফেসবুক, ম্যাসেঞ্জার, গ্যালারিসহ ফোনের ব্যক্তিগত তথ্য ঘাটাঘাটি করে।'

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান সোহেল বলেন, 'শুধু ছাত্রদলের ওই ছেলের সাথে এই ছেলের কনভারসেশন তল্লাশি করা হয়েছে। দু'একজন কাজটি করেছে হয়তো।'

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের রাফি চৌধুরীর ব্যাপারে তিনি বলেন, 'আমি জানি না৷ প্রথমে আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না।'

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটন বলেন, 'আমরা ঘটনাস্থলে অনেক পরে পৌঁছাই। শুনেছি ছাত্রদলের ছেলেটি বিশ্ববিদ্যালয়ে নাশকতা করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছে। এটা তো আমরা মেনে নেব না।'

সাংবাদিকের ফোন তল্লাশির ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'ছাত্রদলের ছেলেটিকে চলে যেতে বললে সে না যেয়ে এই ছেলেকে ফোন দেয় এবং তাকে বলতে থাকে বিভিন্ন জনকে কল দিতে ও নিউজ করতে। তখন আমি সাংবাদিকের সামনে ছিলাম এবং তাকে বলি যে লাউডস্পিকার দাও, কী বলে শুনি!

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসানকে ফোনে পাওয়া যায়নি।

Comments

The Daily Star  | English

Plane with 181 on board crashes in South Korea, killing 85

A bird strike and adverse weather conditions cited as likely causes

3h ago