শীতে সতর্কতা

ছবি: সংগৃহীত

শীতের শুরুতেই গলা খুসখুস, নাক বন্ধ, মাথাব্যথা, জ্বর ইত্যাদি সমস্যা লেগেই থাকে। শিশু থেকে বয়স্ক সবাইকে শীতে এ সমস্যায় ভুগতে হয়। এ জাতীয় সমস্যার জন্য যে ভাইরাস দায়ী তা সংক্রামক। একজন থেকে আরেকজনের কাছে খুব সহজেই ছড়িয়ে পড়ে। তাই এসময় বেশি সতর্ক থাকতে হবে। সাধারণ কিছু সাবধানতা অবলম্বন করে এগুলো থেকে দূরে থাকা সম্ভব।

প্রাথমিক সাবধানতা:

ঘুম থেকে ওঠার পর কোনো পোশাক ছাড়া বারান্দা বা বাইরে যাবেন না। এ সময় হালকা পোশাক পরে বাইরে গেলে ঠান্ডা লেগে সমস্যার সূত্রপাত হতে পারে। ঠান্ডা পানি পান না করে হালকা গরম পানি পান করুন। খুব ভোরে বা সন্ধ্যায় হালকা চাদর গায়ে দিন বা একটু ভারি পোশাক পরুন। বাড়িয়ে সবসময় স্যান্ডেল পায়ে ঘুরুন। নিয়মিত গরম পানির ভাপ নিতে পারেন।

বারবার হাত ধোয়া:

সংক্রমণ থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখার সবচেয়ে ভালো উপায় হাত ধোয়া। বিশেষ করে জিম বা কোনো পাবলিক প্লেস থেকে ফিরে অবশ্যই অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে।

মুখে হাত নয়:

বারবার মুখে হাত না দেওয়াই ভালো। অকারণে হাত দিয়ে চোখ চুলকানো বা নাকে হাত দেওয়া থেকে ইনফেকশন ছড়ায়। বাড়ির কেউ সর্দিজ্বরে আক্রান্ত হলে ডিসপোজেবল জিনিসপত্র ব্যবহার করতে পারেন। কাপড়ের রুমাল ব্যবহার না করে টিস্যু ব্যবহার করুন। অসুস্থ ব্যক্তির কাপ, গ্লাস আলাদা রাখুন।

ঘর পরিষ্কার রাখুন:

দরজার হাতল, সুইচবোর্ড, কিবোর্ড, মোবাইল, রিমোট ইত্যাদি হলো ইনফেকশন ছড়ানোর উৎস। কারণ, আক্রান্ত ব্যক্তি এসব জায়গায় হাত দেওয়ার পর দীর্ঘক্ষণ ভাইরাস সেখানে বেঁচে থাকতে পারে। তাই সাবান পানি বা ডিসইনফেকট্যান্ট দিয়ে দিনে দু'তিনবার পরিষ্কার করুন।

পেপার টাওয়েল ব্যবহার:

বাথরুম এবং রান্নাঘরে কাপড়ের তোয়ালের বদলে পেপার টাওয়েল ব্যবহার করুন। কাপড়ে জীবাণু বেশি সময় স্থায়ী হয়।

স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন:

নির্দিষ্ট সময় খাওয়া, পর্যাপ্ত ঘুম এবং নিয়মিত ব্যায়াম শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এতে সহজে ভাইরাস আক্রান্ত করতে পারে না।

চিকিৎসা:

ঠান্ডার সেরকম উল্লেখ করার মতো চিকিৎসা নেই। তবে, কিছু বিষয় মেনে চললে একটু আরাম পাওয়া যায়। জটিল পরিস্থিতি তৈরি হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। একইসঙ্গে কিছু নিয়ম মেনে চলুন, যেমন- যতটা সম্ভব বিশ্রাম নিন, প্রচুর পানি পান। গরম পানি, টমেটো স্যুপ, চিকেন স্যুপ খেলে গলায় আরাম পাওয়া যায়। নাক বন্ধ বা মাথা ভার কমাতে হালকা গরম পানিতে গোসল করুন। গরম পানিতে অ্যাসপিরিন বা লবণ দিয়ে গড়গড়া করুন। ধুলা ও ধোঁয়া এড়িয়ে চলুন। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কখনো কাশির ওষুধ খাবেন না।

কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন

জ্বর ১০২ ডিগ্রি বা তার বেশি হলে এবং তা দু'দিনে না কমলে। শ্বাসকষ্ট হলে। কাশি সাতদিনের বেশি স্থায়ী হলে।

আছে ভিটামিন সি:

এই সময়ে ভিটামিন সি খুবই উপাদেয়। ভিটামিন সি অসুখের স্থায়িত্ব কমাতে সাহায্য করে। এসময় ভিটামিন সি ট্যাবলেট ছাড়াও লেবু জাতীয় ফল, সবুজ শাকসবজি খাওয়া ভালো।

চিকেন স্যুপ:

সর্দিজ্বরে চিকেন স্যুপ খুব ভালো কাজে দেয়। গরম চিকেন স্যুপের পুষ্টিগুণ শরীরে ভালো লাগার ফ্যাক্টর তৈরি করে। এছাড়া সহজে খাওয়া যায়, সহজপাচ্য এবং রিহাইড্রেশনে সাহায্য করে বলে এই সময় চিকেন স্যুপ দারুণ পথ্য।

তুলসী:

মধু ও তুলসী পাতার রস ঠান্ডাজনিত সমস্যার ঘরোয়া চিকিৎসার মহৌষধ। তুলসী পাতায় আছে অ্যারোমেটিক অয়েল যা সর্দি সারায়। আরও আছে ট্যানিন যা গলাব্যথা সারাতে সাহায্য করে। এজন্য এটিকে বলা হয় রেস্টোরেটিভ ওয়ার্মিং হার্ব। তুলসীতে আরও আছে ভিটামিন কে, যা ব্লাড ক্লটিংয়ে সাহায্য করে।

সূত্র: হেলথ ইনসাইডার, হেলদি লিভিং

Comments

The Daily Star  | English

Turning the tide: How to revive Dhaka’s canals and fix waterlogging

Throughout this month, we have published six reports on Dhaka’s canals, detailing how these water bodies, once the lifeblood of the capital’s drainage system, are now clogged, encroached upon, and reduced to narrow, polluted channels.

16h ago