ব্যাটে-বলে সাকিবের মুন্সিয়ানা, কুমিল্লাকে হারাল বরিশাল
মুনিম শাহরিয়ারের ব্যাটে উড়ন্ত শুরু আনার পর ফরচুন বরিশালের ইনিংস টানলেন সাকিব আল হাসান। করলেন আরেকটি ফিফটি। শেষ দিকে জুতসই রান না এলেও বোলিং দিয়ে আবারও ঝলক দেখালো সাকিবের দল। তাতেও দারুণ বল করে দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিলেন তিনি।
সোমবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে ৩২ রানে হারিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠেছে বরিশাল। আগে ব্যাট করে বরিশালের করা ১৫৫ রানের জবাবে ১২৩ রান পর্যন্ত যেতে পেরেছে কুমিল্লা।
দলের জয়ে ব্যাট হাতে ৩৭ বলে ৫০ করার পর বোলিংয়ে ২০ রানে ২ উইকেট নিয়ে নায়ক সাকিব। এই নিয়ে বরিশালের টানা তিন জয়ে দলের সেরা পারফর্মার হলেন তিনি।
১৫৬ রান তাড়ায় নেমে দ্বিতীয় ওভারেই অধিনায়ক ইমরুল কায়েসকে হারায় কুমিল্লা। সাকিবের বলে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে ক্যাচ দেন মিড উইকেটে। লিটন দাস খেলছিলেন দারুণ। মুজিব উর রহমানকে অনেক ব্যাকফুটে গিয়ে জায়গা বানিয়ে কব্জির ব্যবহার করে মেরেছেন দেখার মতো বাউন্ডারি, বাউন্ডারি এসেছে কাভার ড্রাইভে।
সাবলীলভাবে রান এলেও অস্থির হয়ে উঠেন লিটন। সাকিবের বলে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে স্টাম্পিং হয়ে থামেন ১৯ রান করে। নড়বড়ে শুরুর পর ছন্দে থাকা মাহমুদুল হাসান জয়কেও হারায় কুমিল্লা।
ওপেনিংয়ে রান পেলেও চারে নেমে ব্যর্থ তিনি। ব্রাভোর বলে করতে গিয়ে ক্যাচ উঠিয়ে বিদায় নেন ৫ করা করা জয়। মুমিনুল খেলা ধরে রাখলেও রান পাননি মঈন আলিও।
থিতু হওয়া মুমিনুল পরে পুষিয়ে দিতে পারেননি। ৩০ বলে ৩০ রান করে তিনি শিকার নাঈম হাসানের। সুনিল নারাইন, নাহিদুল ইসলামরা ছিলেন আসা-যাওয়ার মিছিলে। আফগান করিম জানাত আর তানবীর ইসলাম হারের ব্যবধান কমানোর মতো কিছু শট খেলেন।
টস জিতে ব্যাট করতে গিয়ে দলকে উড়ন্ত শুরু পাইয়ে দেন মুনিম। ক্রিস গেইলকে একপাশে রেখে তুলেন ঝড়। ৮ বলে ১০ করে আরেকটি ব্যর্থতায় গেইল থামলেও চলে মুনিমের ব্যাট। গত ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টিতে আবাহনীর হয়ে আলো কেড়েছিলেন তিনি। তবু বিপিএলে ড্রাফট থেকে তাকে কেউ নেয়নি। পরে দল পান বরিশালে।
প্রথম ম্যাচে নেমে শুরুতে আউট হলেও দ্বিতীয় সুযোগটা কাজে লাগালেন ময়মনসিংহের এই ডানহাতি ওপেনার। মুনিমের ব্যাটেই পাওয়ার প্লে কাজে লাগাতে পারে বরিশাল। দলকে সুবিধাজনক অবস্থানে নিয়েও নিজের ফিফটিটা পাওয়া হয়নি তার। ২৫ বলে ৪ বাউন্ডারি, ৩ ছক্কায় ৪৫ করে ক্যাচ দেন মঈন আলির বলে।
তিনে নেমে নাজমুল হোসেন শান্ত এদিনও ছিলেন ব্যর্থ। তবে অধিনায়ক সাকিবের ব্যাট আবারও হেসেছে। শুরু থেকেই আগ্রাসী মেজাজে ব্যাট করে দলের গতি চালু রাখেন তিনি, তার সঙ্গে আরেক পাশে তৌহিদ হৃদয় ছিলেন মন্থর। ৬৭ রানের জুটি এলেও লেগে যায় ৫৫ বল।
৩৭ বলে ৪ বাউন্ডারি, ২ ছক্কায় ৫০ করে ফেরেন সাকিব। হৃদয় আর আউটই হননি। ৩৭ বল খেলে শম্ভুক গতিতে করেছেন ৩১ রান। তবু ব্রাভোর ৬ বলে ১০ রান দেড়শো ছাড়ায় বরিশালের ইনিংস।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ফরচুন বরিশাল: ২০ ওভারে ১৫৫/৫ ( মুনিম ৪৫, গেইল ১০, শান্ত ১, সাকিব ৫০, হৃদয় ৩১*, ব্রাভো ১০, সোহান ৩* ; নাহিদুল ০/৩০, মোস্তাফিজ ১/৩০, তানবীর ২/২২, সুমন ০/১৬, নারাইন ০/২৫, মঈন ১/২১, করিম ১/৬)
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স: ২০ ওভারে ১২৩/৯ (লিটন ১৯, ইমরুল ১, মুমিনুল ৩০, জয় ৫, মঈন ৬, নাহিদুল ১, নারাইন ৩, করিম ১৭, সুমন ৮, তানবীর ২১*, সুমন ৮, মোস্তাফিজ ৭* ; মুজিব ০/২৭ , সাকিব ২/২০, ব্রাভো ২/২৯ , নাঈম ৩/২৯, শান্ত ১/৫, গেইল ০/১০)
ফল: ফরচুন বরিশাল ৩২ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: সাকিব আল হাসান।
Comments