পাসওয়ার্ড ‘ভুলে গেছেন’ রাসেল, আটকা ইভ্যালির গ্রাহকের অর্থ
শুধু একটি সার্ভারের পাসওয়ার্ডের অভাবে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির গ্রাহক ও মার্চেন্টদের অর্থ ফেরত দেওয়ার বিষয়টি আটকে আছে। আপাতদৃষ্টিতে এই পাসওয়ার্ডটি পুনরুদ্ধার করার কোনো উপায় নেই৷
শুধু ইভ্যালির সিইও মোহাম্মদ রাসেলই পাসওয়ার্ডটি জানতেন। কিন্তু তিনি দাবি করছেন, 'ভুলে গেছেন'।
এই সার্ভারটি এমন যে, এটুআই ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগও পাসওয়ার্ড বের করতে বা সার্ভারটিতে ঢুকতে পারছে না।
হাইকোর্টের গঠন করে দেওয়া ইভ্যালি বোর্ড আজ শুক্রবার ইভ্যালির করপোরেট অফিসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায়।
ওই সার্ভারে সব ক্রেতা ও বিক্রেতার লেনদেনের ডেটা আছে। এসব ডেটা ছাড়া লেনদেনের দাবির মূল্য ও সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে না বলে জানিয়েছেন ইভ্যালির বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাহবুব কবির মিলন।
বোর্ডের নেতৃত্বে থাকা বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, 'আমরা অ্যামাজনের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছি। কিন্তু তারা বলেছে, তারা অ্যাকাউন্ট পুনরুদ্ধারে আমাদের সহযোগিতা করতে পারবে না। এ কাজটি করতে আসল অ্যাকাউন্টধারীকে প্রয়োজন হবে।'
'আমি জেলে রাসেলের সঙ্গে দেখা করেছি। তিনি বলেছেন, তিনি পাসওয়ার্ড মনে করতে পারছেন না। তার ডেস্কে রাখা একটি কালো ডায়েরিতে পাসওয়ার্ড লেখা ছিল বলে জানিয়েছেন তিনি। কিন্তু আমরা এমন কোনো ডায়েরি পাইনি', যোগ করেন তিনি।
মাহবুব কবির মিলন বলেন, ইভ্যালির সঙ্গে লেনদেনের দাবি যাচাই করতে না পারার কারণে বিভিন্ন পেমেন্ট গেটওয়ের এসক্রো অ্যাকাউন্টে আটকে থাকা ২৫ কোটি টাকাও গ্রাহকদের ফেরত দেওয়া যাচ্ছে না।
এসক্রো অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে গ্রাহকের পরিশোধ করা অর্থ গত বছরের ১ জুলাই থেকে গেটওয়েগুলোতে আটকে আছে। বর্তমানে ইভ্যালির বিভিন্ন এসক্রো অ্যাকাউন্টে ২৫ কোটি টাকা আছে।
'এ ছাড়া, ইভ্যালির ২টি গুদামে ২৫ কোটি টাকার মালামালও পড়ে আছে', যোগ করেন বিচারপতি মানিক।
তবে ইভ্যালির সঙ্গে লেনদেনের যে পরিমাণ দাবি আছে, তার সঙ্গে তুলনা করলে এই পরিমাণ অতি ক্ষুদ্র বলে উল্লেখ করেন তিনি।
'কয়েকজন মার্চেন্ট ইভ্যালির সঙ্গে তাদের লেনদেন দেখিয়ে আমাদের কাছে নথি উপস্থাপন করেছে। সেগুলো অডিট করা হচ্ছে', যোগ করেন তিনি।
হাইকোর্টের গঠন করে দেওয়া ইভ্যালি বোর্ড চলতি সপ্তাহে কোম্পানির ৫০ শতাংশ শেয়ার ইভ্যালির সাবেক চেয়ারপারসন শামীমা নাসরিন এবং রাসেলের পরিবারের ৩ সদস্যের কাছে হস্তান্তর করে।
গত ফেব্রুয়ারিতে হাইকোর্ট একটি রুল পাস করে ইভ্যালিকে তাদের শেয়ারের ৫০ শতাংশ শামীমার বাবা রফিকুল আলম তালুকদার, মা ফরিদা তালুকদার লিলি এবং তার ভগ্নিপতি মো. মামুনুর রশীদের কাছে হস্তান্তর করার অনুমতি দেন।
সার্ভারের ডেটা তাহলে কীভাবে পুনরুদ্ধার করা হবে, সেই বিষয়ে কিছু বলতে পারেনি বোর্ড।
Comments