ঢাবি ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের মধ্যে সংহতির সুর

ছাত্রলীগের সূত্র বলছে, কেন্দ্রীয় দুই নেতার আমন্ত্রণে ঢাবি ছাত্রলীগের দুই নেতার সাক্ষাতে যাওয়ার মাধ্যমে তাদের মধ্যে সংহতির আভাসই পাওয়া যাচ্ছে।

সাত কলেজের কমিটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়াসহ কয়েকটি বিষয়কে কেন্দ্র করে কেন্দ্রীয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্রলীগের মধ্যে যে বিরোধ প্রকাশ্যে এসেছিল, তা নিরসনের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।

এই বিরোধের জেরে গত কয়েক দিন ধরে দুই শাখা ছাত্রলীগের নেতারা নিজেদের মধ্যে কথা বলা ও দেখা-সাক্ষাৎও বন্ধ করে দেন।

এর মধ্যেই গতকাল বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনানের আমন্ত্রণে তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যান ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত। তাদের সঙ্গে ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রিয়াজ মাহমুদ ও সাধারণ সম্পাদক সাগর আহমেদ এবং দক্ষিণের সভাপতি রাজীবুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক সজল কুন্ডু।

ছাত্রলীগের সূত্র বলছে, কেন্দ্রীয় দুই নেতার আমন্ত্রণে ঢাবি ছাত্রলীগের দুই নেতার সাক্ষাতে যাওয়ার মাধ্যমে তাদের মধ্যে সংহতির আভাসই পাওয়া যাচ্ছে। অর্থাৎ তাদের মধ্যে চলমান বিরোধের অবসান ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গতকাল রাতে ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত তার ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে তোলা সেলফি দিয়ে ক্যাপশনে লিখেছেন, 'ইউনাইটেড উই স্ট্যান্ড, ডিভাইডেড উই ফল৷'

নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ঢাবি ছাত্রলীগ সভাপতি মাজহারুল কবির শয়নও কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম ও সাধারণ সম্পাদক ইনানের সঙ্গে ছবি প্রকাশ করেন৷

সাদ্দাম হোসেনও একই ছবি প্রকাশ করে লিখেছেন, 'টুগেদার উই উইল।'

ছাত্রলীগ সূত্রে জানা যায়, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতার আমন্ত্রণে ঢাবি শাখা এবং ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা রাজধানী ঢাকার একটি রেস্তোরাঁয় সাক্ষাৎ করতে যান।

গত ১ সেপ্টেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত ছাত্রলীগের সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের ইউনিট প্রধানদের বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ না দেওয়া কেন্দ্রীয় কমিটির সঙ্গে কিছুটা দূরত্ব সৃষ্ট হয় সংশ্লিষ্ট ইউনিটের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের৷ ওই সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ একইসঙ্গে হলের সিট দখলকে কেন্দ্র করে সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে মারামারি, পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় কমিটি করার ক্ষেত্রে ঢাবি সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুরোধ 'প্রত্যাশিতভাবে' না রাখাসহ নানা বিষয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ চলছিল বলে ছাত্রলীগ সূত্র জানায়।

এর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত ঢাবি অধিভুক্ত সাত কলেজে ছাত্রলীগের কমিটি অনুমোদনের ক্ষমতা নিজেদের হাতে নিয়ে আসতে তৎপরতা দেখান৷ তারা এ বিষয়ে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভাও করেন৷

বিরোধ অবসানের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শেখ হাসিনার প্রশ্নে আমরা ঐক্যবদ্ধ৷ গতকাল রাতে আমরা সবাই একসঙ্গে বসে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেছি৷ আমরা ঐক্যবদ্ধ৷ সাত কলেজের ব্যাপারে তিনি (প্রধানমন্ত্রী) যে সিদ্ধান্ত দেবেন, তাই চূড়ান্ত হবে৷'

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা গতকাল বসে আলোচনা করেছি। কিন্তু এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না।'

Comments