পুলিশের ব্যারিকেড সরিয়ে বঙ্গভবনের দিকে শিক্ষার্থীদের মিছিল

দুপুর দেড়টার দিকে মিছিলটি গুলিস্তান জিরো পয়েন্টের কাছে পৌঁছালে পুলিশের ব্যারিকেডের কারণে সেখানে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: সিরাজুল ইসলাম রুবেল/স্টার

সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি দিতে হাজারো শিক্ষার্থী মিছিল নিয়ে বঙ্গভবনের দিকে রওনা হলে গুলিস্তানে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন তারা।

পরে পুলিশের ব্যারিকেড সরিয়ে আবারও বঙ্গভবনের দিকে মিছিল নিয়ে যেতে শুরু করেন আন্দোলরত শিক্ষার্থীরা।

ঘটনাস্থল থেকে ডেইলি স্টারের সংবাদদাতা জানান, দুপুর দেড়টার দিকে মিছিলটি গুলিস্তান জিরো পয়েন্টের কাছে পৌঁছালে পুলিশের ব্যারিকেডের কারণে সেখানে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। এসময় কয়েক হাজার শিক্ষার্থী গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট মোড় এবং সচিবালয়ের সামনে অবস্থান করেন। এতে করে পুরো সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

কোটা আন্দোলন ঢাকা
বঙ্গভবনের পথে হাজারো শিক্ষার্থীর মিছিল। ছবিটি ঢাকার ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশনের সামনে থেকে তোলা। ছবি: সিরাজুল ইসলাম রুবেল/স্টার

এর প্রায় ১৫ মিনিট পর শিক্ষার্থীরা ব্যারিকেড সরিয়ে আবারও যাত্রা শুরু করেন। এসময় কয়েক হাজার শিক্ষার্থীর স্লোগানে মুখর ছিল চারপাশ। 

এর আগে রোববার সকাল ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজ শিক্ষার্থীরাও এই মিছিলে যোগ দেন।

রোববার সকাল থেকেই শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন। ছবি: সিরাজুল ইসলাম রুবেল/স্টার

মিছিলটি ক্যাম্পাসের ভিসি চত্বর, টিএসসি, শাহবাগ ঘুরে প্রেস ক্লাবের সামনে দিয়ে গুলিস্তান জিরো পয়েন্টে পৌঁছায়।

সংসদে জরুরি অধিবেশন ডেকে সরকারি চাকরির সকল গ্রেডে শুধুমাত্র পিছিয়ে পড়া/অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য ন্যূনতম (সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ) আইন পাশ করতে হবে— এই এক দফা দাবিতে আজ গণপদযাত্রা শুরু করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা।

গতকাল সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে কোটা সংস্কারের দাবিতে রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি প্রদান এবং গণপদযাত্রা কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। সেইসঙ্গে নাম উল্লেখ না করে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশের করা মামলা প্রত্যাহারে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়।

কর্মসূচি ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ঢাবি শিক্ষার্থী হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন চলবে।

সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতির বিরুদ্ধে গত দুই সপ্তাহ ধরে বিক্ষোভ করছেন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা। গত ৭ জুলাই থেকে 'বাংলা ব্লকেড' নামে অবরোধ কর্মসূচি শুরু হয়। শিক্ষার্থীরা শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়, প্রধান মহাসড়ক এবং রেলপথ অবরোধ করেন।

পুলিশের ব্যারিকেড সরিয়ে সামনের দিকে এগোলেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: স্টার

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের পর সরকার প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে পুরো কোটাব্যবস্থা বাতিল করে। ওই বছরের ৪ অক্টোবর কোটা বাতিলবিষয়ক পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। পরে ২০২১ সালে সেই পরিপত্রের মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের অংশটিকে চ্যালেঞ্জ করে কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান রিট করেন।

গত ৫ জুন রায় ঘোষণায় মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নবম থেকে ১৩তম গ্রেডে নিয়োগ দেওয়ার বাধা দূর হয়। ওই রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আবেদন করে।

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বিচারাধীন মামলাটিতে পক্ষভুক্ত হতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি আল সাদী ভূঁইয়া এবং উর্দু বিভাগের শিক্ষার্থী আহনাফ সাঈদ খান আবেদন করেন।

এরপর গত মঙ্গলবার আপিল বিভাগ সরকারি চাকরিতে কোটা বহালে হাইকোর্টের রায়ের ওপর চার সপ্তাহের স্থিতাবস্থা দেন।

 

 

Comments

The Daily Star  | English

Consumption culture only producing waste: Prof Yunus

The chief adviser, at COP29, calls for a new economic framework to tackle climate crisis

1h ago