নতুন নিয়মে ষাণ্মাসিক মূল্যায়ন পরীক্ষার প্রথম দিনই প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ

নতুন শিক্ষাক্রমের আওতায় মাধ্যমিকের ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণিতে বুধবার থেকে শুরু হওয়া ষাণ্মাসিক মূল্যায়ন বা অর্ধবার্ষিক পরীক্ষার প্রশ্ন এবং উত্তর পরীক্ষার আগের রাতে ফাঁস হওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম ও নবম শ্রেণির পরীক্ষা শুরুর আগের দিন গত মঙ্গলবার দুপুরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধানের কাছে প্রশ্ন পাঠায় এনসিটিবি। নিয়ম অনুযায়ী সেই প্রশ্নের ফটোকপি করে বুধবার পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। এতে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) অধীনে সারাদেশের এক কোটির মতো শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছে।

তবে এই প্রশ্নের সঙ্গে আগের রাতে ফাঁস হওয়া প্রশ্নের হুবহু মিল পাওয়া গেছে। এ নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে।

এনসিটিবি সূত্র অনুযায়ী, অর্ধবার্ষিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র 'নৈপুণ্য' অ্যাপের মাধ্যমে সরাসরি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের আইডিতে দেওয়া হয়। বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা প্রত্যেক শিক্ষার্থীর অগ্রগতির রেকর্ড রাখার জন্য অ্যাপটির অ্যাক্সেস পান।

কোনো একজন প্রতিষ্ঠান প্রধান এই প্রশ্ন 'না জেনে-বুঝেই' সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করেছেন বলে দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন এনসিটিবির রুটিন দায়িত্বে থাকা চেয়ারম্যান অধ্যাপক মশিউজ্জামান।

তিনি বলেন, 'আমি এটাকে প্রশ্ন ফাঁস বলব না। কারণ এই প্রশ্ন শিক্ষার্থীরা আগে পেলেও তাতে বিশেষ কোনো লাভ হবে না। এটাই নতুন কারিকুলামের বিশেষত্ব। শিক্ষার্থীকে তার বিদ্যালয়ে বিভিন্ন অনুশীলন ভিত্তিক কাজের মধ্য দিয়ে তার কৃতিত্ব প্রমাণ করতে হবে, তবেই সে ভালো ফলাফল অর্জন করতে পারবে।'

তিনি আরও বলেন, 'প্রশ্ন পাবে আর সে অনুযায়ী কিছু একটা মুখস্থ করে মূল্যায়নে তা প্রদর্শনের সুযোগ আদতে নেই এই কারিকুলামের ব্যবস্থায়। আর তা ছাড়া, গত বছরের ষষ্ঠ, সপ্তম শ্রেণির মূল্যায়নের কয়েক সপ্তাহ আগেই তো প্রশ্নপত্র ওয়েবসাইটে আপলোড করে রাখা হতো। এতে কোনো সমস্যা হয়নি তখন।'

'সমস্যা আসলে তখনই হয়, যখন এগুলার সমাধানসহ আমরা সোশ্যাল কিংবা অন্যান্য মাধ্যমে শেয়ার করি। এতে করে শিক্ষার্থী, অভিভাবক সকলেই বিভ্রান্ত হন, ভুল বোঝেন', বলেন মশিউজ্জামান।

তিনি বলেন, 'যেভাবেই হোক, প্রশ্নপত্র প্রতিষ্ঠান প্রধানের হাত থেকে অন্যান্য মাধ্যম হয় শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে গেছে, এটা অপ্রত্যাশিত। প্রধানদের এটা করা উচিত হয়নি।'

এক্ষেত্রে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানতে চাইলে অধ্যাপক মশিউজ্জামান বলেন, 'আমরা নতুন করে একটি নোটিশ জারি করেছি, পরবর্তীতে যাতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে। যদি ঘটে তবে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া, সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, এখন থেকে পরীক্ষার আগের দিন সন্ধ্যায় প্রশ্নপত্র সরবরাহ করা হবে।'

উল্লেখ্য, গত বছর প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম শুরু হয়েছে। চলতি বছর দ্বিতীয়, তৃতীয়, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতেও চালু হয়েছে এ শিক্ষাক্রম। আর গত সোমবার চূড়ান্ত করা হয়েছে নতুন কারিকুলামে নেওয়া পরীক্ষার মূল্যায়ন পদ্ধতি।

Comments

The Daily Star  | English

Govt publishes gazette of 1,558 injured July fighters

Of them, 210 have been enlisted in the critically injured "B" category, while the rest fall under the "C" category of injured fighters

7h ago