জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে স্নাতক কোর্স বন্ধ: গেটে তালা দিয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

মূল গেটে তালা দিয়ে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে স্নাতক কোর্স বন্ধের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে সেখানকার মূল গেটে তালা দিয়ে বিক্ষোভ করেছেন স্নাতক প্রথম বর্ষের (২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষ) শিক্ষার্থীরা।

২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হওয়া ১৬০ শিক্ষার্থী আজ সোমবার সকাল ৯টায় গাজীপুরের গাছা থানাধীন বোর্ডবাজারস্থ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এই বিক্ষোভ করেন।

জানা গেছে, বিক্ষোভ চলাকালীন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ভেতরে যেতে পারেননি। পরে কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে তাদের বোঝানোর পর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তারা মূল গেট খুলে দেন।

শিক্ষার্থীরা জানায়, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গাছা থানার বোর্ডবাজার ক্যাম্পাসে বিবিএ, এলএলবি, ট্যুরিজম এবং নিউট্রিশন ও ফুড সায়েন্সে ১৬০ শিক্ষার্থী ভর্তি করে এবং পরবর্তীতে তাদের শিক্ষাকার্যক্রম চলমান রাখে। সদ্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে শিক্ষাকার্যক্রম বন্ধের নির্দেশনা দিলে কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির ব্যবস্থা করার জন্য সিদ্ধান্ত নেয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মচারী জানান, শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে 'জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র আন্দোলন পরিষদ'র ব্যানারে সকাল থেকে অবস্থান নেয়।

শিক্ষার্থীরা জানান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখাসহ পাঁচ দফা দাবিতে এর আগেও তারা মানববন্ধন করেছেন।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক আতাউর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, সকালে শিক্ষার্থীরা গেটে তালা দেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছে। শিক্ষার্থীদের বোঝানোর পর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তারা মূল গেটের তালা খুলে দেন।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব পারভেজ হাসানের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে 'বিধিবহির্ভূতভাবে' জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে চালু করা অনার্স কোর্স বন্ধের বিষয়টি জানানো হয়।

এতে বলা হয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে স্নাতক প্রোগ্রাম চালু করা সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে। এ কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে ইতোমধ্যে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের তাদের পছন্দ ও প্রাপ্যতা অনুযায়ী পার্শ্ববর্তী কোনো বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজে ভর্তি করানো এবং ওই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে।

কী কারণে এমন সিদ্ধান্ত, জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, এটা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত।

জানা যায়, গত বছরের ২০ জুলাই গাজীপুরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) প্রোগ্রামে শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এতে এলএলবি, বিবিএ, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট এবং নিউট্রিশন অ্যান্ড ফুড সায়েন্স বিষয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য আবেদন আহ্বান করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিটি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) নজরে এলে প্রতিষ্ঠানটি তা বন্ধ রাখতে নির্দেশনা দেয়। কিন্তু ইউজিসির নির্দেশনা না মেনে ভর্তি কার্যক্রম চালু রাখে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। পরে গত ২৬ মে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অন-ক্যাম্পাস অনার্স কোর্স বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এতে ইতোমধ্যে সেখানে ভর্তি হওয়া ১৬০ জনের শিক্ষাজীবন অনিশ্চয়তায় পড়ে।

Comments

The Daily Star  | English

Sweeping changes in constitution

Expanding the fundamental rights to include food, clothing, shelter, education, internet, and vote, the Constitution Reform Commission proposes replacing nationalism, socialism, and secularism with equality, human dignity, social justice and pluralism as fundamental principles of state policy.

3h ago