তিন শূন্যের পৃথিবী: ২৬ বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণদের নিয়ে তাইওয়ানে ইউনূস ক্যাম্প

তাইওয়ানের ২৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচিত ৬০ জন শিক্ষার্থী দ্বিতীয় ইউনূস ক্যাম্পে অংশগ্রহণ করেন। ছবি: সংগৃহীত

তিন শূন্যের পৃথিবী গড়ার প্রত্যয়ে তাইওয়ানে দ্বিতীয় ইউনূস ক্যাম্পে অংশ গ্রহণ করেছে দেশটির ২৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬০ জন শিক্ষার্থী।

ইউনূস সোশ্যাল বিজনেস ফাউন্ডেশন তাইওয়ানের আয়োজনে গত জানুয়ারির শেষে ডং শিহ ফরেস্ট গার্ডেনে এই ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়।

আয়োজনের প্রতিপাদ্য ছিল তিন শূন্যের পৃথিবী গড়া—শূন্য কার্বন নির্গমন, শূন্য সম্পদ কেন্দ্রীভূতকরণ এবং শূন্য বেকারত্ব। ইউনূস ক্যাম্পের উদ্দেশ্য ছিল এই লক্ষ্যগুলোর দিকে অর্থপূর্ণ উদ্যোগ নিতে অংশগ্রহণকারীদের ক্ষমতায়ন করা।

শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ভিডিও বার্তার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করেন, যাতে তারা তাদের মানসিকতার মাধ্যমে সমাজ পরিবর্তন করতে পারে। ছবি: সংগৃহীত

তাইওয়ানের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা এই ৬০ জন শিক্ষার্থী ছোটো ছোটো দল গঠন করে সামাজিক সমস্যা নিয়ে আলোচনা করে। শান্তিতে নোবেলজয়ী প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসসহ ছয়জন বিশেষজ্ঞ বক্তা অনুষ্ঠানে ভিডিও বার্তার মাধ্যমে যোগ দিয়ে অংশগ্রহণকারীদের প্রতি দিকনির্দেশনামূলক বক্তৃতা দেন।

প্রফেসর ইউনূস তার তরুণ বয়সে কানাডায় বিশ্ব জাম্বুরীতে অংশগ্রহণসহ নিজের অন্যান্য অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করেন, যা তাকে মানুষের জন্য কাজ করতে অনুপ্রাণিত করেছিল। তিনি তরুণদেরকে এই ক্যাম্প উপভোগ করার সঙ্গে সঙ্গে 'তিন শূন্য'র লক্ষ্যের ওপর গুরুত্বারোপ এবং তার ভিত্তিতে উদ্যোগ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করেন।

বক্তারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে, যেমন: ডিজাইন প্রস্তুত, সামাজিক উদ্ভাবন, যোগাযোগ দক্ষতা, তহবিল সংগ্রহ এবং উদ্যোক্তাদের অনুপ্রাণিত করা ইত্যাদির বিষয়ে কথা বলেন, যা অংশগ্রহণকারীদেরকে 'তিন শূন্য' গোলের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বাস্তব সমাধান খুঁজে বের করতে অনুপ্রাণিত করে।

ক্যাম্পে অংশগ্রহণকারী দলগুলো বিভিন্ন সৃজনশীল প্রোজেক্ট উপস্থাপনের মাধ্যমে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন। আয়োজনের বিজয়ী দল পাড়ার দোকানগুলোকে পরিবেশগতভাবে বা সামাজিকভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ 'হাব' করার বিষয়ে সৃজনশীল প্রস্তাব উপস্থাপন করে।

অন্যান্য প্রস্তাবনাগুলোর মধ্যে ছিল পুনরায় ব্যবহারযোগ্য পাত্র ব্যবহার জনপ্রিয়  করার জন্য প্রচার এবং গৃহহীনদের জন্য অব্যবহৃত সম্পদ ব্যবহার করার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা।

ইউনূস সোশ্যাল বিজনেস তাইওয়ান ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট ফিলিপা সাই অংশগ্রহণকারীদের নিজ নিজ সামাজিক গণ্ডিতে আলোকিত মানুষ হতে উৎসাহিত করতে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা উদ্ধৃত করে শোনান।

অংশগ্রহণকারীরা প্রফেসর ইউনূসের চেতনাকে মূর্ত করে সম্মিলিতভাবে তিন শূন্যের পৃথিবীর লক্ষ্য অর্জনের জন্য প্রচেষ্টা চালাবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন ফিলিপা সাই।

ইউনূস সোশ্যাল বিজনেস তাইওয়ান ফাউন্ডেশনের সিইও জুনো ওয়াং ইউনূস ক্যাম্পের পরিকল্পনা ও পরিচালনায় নেতৃত্ব দেন। ক্যাম্পের লক্ষ্য ছিল সৃষ্টিশীল চিন্তা-ভাবনা, সামাজিক দায়বদ্ধতা এবং টেকসই উন্নয়নের মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ড. ইউনূসের তিন শূন্যের স্বপ্ন বাস্তবায়নে সহায়তা করা।

ক্যাম্পের প্রাক্তন অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে এবারের ক্যাম্পে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে যোগদান করেন অনেকে। তারা সামাজিক নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ, টেকসই পৃথিবী গড়ার জ্ঞান অর্জন এবং বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলাপচারিতার মাধ্যমে ক্যাম্পের মূল্য তুলে ধরেন।

Comments

The Daily Star  | English
Protests disrupt city life in Dhaka

Protests disrupt city life, again

Protests blocking major thoroughfares in Karwan Bazar and Shahbagh left the capital largely paralysed

2h ago