যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা

ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভেনিয়া: ভর্তি ও অন্যান্য তথ্য

ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভেনিয়া। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়া রাজ্যে অবস্থিত ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভেনিয়া। ২০২৪ সালের কিউএস র‍্যাংকিংয়ে এই প্রতিষ্ঠানটি দ্বাদশতম অবস্থান অর্জন করেছে। এখানে পড়াশোনা করতে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে ৫২টি আন্ডার গ্র্যাজুয়েট ও ১৫টি পোস্ট গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রাম। 

বিশ্ববিদ্যালয়টি ১৭৪০ সালে প্রতিষ্ঠিত একটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। প্রতি বছরই এখানে গড়ে ৯ হাজার ৭৬০ জন শিক্ষার্থী স্নাতকপূর্ব অধ্যয়নের জন্য ভর্তি হয়। শহুরে আবহে গড়ে ওঠা এই ইউনিভার্সিটির রয়েছে ২৯৯ একর ক্যাম্পাস। আইভি লিগের অন্তর্ভুক্ত এই ইউনিভার্সিটিতে সেমিস্টারভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এর বার্ষিক টিউশন ফি ৬৬ হাজার ১০৪ মার্কিন ডলার। 

প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে ৫০টিরও বেশি দেশ থেকে এই প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন স্টাডি প্রোগ্রামে আড়াই হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী অংশ নিয়ে থাকে। এখানে পড়তে বার্ষিক টিউশন ফি খরচ করতে হয় ৬৬ হাজার ১০৪ মার্কিন ডলার। 

ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভেনিয়াতে মোট ১২টি স্কুল অব প্রোগ্রাম রয়েছে, যার ৫টিতে আন্ডারগ্র্যাড ও গ্র্যাড দুটি ডিগ্রিই নেওয়া সম্ভব। বাকি ৭টিতে শুধু গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রির জন্য পড়াশোনা করা যাবে। এই ইউনিভার্সিটির গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে হোয়ারটন স্কুল, স্কুল অব এডুকেশন, স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অ্যাপ্লায়েড সায়েন্স, ল' স্কুল এবং স্কুল অব মেডিসিন। অন্যান্য উল্লেখযোগ্য প্রোগ্রামের মধ্যে রয়েছে স্কুল অব ডিজাইন এবং স্কুল অব ডেন্টাল মেডিসিনও। 

শিক্ষাবৃত্তি

ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভেনিয়ার সঙ্গে সংযুক্ত বেশ কিছু শিক্ষাবৃত্তি রয়েছে, যার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পরিসরের শিক্ষার্থীরা এখানে পড়াশোনা বা গবেষণা করতে পারবেন। অন্যান্য অনেক ফাউন্ডেশন, ট্রাস্ট, করপোরেশন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বিত উদ্যোগেও এই ইউনিভার্সিটি শিক্ষাবৃত্তির প্রদান করে থাকে। এর মধ্যে স্কলারশিপ, ফেলোশিপ, গ্রান্ট ইত্যাদি সবকিছুই অন্তর্ভুক্ত, যাতে অনলাইনে আবেদনের সুযোগ রয়েছে।

এই শিক্ষাবৃত্তিগুলো আন্ডারগ্র্যাজুয়েট, মাস্টার্স, পিএচডি– এসব ডিগ্রির জন্য প্রযোজ্য। এর মধ্যে রয়েছে আইএএল রিসার্চ ফর ডক্টোরাল স্টাডিস, এইচকেএডিসি ওভারসিস আর্টস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এবং কিছু ফুলব্রাইট স্টাডি প্রোগ্রাম।

ক্যাম্পাসজীবন

ক্যাম্পাসের ভেতর ও বাইরে শিক্ষার্থীদের জন্য বাসস্থান ও খাওয়া-দাওয়া বেশ সুবিধাজনক এখানে। বাড়ি থেকে দূরে থেকেও যাতে শিক্ষার্থীরা আরামদায়ক জীবনযাপন করতে পারেন, তার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন ক্লাব ও সংস্থার সঙ্গে যুক্ত থেকে নিজের পছন্দমতো সামাজিক, রাজনৈতিক, শৈল্পিক ও বহুমাত্রিক সাংস্কৃতিক চর্চার সঙ্গে শিক্ষাজীবনকে আরও সমৃদ্ধ করে তোলার সুযোগও মিলবে। শুধু বইয়ে মুখ গুঁজে দিন পার করতে হবে না এখানে মোটেও, গান-বাজনা, থিয়েটার ইত্যাদির সঙ্গে তালে তাল মিলিয়ে কেটে যাবে ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভেনিয়ার 'পেন-লাইফ'। সেইসাথে আইভি লিগের অন্যতম সদস্য হওয়ার দরুণ শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে শিক্ষক, কর্মী সকলেরই জন্যই বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক খেলাধুলা ও শরীরচর্চায় যুক্ত থাকা যাবে এই বিশ্ববিদ্যালয়টির ক্যাম্পাসে। 

যোগাযোগে রপ্ত এখানকার সকলেই, কেন না ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভেনিয়ায় রয়েছে একাধিক প্রকাশনী। শিক্ষক ও কর্মীদের মতামত নিয়ে সাপ্তাহিক পত্রিকা 'অ্যালমানাক', শিক্ষার্থীদের দ্বারা প্রকাশিত পত্রিকা দ্য ডেইলি পেনসিলভেনিয়ান, দৈনিক অনলাইন পাবলিকেশন 'পেন টুডে' ও প্রতিষ্ঠানের অ্যালামনাই ম্যাগাজিন 'দ্য পেনসিলভেনিয়া গ্যাজেট' দ্বারা সমৃদ্ধ এখানকার নিজস্ব সংবাদ-জগত। 

এ ছাড়া 'পেন ভিডিও টুডে' হচ্ছে এই প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব টেলিভিশন ও ভিডিও নেটওয়ার্ক। এই ক্যাম্পাসে আছে দুটি রেডিও স্টেশনও। এসব কার্যক্রমেই শিক্ষার্থীরা অত্যন্ত সক্রিয়। একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত ও সব সময় হালনাগাদ থাকার এই বিশেষ পদ্ধতিটি এখানকার সাংবাদিকতার শিক্ষার্থীদের জন্য নিঃসন্দেহে একটি ভালো মানের ব্যবহারিক শিক্ষার সুযোগ করে দেয় এবং অন্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্যও নিজেদের প্রতিভার অনন্য বহিঃপ্রকাশের দ্বার উন্মুক্ত হয়। 

রয়েছে গৌরবের ইতিহাস

এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি শুধু অবকাঠামোগত দিক দিয়েই শক্তিশালী নয়, এর বিগত শিক্ষার্থীদের তালিকা দেখলেই বোঝা যায়, ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভেনিয়ার ইতিহাস ঠিক কতটা গৌরবোজ্জ্বল। উল্লেখযোগ্য 'পেন-অ্যালামনাই' স্বর্ণাক্ষরে নিজেদের নাম লিখিয়েছেন বিখ্যাত গায়ক জন লেজেন্ড, কবি উইলিয়াম কার্লোস এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এখন পর্যন্ত ২৫ জন নোবেলবিজয়ীর সঙ্গে এই ইউনিভার্সিটির নাম জুড়ে আছে। এদের মধ্যে আছেন পদার্থবিজ্ঞানী রেমন্ড ডেভিস জুনিয়র এবং অর্থনীতিবিদ লরেন্স ক্লেইন। 

 

Comments

The Daily Star  | English
The Indian media and Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

7h ago