নতুন ভিসির প্রতি কুয়েট শিক্ষকদের অনাস্থা, দ্রুত পদত্যাগের দাবি

কুয়েট শিক্ষক সমিতির সংবাদ সম্মেলন। ছবি: সংগৃহীত

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি-বিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল না থাকা, ছাত্র-শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবির প্রতি অবজ্ঞা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক হিসেবে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) বর্তমান উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. হযরত আলীর প্রতি অনাস্থা জানিয়েছেন শিক্ষকরা। তারা অবিলম্বে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করেছেন।

একইসঙ্গে, যোগ্য উপাচার্য নিয়োগ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন তারা।

আজ বুধবার দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভা শেষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব দাবি জানান সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. ফারুক হোসেন।

তিনি বলেন, আমরা আশা করি, উনি যেহেতু দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না, তাই তিনি সম্মানের সঙ্গে সেটা সুরাহা করার জন্য সহযোগিতা করবেন। তিনি যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক, সেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে তিনি এটা করবেন।

অধ্যাপক ড. মো. ফারুক হোসেন বলেন, আমরা এই সময় খুব হতাশা নিয়ে সংকটময় পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। এই সময় ভাইস চ্যান্সেলর দাপ্তরিক কাজের কথা বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে অবস্থান করছেন। গত ১৮ মে তিনি আমাদের কাছে বলে যান, পরের দিন ফিরবেন এবং বিষয়টার দ্রুত সমাধান করবেন। এখন পর্যন্ত তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে আসেননি। আজ তৃতীয় দিনের মতো আমাদের অবস্থান কর্মসূচি ছিল। সেটার প্রতি তিনি কোনো কর্ণপাত করেননি। এমনকি তিনি দাপ্তরিক কাজে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে গিয়েছেন—এমন কোনো অফিসিয়াল নোটিশও আমাদের দেননি। যাকে দায়িত্ব দিয়ে গেছেন, তিনিও দায়িত্ব নিতে অপারগতা প্রকাশ করে আজ লিখিত দিয়েছেন।

'এমন অবস্থায় আমরা আজ অভিভাবক-শূন্য। এমন অবহেলা একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবকের, যার প্রতি আমাদের পূর্ণ আস্থা এবং সহযোগিতা ছিল—তিনি এটার মূল্য দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি-বিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল না থাকা, ছাত্র-শিক্ষক সবার দাবির প্রতি অবজ্ঞা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবকের দায়িত্বে থেকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন না করায় কুয়েটের শিক্ষকরা মনে করেন তিনি দায়িত্ব পালনে অক্ষম। এ কারণে আমরা তার দ্রুত পদত্যাগ দাবি করছি,' বলেন তিনি।

উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আগামীকাল সকাল সাড়ে ১১টায় ক্যাম্পাসে মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে শিক্ষক সমিতি।

উল্লেখ্য, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনা ঘটে। শিক্ষার্থীরা শুরুতে পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলন করলেও পরে তা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে পরিণত করে। তাদের আন্দোলনের মুখে গত ২৪ এপ্রিল সরকার উপাচার্য ড. মুহাম্মদ মাছুদকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়। পরবর্তীতে ১ মে কুয়েটের অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসেবে অধ্যাপক মো. হযরত আলীকে নিয়োগ দেওয়া হয়।

এদিকে, শিক্ষক লাঞ্ছিতের ঘটনায় গত ৫ মে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভায় জড়িতদের চিহ্নিত করে সাত কর্মদিবসের মধ্যে সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দাবি জানানো হয়।

এর পরিপ্রেক্ষিতে ৬ মে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় শিক্ষক সমিতির দাবির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে প্রশাসন কিছু সিদ্ধান্ত নেয়। সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ পাঠানো হয়।

কিন্তু, শিক্ষার্থীরা এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করলে উপাচার্য শৃঙ্খলা কমিটির সভা স্থগিত করেন। উপাচার্যের এ সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দেয় শিক্ষক সমিতি। পরবর্তীতে তারা প্রশাসনিক কাজও বন্ধ রাখেন।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh RMG sector

RMG sector on edge as tariff talks make no headway

The diverging outcomes threaten to create a multi-tiered tariff landscape in Asia, placing nations like Bangladesh at a serious disadvantage in the US market.

11h ago