৫৭ ঘণ্টার অনশন শেষে কুয়েট শিক্ষার্থীদের বিজয় মিছিল

জুস পান করিয়ে কুয়েটের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙান ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. তানজীমউদ্দিন খান। ছবি: সংগৃহীত

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ এবং উপ-উপাচার্য অধ্যাপক এস কে শরিফুল আলমকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতির ঘোষণার পর ৫৬ ঘণ্টার অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। গতরাত ১টার পর শিক্ষার্থীরা অনশন ভাঙেন এবং ক্যাম্পাসে আনন্দ মিছিল বের করেন।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. তানজীমউদ্দিন খান অনশনরত শিক্ষার্থীদের জুস পান করিয়ে অনশন ভাঙান। এর আগে তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পাঠানো একটি বার্তা শিক্ষার্থীদের সামনে পড়ে শোনান। বার্তায় জানানো হয়, সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কুয়েটের উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে একজন জ্যেষ্ঠ অধ্যাপককে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের দায়িত্ব দেওয়া হবে এবং নতুন নিয়োগের জন্য সার্চ কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এই ঘোষণা শোনার পর আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে উল্লাস ছড়িয়ে পড়ে।

উল্লেখ্য, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা সহ ছয় দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। তাদের দাবির মধ্যে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য এবং ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের পদত্যাগ ছিল অন্যতম। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি সংবলিত একটি লিখিত স্মারকলিপি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেন। দাবিপূরণ না হওয়ায় তারা অনশনে যান। ২৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে এবং শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেয়। একই সাথে ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়।

দীর্ঘ প্রতীক্ষা এবং কঠিন অনশনের পর দাবি আদায় হওয়ায় শিক্ষার্থীরা এই আন্দোলনকে 'অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়ের বিজয়' হিসেবে অভিহিত করছেন।

Comments