ছাত্রী নির্যাতন: বরিশাল মেডিকেলের সব হোস্টেলের কমিটি বাতিল
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের ছাত্রী হলে র্যাগিংয়ের ঘটনার পর শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠিত সব হোস্টেলের কমিটি বাতিল করা হয়েছে।
মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. ফাইজুল বাশারের সই করা এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়েছে। গতকাল শনিবার রাতে এ সিদ্ধান্ত হলেও, কমিটি বাতিলের খবর জানাজানি হয় আজ রোববার।
অফিস আদেশে কলেজের দুটি ছাত্র ও একটি ছাত্রী হোস্টেলে শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠিত কমিটি বাতিলের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
গত বুধবার মেডিকেল কলেজের ছাত্রী হলের ৬০৬ নম্বর কক্ষে র্যাগিংয়ের ঘটনা ঘটে। এক ছাত্রীকে গভীর রাতে ২ দফায় ওই কক্ষে নিয়ে দীর্ঘ সময় দাঁড় করিয়ে, গালাগাল, হুমকি এবং মোবাইল ফোন তল্লাশি করা হয়।
পরে ওই শিক্ষার্থী আতঙ্কে অজ্ঞান হয়ে পড়লে তাকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
শিক্ষার্থীদের সূত্র জানায়, ডেন্টাল সপ্তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ফাহমিদা রওশন প্রভা ও নীলিমা হোসেন জুঁইয়ের নেতৃত্বে এই ঘটনা ঘটে। তারা দুজনই নিজেদের ছাত্রলীগের নেতা বলে দাবি করেন।
র্যাগিং ও নির্যাতনের শিকার ওই ছাত্রী আতঙ্কে আছেন বলে তার পরিবার জানিয়েছে।
ওই শিক্ষার্থীর এক স্বজন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রভা হোস্টেলের সেক্রেটারি ও নীলিমা সহকারী সেক্রেটারি হিসেবে গত ৫ মাস ধরে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এ সময়ে একাধিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটলেও, কেউ ভয়ে মুখ খোলেনি।'
হোস্টেলের শিক্ষার্থীরা জানান, কলেজে এখন ছাত্রলীগের কোনো কমিটি নেই।
তবে ওই দুই শিক্ষার্থী নিজেদের ছাত্রলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন সময়ে ছাত্রীদের ওপর নির্যাতন করলেও, হোস্টেল সুপার নির্বিকার ছিলেন বলে দাবি শিক্ষার্থীদের।
এদিকে ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় ৪ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ।
কলেজের উপাধ্যক্ষ নাজিমুল হক ডেইলি স্টারকে জানান, অধ্যাপক উত্তম কুমার সাহাকে তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে।
অপর ৩ সদস্য হলেন-সহযোগী অধ্যাপক প্রবীর কুমার সাহা, প্রভাষক অনিকা বিশ্বাস ও জহিরুল ইসলাম। কমিটিকে ৩ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
বরিশালে শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজে ছাত্রীর ওপর র্যাগিং ও মানসিক নির্যাতনের ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তসহ দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট।
রোববার দুপুর ১২টায় বরিশাল অশ্বিনী কুমার হল চত্বরে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট বরিশাল মহানগর শাখা ক্যাম্পাসে ও আবাসিক হলে র্যাগিং ও শিক্ষার্থী নিপীড়নের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ সমাবেশ করে।
উল্লেখ্য, গতকাল শনিবার মেডিকেল কলেজের একাডেমিক কাউন্সিল নির্যাতনের শিকার ছাত্রীদের বক্তব্য নেন। এ সময় বেশ কয়েকটি বেসরকারি টেলিভিশনের সাংবাদিকরা সেখানে সংবাদ সংগ্রহে গেলে কয়েকজন শিক্ষক সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রথমে উচ্চবাচ্য এবং পরে লাঞ্ছিত করেন বলে সাংবাদিকদের অভিযোগ।
Comments