শেবাচিমের বার্ন ইউনিটে শয্যা সংকট, গুরুতর দগ্ধ রোগীদেরও ভর্তি হতে হচ্ছে ওয়ার্ডে
গত শুক্রবার দুর্বৃত্তদের ছোড়া এসিডে দগ্ধ হলে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (শেবাচিম) নেওয়া হয় রিয়াজ হাওলাদার, তার স্ত্রী খাদিজা বেগম ও ১৮ মাস বয়সী সন্তান জান্নাতিকে। তবে হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে শয্যা ফাঁকা না থাকায় তাদের ভর্তি করা হয় ফিমেল সার্জারি বিভাগে।
রিয়াজ জানান, বার্ন ইউনিটে শয্যা ফাঁকা না থাকায় বাধ্য হয়ে তাদের ওই ওয়ার্ডে ভর্তি হতে হয়।
শেবাচিমের বার্ন ইউনিটের সেবক লিংকন দত্ত জানান, ইউনিটটিতে শয্যা আছে ৩০টি। কিন্তু শীতে আগুনে পুড়ে যাওয়া রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় অন্তত ২০ জনকে জেনারেল, শিশু কিংবা অন্য কোনো ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
তিনি জানান, এসিডে খাদিজার শরীরের ১০ ভাগেরও বেশি পুড়ে গেছে। বাকি দুজনেরটা কিছুটা কম।
শেবাচিমের বার্ন ইউনিটের সূত্র জানান, ইউনিটটিতে নেই কোনো অপারেশন থিয়েটার (ওটি), নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) কিংবা আউটডোরে চিকিৎসার ব্যবস্থা। সেই কারণে এখানে রোগীদের চাপ বাড়লে বাধ্য হয়েই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের ঢাকায় পাঠানো হয়। এ ছাড়া, যাদের অবস্থা গুরুতর, তাদেরকেও ঢাকাতে পাঠাতে হয়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, পুড়ে যাওয়া রোগীদের একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়ায় চিকিৎসা নিতে হয়। সেই কারণে সিট ফাঁকা হতে সময়ও লাগে বেশি। বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা দেওয়া হলে দ্রুত রোগ নিরাময় করা সম্ভব হতো।
অন্য ওয়ার্ডে ভর্তির কারণে পুড়ে যাওয়া রোগীদের সংক্রমণ বেশি হয় বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
শেবাচিমের বার্ন ইউনিটের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. মারুফুল ইসলাম ইসলাম জানান, এই বিভাগে রোগীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় স্থান সংকুলান হচ্ছে না।
শেবাচিম পরিচালক ডা. সাইফুল ইসলাম বলেন, 'বার্ন ইউনিটটি ৩০ শয্যার হওয়ায় শীতকালে জায়গা হচ্ছে না। আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা ভবন নির্মাণের প্রাথমিক অনুমোদন দিয়েছে। আশা করা যায় ভবন নির্মাণ হলে অপারেশন থিয়েটারের ও আউটডোরসহ স্থান সংকুলানের সমস্যাও মিটে যাবে।'
অন্যদিকে বরিশাল মেট্রোপলিটনের বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রহমান মুকুল জানান, রোববার ভোরে সদর উপজেলার শায়েস্তাবাদ ইউনিয়ন থেকে এসিড ছোড়ার ঘটনায় নাসির হাওলাদার, ফিরোজ হাওলাদার, মিরাজ হাওলাদার ও রাকিব হাওলাদারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই ঘটনার মোটিভ জানতে পুলিশ সব বিষয় খতিয়ে দেখছে।
Comments