আবারও জাবির ৩ হলে ঢুকে ছাত্রী হেনস্তা, আতঙ্ক বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে
আবারও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ছাত্রীদের ৩টি আবাসিক হলে ঢুকে ছাত্রীদের অকথ্য ভাষায় গালাগালি ও হেনস্তা করেছেন অজ্ঞাত এক যুবক।
এ ঘটনার পর অনিরাপত্তা ও আতঙ্কে রাত পার করছেন ছাত্রীরা। নিরাপত্তাহীনতার এমন নজির অকল্পনীয় বলে মন্তব্য করেছেন তারা।
আজ রোববার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ হাসিনা হল ও ৩টার দিকে সুফিয়া কামাল হলে এই ঘটনা ঘটে। একই সময়ে খালেদা জিয়া হলেও চলে চুরির চেষ্টা।
এর আগে গত মঙ্গলবার শেখ হাসিনা হলে একই ঘটনা ঘটে।
গতরাতের ঘটনার বিষয়ে সুফিয়া কামাল হলের আইন ও বিচার বিভাগের এক শিক্ষার্থী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গতকাল আনুমানিক রাত সাড়ে ৩টায় নিচতলায় ৫১ ব্যাচের গণরুমের (ডাইনিং) জানালা ইট দিয়ে ভেঙে ফেলে। মেয়েরা আতঙ্কে রুম থেকে বের হয়ে যায় এবং ২ মেয়ে ট্রমাটাইজড হয়ে বেরই হতে পারেনি।'
তিনি বলেন, 'লোকটা এতো বাজে বাজে কথা বলেছে, যা মুখেও আনতে পারছি না। হল সুপারকে জানানো হলে তিনি গার্ড নিয়ে জায়গাটি দেখে আসেন এবং উল্টো মেয়েদেরকে দোষারোপ করে বলেন, আমরা কেন জানালায় কাগজ লাগাইনি, পর্দা দেইনি। আমাদেরকে বলা হয়েছে ঘটনাটি নিজেদের মধ্যে রাখতে।'
তিনি আরও বলেন, 'এরপর মেয়েদেরকে জোর করে ঘুমাতে পাঠিয়ে দেন হল সুপার। এরপর একই ঘটনা ঘটে ভোর নাড়ে ৫টার দিকে। সবার চিল্লাচিল্লিতে এবার হলের অনেক মেয়ে উঠে যায়। লোকটা আবার এসে চিৎকার করে ভয় দেখায়। মেয়েরা সবাই মাঠে চলে আসে। তাদের কান্নার আওয়াজে হলের বাকি ফ্লোরের মেয়েরাও নেমে আসে।'
'মেয়েদের চিৎকার সত্ত্বেও ওই ব্যক্তিকে বিচলিত মনে হয়নি। তিনি বলছিলেন, হল সুপার কী করবে, তাকে ডাকেন। এতো চিৎকারের মাঝেও কীভাবে এসব বলার সাহস হয়', যোগ করেন তিনি।
একই ঘটনা ঘটেছে শেখ হাসিনা হলেও। এই হলের কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের এক শিক্ষার্থী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মেয়েদের হলে ঢুকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে সেক্সুয়াল হ্যারেসমেন্ট করা হচ্ছে, অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালি করা হচ্ছে। খুবই আশ্চর্যের বিষয়, ওই নিপীড়ক খুব ঠাণ্ডা মাথায় নিশ্চিন্ত মনে জানালার কার্নিশে বসে মেয়েদের ঘুম থেকে ডেকে তুলছে এবং হ্যারেস করে যাচ্ছে। আমাদের নিরাপত্তা কোথায়?'
এমন কাহিনী থেকে রক্ষা পায়নি খালেদা জিয়া হলের ছাত্রীরাও। বেগম খালেদা জিয়া হলের প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্রীরা ডেইলি স্টারকে জানান, ভোর ৪টা নাগাদ ১১৭ নম্বর রুমের জানালায় দাঁড়িয়ে একজন অনেকক্ষণ যাবৎ গালিগালাজ করেছেন। জানালা দিয়ে মাথা আর হাত ঢুকিয়েছে।
এ ব্যাপারে শেখ হাসিনা হলের প্রভোস্ট হোসনে আরা বলেন, 'হ্যাঁ, আবারো এমন ঘটনা ঘটেছে। আমরা সিসিটিভি, কাঁটাতারের জন্য প্রশাসনকে বলেছি। আগের ঘটনায় তদন্ত কমিটি হয়েছে। তারা রিপোর্ট দিবে।'
বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নুরুল আলমকে ২ বার কল করা হলেও প্রতিবারই তিনি বলেন, 'ব্যস্ত আছি। পরে কথা বলব।'
Comments