যবিপ্রবিতে ১৮ কুকুর হত্যার অভিযোগ

যবিপ্রবি

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ১৮টি কুকুর হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

যশোর পৌরসভা কর্মীদের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ নিধন কার্যক্রম চালিয়েছে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।

শিক্ষার্থীরা বলেন, গতকাল বুধবার সকালে কুকুর ধরা শুরু হয় ক্যাম্পাস এলাকায়। পৌরসভার কর্মীরা এসে কুকুরকে ইনজেকশন দেওয়া শুরু করে। অজ্ঞান হয়ে গেলে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর বড় গর্ত করে পুতে ফেলা হয়।

১৮ কুকুর হত্যার খবর নিধন শেষে পৌরকর্মীদের মাধ্যমে জানা যায় বলে জানান তারা।

এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও যশোর পৌরসভা কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কিছু জানে না বলে দাবি করেছে।

যবিপ্রবির পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আবু বকর দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, সকাল ৭টায় এসে পৌর কর্মীরা কুকুর ধরা শুরু করে। সকাল ১০টায় ক্লাস শুরু হওয়ায় তখন ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থী ছিল কম। এরপর যখন ভ্যানে করে কুকুর নিয়ে যাচ্ছিল তখন জানা যায় হত্যা করা হয়েছে। এ ব্যাপারে পৌরসভা, বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর, পরিবেশ বিভাগ, জনসংযোগ বিভাগের সাথে কথা বলেও তাদের কাছ থেকে কারণ জানা যায়নি। তাদের ভূমিকাও প্রশ্নবিদ্ধ।

তিনি জানান, একটি গর্তে ৮টি কুকুরের মরদেহ পড়েছিল। পৌরসভার কর্মীদের কাছ থেকে শিক্ষার্থীরা জেনেছে ১৮টি কুকুর হত্যা করা হয়েছে।

যবিপ্রবির রসায়ন বিভাগের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী রাশেদ খান দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, পৌরসভার কর্মীরা ক্যাম্পাসের ভেতর এসে কুকুরগুলো ইনজেকশন দেওয়া শুরু করে। এরপর বিভিন্ন স্থানে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায়। তারপর গাড়ি দিয়ে সব কুকুর নিয়ে যায়। পরে জানতে পারি ক্যাম্পাসের ভেতর একাডেমিক ভবনের পেছনে বড় গর্ত করে মাটি চাপা দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, আমরা পৌরসভার কর্মীদের কাছে জিজ্ঞাসা করলে তারা ১৮টি কুকুর হত্যার কথা জানায়। ঘটনার দিন শিক্ষার্থীরা কম এসেছিল কারণ পূজার ছুটি শুরু হতে যাচ্ছে। যারা ছিল তারা ভেবেছিল ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে এরজন্য কেউ প্রতিবাদ করেনি। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।

অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী গোবিন্দ কুমার সেন দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, আমার জানামতে ক্যাম্পাসের কুকুরগুলো খুবই শান্ত। তারা কখনই কাউকে আক্রমণ করেনি।

জাবেদ হোসেন নামে একজন শিক্ষার্থী দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, ক্যাম্পাসের সব কুকুরের সাথে আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ একটি সম্পর্ক ছিল। আদর করে সবাই নানা নামও দিয়েছিলাম। সবচেয়ে আদরের ছিল 'ডেভিড' নামে একটি কুকুর। তাকেও হত্যা করা হয়েছে। পূজার ছুটি, ক্যাম্পাস বন্ধের সুযোগ নিয়ে এ কাজটি করা হতে পারে।

তিনি আরও জানান, আমাদের ক্যাম্পাসে কখনো কুকুরের ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে আলাদাভাবে ভাবতে হয়নি। যে কাজটি করা হয়েছে এটি খুবই জঘন্য।

যবিপ্রবির উপাচার্য মো. আনোয়ার হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কুকুর নিধন কারা করেছে এ ব্যাপারে নিশ্চিত নই। এ ব্যাপারে কেউই অনুমতি নেয়নি। বিস্তারিত খোঁজ নিয়ে জানার চেষ্টা করছি।'

যবিপ্রবির প্রক্টর হোসেন আল ইমরান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ ঘটনার ব্যাপারে জানা নেই। কারা করেছে সেটিও নিশ্চিত নই।'

যশোর পৌরসভার মেয়র হায়দার গনী খান বলেন, 'পৌরসভার পক্ষ থেকে কোনো কার্যক্রম ক্যাম্পাস এলাকায় হয়নি। আমার কোনো পৌর কর্মীও যায়নি।'

পিপল ফর এনিমেল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি রাকিবুল হক এমিল জানান, প্রাণিকল্যাণ আইন অনুযায়ী কুকুর নিধন করা যাবে না। এমন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে বহিরাগত কেউ এসে ন্যাক্কারজনক ও বেআইনিভাবে গণহারে কুকুর নিধন করল। অথচ কর্তৃপক্ষ নিশ্চুপ এবং দায় এড়াচ্ছেন এটা হতেই পারে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল্যবোধের সাথেও এটা সাংঘর্ষিক। কাজেই বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্ত করে দেখার দায়িত্ব প্রথমেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিকে নিতে হবে।

Comments

The Daily Star  | English
explanations sought from banks for unusual USD rates

Explanations sought from 13 banks for higher dollar rate

BB issued letters on Dec 19 and the deadline for explanation ends today

3h ago