স্পেসএক্সের সবচেয়ে কম বয়সী বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কর্মীর একাউন্ট মুছে দিয়েছে লিংকডইন
সম্প্রতিকালে মাত্র ১৪ বছর বয়সে মহাকাশবিষয়ক প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্সের প্রকৌশলী হিসেবে যোগ দিয়ে বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তুলেছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত কিশোর কাইরান কাজী। ইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠানটি তার বয়স বিবেচনা না করে দক্ষতা, 'প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জিং' ও মজার সাক্ষাৎকার সফলতার সঙ্গে উতরে যাওায় তাকে নিয়োগ দিয়েছে। তবে লিংকডইন তাদের প্ল্যাটফর্ম থেকে এই কিশোরের একাউন্টটি মুছে দিয়েছে।
স্পেএক্সে চাকরি পাওয়ার পর কাইরান কাজী লিংকডইনে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে পোস্ট দিয়েছিলেন। তিনি লিখেছেন, 'আমি পৃথিবীর সেরা কোম্পানিতে (স্পেএক্স) প্রকৌশলী হিসেবে যোগ দিতে যাচ্ছি; কোম্পানির স্টারলিংক প্রকৌশলী দলে যোগ দিচ্ছি। এই কোম্পানিটি বিশ্বের সেই বিরল কোম্পানিগুলোর একটি, যারা বয়সের মতো পুরোনো মানদণ্ড দিয়ে সক্ষমতা ও পরিপক্বতা বিচার করেনি।'
উল্লেখ্য, স্পেসএক্স-এর স্যাটেলাইট ইন্টারনেট পরিষেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান হচ্ছে স্টারলিংক।
মাইক্রোসফটের মালিকানাধীন এই সামাজিক মাধ্যমটি কাইরানকে একটি নোটিশ দিয়ে একাউন্ট মুছে ফেলার কারণ জানিয়ে দিয়েছে।
এই কিশোর জানান, লিংকডইন কর্তৃপক্ষ তার একাউন্টটি মুছে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কারণ তার বয়স এখনো ১৬ হয়নি।
এই সামাজিক মাধ্যমটি ব্যবহারের নীতিমালায় বলা আছে, এখানে একাউন্ট খুলতে হলে ব্যবহারকারীর বয়স ন্যূনতম ১৬ বছর হতে হবে।
লিংকডইনের এই সিদ্ধান্তের পর এক টুইটে কাইরান বলেন, 'এটি অযৌক্তিক এবং পুরোনো ধ্যান-ধারনা, যা আমি প্রতিনিয়ত মোকাবিলা করি। আমি বিশ্বের সবচেয়ে লোভনীয় ইঞ্জিনিয়ারিং চাকরিগুলোর মধ্যে একটিতে যোগ দেওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে পারি, কিন্তু ...'
লিংকডইন জানিয়েছে, কাইরানের বয়স ১৬ হলে তাকে আবারও প্ল্যাটফর্মটিতে স্বাগত জানানো হবে এবং আপাতত তার প্রিমিয়াম সাবসক্রিপশন বাতিল করা হচ্ছে।
কে এই কাইরান কাজী?
সম্প্রতি স্পেসএক্সের চাকরি পাওয়ার কথা সামাজিক মাধ্যমে জানানোর পরই তাকে নিয়ে বিশ্বে আলোড়ন তৈরি হয়। তার বয়স মাত্র ১৪ এবং এই বয়সেই তিনি বিশ্বের অন্যতম সেরা কোম্পানি স্পেসএক্সের জটিল ইঞ্জিনিয়ারিং দলে কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন।
সম্প্রতি নির্ধারিত বয়সের ৮ বছর আগেই যুক্তরাষ্ট্রের সান্তা ক্লারা ইউনিভার্সিটির স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে পাস করেছেন তিনি। নিশ্চিতভাবেই সবচেয়ে কম বয়সী হিসেবে তিনি এই ডিগ্রি নিয়েছেন। তবে স্পেএক্সে কাজ শুরু করার জন্য মাকে নিয়ে ক্যালিফোর্নিয়ার ওয়াশিংটনে চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন তিনি।
খুব অল্প বয়স থেকেই প্রতিভার ঝলক দেখিয়ে আসছিলেন কাইরান।
তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় তার যখন মনে হয় স্কুলের পড়াশোনা থেকে তিনি কিছু শিখতে পারছেন না, তখন তিনি ক্যালিফোর্নিয়ার এক কমিউনিটি কলেজে ভর্তি হন। এরপর মাত্র ১১ বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্রের সান্তা ক্লারা বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তি হন তিনি।
সূত্র: গ্যাজেটসনাই
গ্রন্থনা: আহমেদ হিমেল
Comments