ছাঁটাইয়ের পর স্বল্প বেতনে বিদেশি কর্মী নিচ্ছে গুগল, মেটা ও অ্যামাজন

ছবি: সংগৃহীত

গুগল, অ্যামাজন, মেটা ও সেলসফোর্সের মতো যুক্তরাষ্ট্রের বড় বড় কোম্পানিগুলো বিশাল সংখ্যক কর্মী ছাঁটাইয়ের কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই আবারও কর্মী নিয়োগ দিয়েছে। অনুসন্ধানী সাংবাদিক লি ফাংয়ের তথ্যের বরাত দিয়ে এই খবর প্রকাশ করেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক পোস্ট। 

লি ফাংয়ের তথ্য অনুসারে, গুগল অত্যন্ত বিশেষায়িত পদের জন্য স্বল্প বেতনের বিদেশি কর্মীদের যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে আসার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছে। যেসব কর্মীর জন্য গুগল এই আবেদন করেছে, তারা প্রতিষ্ঠানটিতে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার, অ্যানালিটিক্যাল কনসালটেন্ট, ইউজার এক্সপেরিয়েন্স রিসার্চারসহ অন্যান্য পদে কাজ করতে আগ্রহী। 

নিজের সাবসট্র্যাক নিউজলেটারে ফাং আরও জানিয়েছেন, গুগলের মালিকানাধীন স্বচালিত গাড়ির কোম্পানি ওয়েইমো'র ইঞ্জিনিয়ারিং পদগুলোতে যাতে বিদেশি কর্মীদের নিয়োগ দেওয়া যায়, সেজন্য যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পক্ষ থেকে এইচ-ওয়ানবি ভিসারও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। 

গুগলে নতুন নিয়োগ পাওয়া কর্মীরা আগস্টের ১৭ তারিখের মধ্যে কাজ শুরু করতে পারেন বলে জানিয়েছেন ফাং। 

গুগল অবশ্য এসব নতুন নিয়োগের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেছে। 

গুগলের একজন মুখপাত্র নিউ ইয়র্ক পোস্টকে বলেন, 'বিশেষায়িত পদগুলোর জন্য আমরা নিয়োগ অব্যাহত রেখেছি এবং বেশিরভাগ নিয়োগই হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। যেসব পদ থেকে কর্মীছাঁটাই করা হয়েছে, সেসব পদে নতুন নিয়োগ হচ্ছে না।  আমরা যেসব কর্মীদের এইচ-১বি দক্ষ অভিবাসন ভিসার আবেদন করেছি তাদের বেশিরভাগই যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বিদেশি কর্মী এবং তাদের বর্তমান ভিসার মেয়াদ শেষের দিকে।'

মেটা, অ্যামাজন, জুম, মাইক্রোসফটের মতো বড় বড় কোম্পানিগুলোও মার্কিন সরকারের কাছে আরও বেশি এইচ-ওয়াবি ভিসার জন্য আবেদন করেছে। উল্লিখিত কোম্পানির কোনোটিই এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। 

যুক্তরাষ্ট্রে দীর্ঘদিন ধরেই অভিবাসন বিতর্কে এইচ-ওয়ানবি ভিসা একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। দেশটির বড় বড় টেক কোম্পানিতে এই ভিসার আওতায় অসংখ্য কর্মী কাজ করছে। কিন্তু সমালোচকরা বলেন, এই ভিসা ব্যবহার করে টেক কোম্পানিগুলো বিদেশ থেকে তুলনামূলক কম বেতনে কর্মী নিয়ে আসে, ফলে মার্কিন নাগরিক বঞ্চিত হচ্ছেন। এই ভিসাটি মূলত ৩ বছরের জন্য দেওয়া হয়। তবে প্রযোজনমতো এটিকে আরও ৩ বছর পর্যন্ত বাড়িয়ে নেওয়া যায়। 

২০১৭ সালে প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ব্যুরো অব ইকোনমিক রিসার্চের গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে, যদি অভিবাসীরা দৃশ্যপটের বাইরে থাকতো, তাহলে ২০০১ সালে মার্কিন কম্পিউটার বিজ্ঞানীদের বেতন ২.৬ শতাংশ থেকে ৫.১ শতাংশ বেশি হতো আর কম্পিউটার সায়েন্স খাতে ৬.১ শতাংশ থেকে ১০.৮ শতাংশ বেশি মার্কিন নাগরিকের নিয়োগ হতো। 

গত মাসে মার্কিন কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রযুক্তি শিল্পে ব্যবহৃত ভিসার জন্য আবেদনের সংখ্যা টানা দ্বিতীয় বছরের জন্য বৃদ্ধি পেয়েছে, যা এমন 'গুরুতর উদ্বেগ' তৈরি করেছে যে, কেউ কেউ অন্যায্য সুবিধা অর্জনের জন্য ভিসা প্রক্রিয়ায় কারচুপি করছে। 

ফাংয়ের তথ্য অনুসারে, আইনপ্রণেতা ও জো বাইডেন প্রশাসনকে আরও বেশি এইচ-ওয়ানবি ভিসার অনোমদন দিতে প্রভাবতি করার জন্য বড় বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো লবিস্ট নিয়োগ করেছে। 

এ বছর এইচ-ওয়ানবি ভিসার জন্য আবেদন জমা পড়েছে ৭ লাখ ৮০ হাজার ৮৮৪টি, যা গত বছরের (৪ লাভ ৮৩ হাজার ৯২৭) তুলনায় ৬১ শতাংশ বেশি। গত বছরের আবেদন সংখ্যা ছিল তার আগের বছরের তুলনায় ৫৭ শতাংশ বেশি।

প্রতি বছর ৮৫ হাজার ব্যক্তিকে এইচ-ওয়ানবি ভিসা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। 

সূত্র: নিউইয়র্ক পোস্ট
গ্রন্থনা: আহমেদ হিমেল

 

Comments

The Daily Star  | English

US retailers lean on suppliers to absorb tariffs

Rather than absorbing the cost or immediately passing it on to consumers, many US apparel retailers and brands have turned to their suppliers in Bangladesh, demanding they share the pain

5h ago