৩৮ বছর পর পৃথিবীতে নাসার ‘অবসরপ্রাপ্ত’ উপগ্রহ

আর্থ রেডিয়েশন বাজেট স্যাটেলাইট (ইআরবিএস) নামের এই উপগ্রহ ১৯৮৪ সালে মহাকাশ যান চ্যালেঞ্জার থেকে লঞ্চ করা হয়েছিল। ফাইল ছবি: নাসা
আর্থ রেডিয়েশন বাজেট স্যাটেলাইট (ইআরবিএস) নামের এই উপগ্রহ ১৯৮৪ সালে মহাকাশ যান চ্যালেঞ্জার থেকে লঞ্চ করা হয়েছিল। ফাইল ছবি: নাসা

মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসার একটি বাতিলের খাতায় চলে যাওয়া উপগ্রহ ৩৮ বছর পৃথিবীর চারদিকে প্রদক্ষিণ করার পর ফিরে এসেছে।

গতকাল সোমবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, রোববার এই উপগ্রহ পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করেছে।

আর্থ রেডিয়েশন বাজেট স্যাটেলাইট (ইআরবিএস) নামের এই উপগ্রহ ১৯৮৪ সালে মহাকাশ যান চ্যালেঞ্জার থেকে লঞ্চ করা হয়েছিল।

২০০৫ সাল পর্যন্ত ইআরবিএসের পাঠানো তথ্য গবেষকরা বিভিন্ন কাজে লাগিয়েছেন। যার মধ্যে আছে কীভাবে পৃথিবী সূর্য থেকে শক্তি আহরণ ও বিকিরণ করে, ওজোন স্তরের পরিমাপ করা এবং পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার অংশে জলীয় বাষ্প, নাইট্রোজেন ডাইওক্সাইড ও অ্যারোসলের ঘনত্ব মাপা। 

নাসার পক্ষ থেকে প্রকাশ করা এক বিবৃতিতে মার্কিন প্রতিরক্ষা অধিদপ্তর নিশ্চিত করেছে, ইআরবিএস রোববার স্থানীয় সময় রাত ১১টা বেজে ৪ মিনিটে বেরিং সাগরের ওপর দিয়ে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করেছে।

বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের পর উপগ্রহের কোনো অংশ অক্ষত ছিল কী না, তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। তবে বায়ুমণ্ডলের ভেতর দিয়ে যাওয়ার সময় এর বেশিরভাগ অংশে আগুনে জ্বলে যাওয়ার কথা। নাসার পূর্বাভাষ মতে উপগ্রহ ভেঙে পড়ে হতাহতের সম্ভাবনা খুবই কম।

শুরুতে এটি ২ বছর কার্যকর থাকবে ধরে নেওয়া হলেও সবার প্রত্যাশাকে ছাড়িয়ে উপগ্রহটি ২১ বছর কার্যকর ছিল ।

নাসা জানিয়েছে, ইআরবিএসের ভেতরে বসানো একটি যন্ত্র এমন তথ্য সংগ্রহ করেছে, যা থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে পৃথিবীর ওজোন স্তর ধীরে ধীরে সংকুচিত হচ্ছে। এই যন্ত্রের নাম স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারিক অ্যারোসল অ্যান্ড গ্যাস এক্সপেরিমেন্ট টু (সেইজ টু)।

এই তথ্যের ওপর ভিত্তি করে ১৯৮৭ সালে বেশ কিছু দেশ মন্ট্রিয়ল চুক্তি সাক্ষর হয়। এই আন্তর্জাতিক চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দেশগুলো ওজোন গ্যাসের স্তর ধ্বংসকারী ক্লোরোফ্লোরোকার্বন (সিএফসি) নামক রাসায়নিক উপকরণ ব্যবহার সীমিত করতে একমত হয়। কীটপতঙ্গ ও মশা মাছি নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত অ্যারোসল স্প্রে, রেফ্রিজারেটর ও এয়ারকন্ডিশনারে এই উপকরণের ব্যবহার রয়েছে।

২০২১ সালের এক গবেষণায় জানা গেছে, সিএফসি'র ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা না হলে পৃথিবীর ওজোন স্তর ধ্বংস হয়ে যেতো এবং এই শতাব্দীর শেষ নাগাদ বৈশ্বিক উষ্ণতা ২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে যেত।

ইআরবিএস অকার্যকর হওয়ার পর আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রে অবস্থিত সেইজ থ্রি যন্ত্রের মাধ্যমে ওজোন স্তরের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।

 

Comments

The Daily Star  | English
compensation for uprising martyrs families

Each martyr family to get Tk 30 lakh: Prof Yunus

Vows to rehabilitate them; govt to bear all expenses of uprising injured

7h ago